নভেল করোনাভাইরাস সব মহাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে, এ রোগ কীভাবে ছড়াচ্ছে, গবেষণা চলছে তা নিয়ে কোভিড ১৯ -এর মত করোনাভাইরাসজনিত রোগ প্রাণিদেহ থেকে মানুষে ছড়ায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে SARS-CoV মানব দেহে ছড়ায় গন্ধগোকুল জাতীয় প্রাণীদের থেকে ও MERS-CoV ছড়ায় এক কুঁজি উটের থেকে।
মনে করা হচ্ছে, এই দুটি ভাইরাসের উৎপত্তিই বাদুড় থেকে এবং সেখান থেকে অন্য প্রাণীদের মধ্যে এ রোগ ছড়িয়েছে।
চিনের উহানে প্রথম চিহ্নিত হওয়া করোনাভাইরাসের উৎস কী তা নিয়ে গবেষকরা এখনও কোনও সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি, তবে অনেকেই মনে করছেন বাদুড়েই এর উৎপত্তি।
বাদুড় থেকে এত ভাইরাস কীভাবে উৎপন্ন হয়?
গত বেশ কয়েক বছর ধরে গবেষণায় দেখা গিয়েছে প্রাণী থেকে মানুষে সংক্রমিত হয় এমন বেশ কিছু ভাইরাসের উৎস বাদুড়। এর মধ্যে রয়েছে রাবিস, মারবুর্গ, নিপা এবং হেন্ড্রা ভাইরাস।
২০০২ থেকে ২০০৪-এর মধ্যে সারা পৃথিবীতে যে সার্সের প্রকোপ হয়েছিল তাতে মারা গিয়েছিলেন ৮০০-র বেশি মানুষ। এরও উৎস ছিল সেই বাদুড়ই।
চিনের উহান ইনস্টিট্যুট অফ ভাইরোলজির গবেষকরা সার্স ভাইরাসের উৎপত্তির কারণ হিসেবে দেশের দক্ষিণপূর্বের ইউনান প্রদেশের এক দূরবর্তী গুহাবাসী হর্সশু বাদুড়দের চিহ্নিত করেছেন।
কোনও কোনও বিশেষজ্ঞদের মতে নভেল করোনাভাইরাসের উৎসও এই প্রজাতির বাদুড়েরাই।
নিজেরা ভাইরাসের বাহক হয়েও কীভাবে বাদুড়েরা টিকে থাকতে পারে?
বাদুড়েরা একাধিক ভাইরাসের বাহক হতে পারে নিজেরা অসুস্থ না হয়েই, রাবিস ছাড়া। রাবিসে তারা আক্রান্ত হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে এক চতুর্থাংশ স্তন্যপায়ী প্রাণী বাদুড়েরা অভিযোজনের পথে অতিরিক্ত প্রতিরোধ ক্ষমতার অধিকারী হয়, যার জেরে তারা উড়তেও পারে।
২০০৭ সালে আমেরিকান সোসাইটি অফ মাইক্রোবায়োলজির এক গবেষণা সার্সের মত করোনাভাইরাস মহামারীর ফের উদ্ভূত হবার আশহ্কা ব্যক্ত হয়েছিল। বিশেষজ্ঞরা লিখেছেন, “করোনাভাইরাস জিনের পুনর্সমন্বয় ঘটাতে পারে, যার জেরে নতুন জেনোটাইপ ও প্র্রকোপ ছড়াতে পারে। হর্স শু প্রজাতির বাদুড় SARS-CoV ভাইরাসের অন্যতম আধার এবং দক্ষিণ চিনে এই বাদুড় খাবার হিসেবেও চালু। দুয়ে মিলে পরিস্থিতি টাইম বোমের। ফলে মারাত্মক পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকা জরুরি।”