মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ ও দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর করোনা আক্রান্ত সময়ে দেশের অর্থনীতির ধাক্কার প্রেক্ষিতে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ ঘোষণা করেছেন।
নতুন কোনও স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিভ প্রসিডিওর ঘোষণা করে হয়নি, যেমনটি প্রত্যাশা করা হয়েছিল। নিয়ামক বিধিতে কিছু মেয়াদবৃদ্ধির কথা ঘোষণা করা হয়েছে।
মূল কী কী বদল আনা হয়েছে?
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বদল দেউলিয়া বিধিতে। ইনসলভেন্সি অ্যান্ড ব্যাঙ্করাপ্টসি কোডের আওতায় যদি কোনও সংস্থা ১ লক্ষ টাকা বা তার বেশি পরিশোধ না করতে পারে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ওই বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া যায়। এই অঙ্কের পরিমাণ বাড়িয়ে ১ কোটি টাকা ঘোষণা করা হয়েছে। এর ফলে অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগপতিরা কিছুটা হাঁফ ছেড়ে বাঁচবেন। এই সময়ের বেহাল অর্থনীতিতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই অংশটিই। এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত এই নতুন ছাড় কার্যকর থাকবে।
আরও পড়ুন:কোভিড ১৯ সংক্রমণ আটকাতে বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা, কী প্রভাব পড়বে বিমান সংস্থার উপর?
অর্থমন্ত্রী এও বলেছেন যে পরিস্থিতি তেমন হলে সরকার এই বিধির ৭, ৯ ও ১০ ধারা আরও ৬ মাসের জন্য স্থগিত রাখতে পারে।
অন্য কী বদল আনা হয়েছে?
সরকার বিভিন্ন প্রকল্পের সময়সীমা মার্চের শেষ থেকে জুলাইয়ের শেষ পর্যন্ত বাড়িয়েছে। যেমন ২০১৮-১৯ সালের আয়কর রিটার্ন জমা দেবার সময়সীমায় ছাড় দেওয়া হয়েছে এবং শাস্তিমূলক সুদের হারও কমানো হয়েছে।
জিএসটি-র ক্ষেত্রেও একই ছাড় দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। আধার ও প্যানের লিংক জুনের শেষ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ২১ দিনের লকডাউনে প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের জোগান দিতে ভারত কতটা প্রস্তুত?
প্রত্যক্ষ করের বিবাদ মেটানোর জন্য বিবাদ সে বিশ্বাস প্রকল্প এবং অপ্রত্যক্ষ করের বিবাদ মেটানোর সবকা বিশ্বাস প্রকল্পের সময়সীমা ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
যেসব আমদানিকারীর মাল পৌঁছতে দেরি হচ্ছে বা যাঁদের কোয়ারান্টিনে থাকর প্রয়োজন রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রেও ছাড়ের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। স্যানিটারি ইমপোর্ট পারমিটের মেয়াদ ১৫ এপ্রিল শেষ হবার কথা ছিল। তা আরও একমাস বাড়ানো হয়েছে।
এর ফলে কী উপকার হবে?
মঙ্গলবারের ঘোষণায় বোঝা কমবে অর্থনীতির ফর্মাল ক্ষেত্রে। জোগান শৃঙ্খলে ব্যাপক সমস্যায় যাঁরা নাজেহাল, তাঁরা এ সিদ্ধান্তে খুবই উপকৃত হবেন।
কিন্তু এ ঘোষণায় দুটো জিনিস নেই। প্রথমত, যেসব ক্ষেত্র ধাক্কা খেয়েছে, তাদের জন্য আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করা হয়নি। তাঁদের বকেয়া মেটানোর সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে কেবল।
দ্বিতীয়ত, এই পদক্ষেপ কেবলমাত্র সংগঠিত অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের জন্য। ভারতের অর্থনীতির ৯০ শতাংশ অসংগঠিত ক্ষেত্রের। এই অংশ আর্থিক মন্দায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন ও তার জেরে ব্যাপক রোজগারহীনতা ঘটবার আশঙ্কা রয়েছে। কোনও ঘোষণাই এই অংশকে লক্ষ্য রেখে করা হয়নি।