ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের ডিরেক্টর জেনারেল বলরাম ভার্গবের সঙ্গে কথা বলেছেন অনুরাধা মাসকারেনহাস।
জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে প্রথম রাউন্ডের ভাইরাস সংক্রমণ ভারতে যে ছড়ায়নি, সেটা কতটা কাজে লেগেছে?
জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে সংক্রমণ ছড়ায়নি, সে আমাদের সৌভাগ্য। কিন্তু আমরা সে সময়ে যথেষ্ট প্রস্তুত ছিলাম। উহানে লোকজনের অসুস্থ হবার খবর ডিসেম্বরে আসতে শুরু করে যখন, তখনই আমরা ল্যাবরেটরিগুলি প্রস্তুত করতে থাকি। এর আগে নিপা ও জিকা ভাইরাসের সময়ের অভিজ্ঞতাও আমাদের রয়েছে, যার ছড়িয়ে পড়া আমরা আটকাতে পেরেছিলাম। ১৭ জানুয়ারিতে আমরা এর মোকাবিলায় প্রস্তুত হয়ে গিয়েছিলাম। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে কোনও গুরুতর প্রাদুর্ভাব দেখা না দেওয়ায় আমাদের ব্যবস্থাপত্র আরও শক্তিশালী করার সুযোগ পাওয়া গিয়েছে, জনসচেতনতাও ঘটেছে।
আরও পড়ুন: পশ্চিমবঙ্গে প্রথম করোনা আক্রান্ত সদ্য ব্রিটেন-ফেরত যুবক
প্রাথমিক ভাবে ভারতে সংক্রমণ না হওয়ার সম্ভাব্য কারণ কী?
একাধিক জিনিস একসঙ্গে ঘটতে পারে। উহান থেকে যথাসময়ে লোকজনকে সরিয়ে আনা, প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্র, বিমানবন্দরে বাধ্যতামূলক পরীক্ষা, সামাজিক দূরত্বের পদ্ধতির বৃদ্ধি, সমস্ত কিছুই একযোগে সাহায্য করেছিল। এমন নয় যে সেসময়ে আমাদের কাছে তেমন কোনও কেস আসেনি। উহান থেকে ফিরেছিলেন এমন কয়েকজন কেরালার লোককে আমরা পেয়েছিলাম। কিন্তু তাঁদের আলাদ করে ফেলতে পারায় কমিউনিটির মধ্যে সংক্রমণ ঘটেনি।
পরিসংখ্যান বলছে, একবার একটি দেশে সংক্রমিতের সংখ্যা ১০০ ছাড়ালে তারপর সে সংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধি ঘটতে থাকে। এটা কতটা ঠিক?
এই কার্ভটা এড়ানো সম্ভব। আমরা কমিউনিটির মধ্যে সম্ভাব্য সংক্রমণ এড়াতে পারি। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ভ্রমণ নির্দেশিকা, গাইডলাইন এবং চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আমরা যদি বিদেশ থেকে আসা সংক্রমিত ব্যক্তিদের ১৪ দিন কোয়ারান্টিনে রাখতে পারি, তাহলে সংক্রমণ ছড়ানো বন্ধ করা যেতে পারে।
তাপমাত্রা বাড়লে সংক্রমণ কমবে, এ কথা কি সত্যি?
এরকম কোনও প্রমাণ নেই বা এর সপক্ষে কোনও তথ্যও নেই যার ভিত্তিতে এ কথা নিশ্চিত করা যেতে পারে। আবহাওয়ার পরিবর্তনের উপর এ রোগ ছড়ানোর কোনও সম্পর্ক নেই।
সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের ব্যাপারে কতটা আশাবাদী হওয়া যেতে পারে?
পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিট্যুট অফ ভাইরোলজি ভাইরাস স্ট্রেনকে আলাদা করতে পেরেছে। জাপান, থাইল্যান্ড, চিন ও আমেরিকাও সফল হয়েছে।
নমুনা পরীক্ষার জন্য আইসিএমআর ল্যাবরেটরি কি যথেষ্ট?
আইসিএমআর ভাইরাস পরীক্ষাকারী সংস্থাও। তারা তাদের নেটওয়ার্কের সংখ্যা বাড়িয়েছে। ভাইরাসের দ্বিতীয় পরীক্ষা যারা করছে, সেই এনআইভি-র সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। এই পদক্ষেপগুলি ভারতকে ভাইরাস নির্ণয় করতে সাহায্য করবে, এবং তা কার্যকরী পরিচালনায় সাহায্য করবে।
লোকজনের আতঙ্কগ্রস্ত হবার কোনও কারণ নেই, কিন্তু প্রতিষেধক ব্যবস্থা নিতে হবে।