করোনাভাইরাস অতিমারীর সময়ে বেশ কিছু দেশে লকডাউন বিধিনিষেধ কার্যকর হয়েছে, বহু পরিমাণ আবশ্যকীয় ও অনাবশ্যকীয় পণ্যের উৎপাদন ও জোগানের শৃঙ্খল ব্যাহত হয়েছে। জানা যাচ্ছে সারা দুনিয়াতেই দুর্লভ হয়ে পড়েছে কন্ডোম ও অন্যান্য জন্মনিয়ন্ত্রক, কারণ উৎপাদক সংস্থাগুলি কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে এবং আন্তর্জাতিক পরিবহণও ধাক্কা খেয়েছে।
পৃথিবীব্যাপী কন্ডোমের হাহাকার কেন
বিভিন্ন দেশে অতিমারী ছড়িয়ে পড়বার কারণে বেশ কিছু সরকার লকডাউন জারি করেছে, প্রচুর শিল্প বন্ধ, বন্ধ বাণিজ্যিক কাজকর্মও।
দক্ষিণপূর্ব এশিয়া, যেখানে পৃথিবীর বৃহৎ কন্ডোম প্রস্তুতকারী সংস্থা রয়েছে, সেখানে কারফিউ চলছে, ফলে পণ্যের জোগান বড়রকমের ধাক্কা খেয়েছে।
২৭ মার্চ, রয়টার্সের রিপোর্ট অনুসারে মালয়েশিয়ান উৎপাদক কারেক্স ভড, যারা দুনিয়ার প্রতি পাঁচটি কন্ডোমের একটি প্রস্তুত করে থাকে, তারা এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে লক ডাউনের কারণে একটি কন্ডোমও প্রস্তুত করতে পারেনি।
কারেক্স প্রস্তুতকারী সংস্থা ডুরেক্স ব্র্যান্ডের কন্ডোম বানায়। রিপোর্টে আশঙ্কা করা হয়েছে ১০০ মিলিয়ন কম কন্ডোম উৎপাদন করতে পারবে তারা। এই সংস্থা সরকারের কাছ থেকে বিশেষ অনুমতি নিয়ে অর্ধেক কর্মী নিয়ে কাজ চালাচ্ছে।
ব্লুমবার্গ কারেক্স গোষ্ঠীর সিইও গো মিয়া কিয়াটকে উদ্ধৃত করেছে। তিনি বলেছেন বিভিন্ন দেশে লকডাউন চালু হবার ফলে কন্ডোমের চাহিদা বেড়ে গিয়েছে কারণ বহু মানুষ অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মধ্যে শিশুজন্মের পরিকল্পনা বাদ দিচ্ছেন।
ব্লুমবার্গ আরও জানিয়েছে, থাইল্যান্ডের সংস্থা থাই নিপ্পন রাবার ইন্ডাস্ট্রিজকে প্রভূত উৎপাদন করতে হচ্ছে, বার্ষিক উৎপাদনের চেয়ে ২৭ শতাংশ বেশি- যাতে অন্যান্য প্রস্তুতকারী সংস্থার জোগানের ঘাটতি মেটানো যায়।
জন্মনিয়ন্ত্রক ওষুধেও ঘাটতির সম্ভাবনা, কারণ ওষুধ ক্ষেত্রের বড় দুই দেশে ভারত ও চিন কারখানা বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে। চিন জন্মনিয়ন্ত্রক সহ সমস্ত ধরনের ওষুধের জন্য অত্যাবশ্যক উপকরণ প্রস্তুত করে থাকে। চিনে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবার ফলে ভারতে ওষুধ তৈরির কাঁচামালে ঘাটতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গত ৩ মার্চ ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রক ২৬টি প্রয়োজনীয় ওষুধ ও ওষুধের উপকরণ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, যার মধ্যে রয়েছে হরমোন প্রজেস্টেরন- যা বেশ কিছু জন্মনিয়ন্ত্রক তৈরির জন্য প্রয়োজনীয়। এরই সঙ্গে, জাহাজ সহ সব ধরনের আন্তর্জাতিক পরিবহণ বন্ধ থাকায় আরও বেশি বিলম্বের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন