সমস্ত দেশ করোনাভাইরাস অতিমারীর সঙ্গে যখন যুদ্ধরত, তখন মৃত্যুহারের যে পরিসংখ্যান পাওয়া যাচ্ছে তা থেকে কোভিড ১৯ কতটা মারাত্মক তা নির্ণয় করে ওঠা যাচ্ছে না। যেমন, ইতালি, যে দেশ ইউরোপে এ মহামারীর কেন্দ্র, সেখানে মৃত্যুহার ১২.৬ শতাংশ, অন্যদিকে জার্মানিতে এই হার ২ শতাংশের মত। ইতালিতে ১৭ হাজার জনের মৃত্যু হয়েছে, জার্মানিতে মৃত্যু ২০০০। বাহামাসে ২৯টি সংক্রমণের ঘটনায় ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, মৃত্যুহার ১৭.২৪ শতাংশ।
সারা দুনিয়ায় সংক্রমণের ঘটনা প্রতিদিন নথিভুক্ত হচ্ছে, কিন্তু বিশেষজ্ঞরা মৃত্যুহারের হিসেব নিয়ে সন্তুষ্ট নন। কারণ মৃদু উপসর্গ বা উপসর্গহীনতার কারণে একটি দেশে সঠিক সংক্রমিতের সংখ্যা ধরা যাচ্ছে না বলে মনে করছেন তাঁরা।
মৃত্যুহার কী এবং তার হিসেব কীভাবে করা হয়?
কোনও একটি ঘটনায় যতজন অসুস্থ, তাঁদের মধ্যে ওই কারণে কতজন মৃত, তার অনুপাতই হচ্ছে মৃত্যুহার। যেমন ইতালির মৃত্যুহার সে দেশে ১৩২০০০ হাজার সংক্রমিতকে মৃত ১৬হাজার দিয়ে ভাগ করে সেখানকার মৃত্যুহার নির্ণীত হবে।
এ থেকে কী বোঝা যায়?
কোনও রোগ কতটা মারাত্মক তা নির্ণয় করবার জন্য এই মৃত্যুহার কাজে লাগে। কিন্তু বর্তমন অতিমারীর সময়ে এ হিসেব খুব কার্যকর হচ্ছে না কারণ সব দেশ একই ভাবে টেস্টিং পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে না।
ওয়ার্লড ইকোনমিক ফোরামের এক লেখায় নিনা শোয়ালবে বলেছেন কোনও কোনও জায়গায় যথেষ্ট পরিমাণ টেস্টের উপকরণের অভাবে, যাঁরা নিজেদের রিপোর্ট করছেন, শুধু তাঁদের টেস্ট করা হবে।
এর অর্থ অধিকাংশ দেশেই টেস্ট শুধু হাসপাতালে হচ্ছে এবং বোঝাই যাচ্ছে যাঁদের সামান্য উপসর্গ রয়েছে এবং বেশ ভাল পরিমাণে অসুস্থ নন, তাঁরা রিপোর্ট করাচ্ছেন না।
তিনি আরও বলেছেন এ ধরনের পরীক্ষার উপর নির্ভর করে বিভিন্ন দেশ যাঁরা সংক্রমিত শুধু তাদেরই হিসেব দিচ্ছে, যাঁরা সংক্রমিত হয়ে শেরে গিয়েছেন, তাঁদের হিসেব দিচ্ছে না।
এর ফলে বিভাজক যথাযথ হচ্ছে না এবং মৃত্যুহার বেশি দেখাচ্ছে।
অন্যদিকে ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড এবং চিনের প্রতিষ্ঠানের গবেষকরা ল্যান্সেট জার্নালে লিখছেন মৃত্যুহার কম দেখানো হচ্ছে।
তবে তাঁদের কথার প্রতিবাদ ল্যান্সেট জার্নালেই এসেছে হারভার্ড স্কুল অফ পাবলিক হেলথের মার্ক লিপসিচের কাছ থেকে।
সব মিলিয়ে কোভিড ১৯-এ মৃত্যুহারও এখন সর্বসম্মত নয়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন