Advertisment

দেহে তৈরি হচ্ছে করোনার অ্যান্টিবডি! ভ্যাকসিনের কার্যকারীতা নষ্ট হতে পারে, ইঙ্গিত বিজ্ঞানীদের

এর ফলে সংক্রমণ শৃঙ্খল ভেঙে পড়বে এবং সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে যাঁরা রয়েছেন তাঁরাও সংক্রমিত হওয়া থেকেও বাঁচবে। কিন্তু ভ্যাকসিনের কার্যকারীতা থাকবে না।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

কেন ভ্যাকসিনের কার্যকারীতা নষ্ট হতে পারে?

যে হারে দেশে বংশবৃদ্ধি করে চলেছে করোনা, সেখানে করোনা রুখতে ভ্যাকসিন ছাড়া আরও কোনও প্রতিরোধ ব্যবস্থা দেখছে না ওয়াকিবহাল মহল। তবে তাঁদেরই একাংশের ভিন্ন মত 'হার্ড ইমিউনিটি' (herd immunity) বা গোষ্ঠী প্রতিরোধের মাধ্যমেও সম্ভব হতে পারে এই সংক্রমণকে ঠেকানোর। সম্প্রতি দিল্লিতে সেরোলজিকাল সার্ভেতে দেখা গিয়েছে করোনা আবহে ২৩ শতাংশ নমুনায় করোনাভাইরাস স্পেসিফিক অ্যান্টিবডির উপস্থিতি মিলেছে। আর এই হিসেব বলছে গোষ্ঠী প্রতিরোধের দিকে যেতে পারে দিল্লি। কিন্তু বিজ্ঞান বলছে তবে তা সমস্যার কারণ হবে।

Advertisment

এই গোষ্ঠী প্রতিরোধ বা হার্ড ইমিউনিটি কী?

এটি এমন এক পরিস্থিতি যেখানে জনসংখ্যার একটি নির্দিষ্ট শতাংশ একটি নির্দিষ্ট রোগ সংক্রামক প্যাথোজেনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ তৈরি করতে পারে। যার জেরে জনসংখ্যার বাকি অংশের মধ্যে সেই সংক্রমণ ছড়ায় না। একটি নির্দিষ্ট শতাংশের মানুষের মধ্যে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়ে গেলে, তাঁরা আর গোষ্ঠীর অন্য সদস্যকে সংক্রমিত করতে পারবেন না। এর ফলে সংক্রমণ শৃঙ্খল ভেঙে পড়বে এবং সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে যাঁরা রয়েছেন তাঁরাও সংক্রমিত হওয়া থেকেও বাঁচবে। কিন্তু ভ্যাকসিনের কার্যকারীতা থাকবে না। যা চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে। যদিও বিজ্ঞানীদের মত এখনই হার্ড ইমিউনিটির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কিছু বলার সময় আসেনি। যদি বলা হয় তবে তা ভুল বলা হবে।

আরও পড়ুন, ভাইরাসে ‘করোনা’ নেই! বিশ্বকে অবাক করে নয়া রূপ নিল কোভিড

সেরোলজিকাল সার্ভে কী?

এটি একটি পরীক্ষা বা সার্ভে, যার মাধ্যমে নির্ণয় করা হয় যে কোনও ব্যক্তির দেহে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়া শুরু করেছে কি না। অ্যান্টিবডি হল মানুষের সহজাত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থেকে তৈরি হওয়া এক ধরনের প্রোটিন। যা দেহে বাইরে থেকে আসা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখে। করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি শরীরে তৈরি হওয়ার অর্থ হল আপনি কোনও না কোনও সময়ে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেই কারণে শরীর নিজের সুরক্ষার জন্য এই সকল অ্যান্টিবডি তৈরি করে যেন পরবর্তীতে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে।

ভ্যাকসিনের কাজটাও প্রায় এক। এখনের পরিস্থিতি বিচার করলে আমাদের দেহ জানতই না করোনা ভাইরাস কী? ফলে মানবদেহে নিজের থেকে করোনা বিরোধী অ্যান্টিবডিও তৈরি হয়নি। হ্যাঁ, তবে যারা আক্রান্ত হয়েছে এবার তাঁদের দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি হতে শুরু করেছে। তবে প্রাথমিকভাবে সুস্থ করতে ভ্যাকসিনের আবশ্যিকতা আছে বৈকি। যদিও সেরোলজিকাল টেস্ট করা সবসময় সম্ভব হচ্ছে না। একটা গোষ্ঠী বা এলাকায় কে কে আক্রান্ত সবসময় তা বুঝতে পারা সম্ভব হচ্ছে না।

ফলাফল কী বলছে?

এখনও পর্যন্ত সেরোলজিকাল টেস্ট সাড়া মিলেছে ২৩ শতাংশ হয়েছে। সংখ্যার নিরিখে ২১ হাজার দেহে তৈরি হয়েছে করোনা প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি। উল্লেখযোগ্য ফলাফল এটাই যে করোনা পরীক্ষায় যে ফলাফল হিসেব আসছে করোনার সংক্রমণ তাঁর চেয়ে অনেক অনেক বেশি। তাই গোষ্ঠী প্রতিরোধে যদি পৌঁছে যায় বিষয়টি তবে তা সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

আরও পড়ুন, অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন তৈরির নেপথ্যে এই মহিলা বিজ্ঞানী, আশা দেখাচ্ছেন বিশ্বকে

অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে গেলেই কি রোগ প্রতিরোধ কাঠামো সুরক্ষিত হবে?

পরীক্ষা বলছে করোনার ক্ষেত্রে কিন্তু মানবদেহে নিজের থেকে অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে স্বল্প সংখ্যক। কোভিড-১৯ ভাইরাসের মতো রোগ প্রতিরোধে যা যথেষ্ট নয়। এক্ষেত্রে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন। তা হল এক কতটা পরিমাণ অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে, দুই সেগুলি 'নিউট্রিলাইজিং অ্যান্টিবডি' কি না? কারণ এই 'নিউট্রিলাইজিং অ্যান্টিবডি'রাই আদপে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখে। সেরোলজিকাল সার্ভে কিন্তু সেই তথ্য দিচ্ছে না।

আর যে বিষয়টি আরও চিন্তা বাড়িয়ে তুলছে তা হল বিশ্বে এখনও এমন ঘটনা ঘটেনি যেখানে একবার করোনা আক্রান্ত হলে দ্বিতীয়বার সে আর আক্রান্ত হচ্ছে না। এর থেকেই ভ্যাকসিনের প্রয়োজনীয়তা এবং গুরুত্ব সামনে আসছে। কিন্তু সার্ভে রিপোর্টে হার্ড ইমিউনিটির যে তথ্য প্রকাশ্য আসছে সেখানে তৈরি হচ্ছে আশঙ্কা। যে ভ্যাকসিন আসছে তা আদৌ কাজ করবে কি না কিংবা কতটা কাজ করবে তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই।

Read the story in English

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

coronavirus COVID-19
Advertisment