করোনায় সংক্রমিত হয়ে যাঁরা মৃত, তাঁদের মৃতদেহ নিয়ে কী গাইডলাইন দিল স্বাস্থ্যমন্ত্রক?

পরিবারকে শেষবারের মত দেখতে দেবার জন্য ম়তদেহের ব্যাগ খোলা যেতে পারে। শ্মশান ও গোরস্থানের কর্মীদের বোঝাতে হবে যে এর ফলে তাঁরা রোগাক্রান্ত হবেন না।

পরিবারকে শেষবারের মত দেখতে দেবার জন্য ম়তদেহের ব্যাগ খোলা যেতে পারে। শ্মশান ও গোরস্থানের কর্মীদের বোঝাতে হবে যে এর ফলে তাঁরা রোগাক্রান্ত হবেন না।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

অটোপ্সি বা পোস্ট মর্টেম সাধারণভাবে এড়িয়ে চলতে বলছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক (ছবি- ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস)

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রক করোনাভাইরাসের সংক্রমণে যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের মৃতদেহের তদারকি সম্পর্কে নির্দেশিকা জারি করেছে। ওই নির্দেশিকা অনুসারে মৃতের বিশ্বাস অনুসারে তাঁর মৃতদেহ দাহ বা গোর দেওয়া যেতে পারে। তবে, কয়েকটি নির্দিষ্ট পদক্ষেপ অনুসরণ করতে হবে। এবং শরীরে স্পর্শ যাতে ন্যূনতম হয়- তা খেয়াল রাখতে হবে।

Advertisment

মৃতদেহ থেকে কি করোনাসংক্রমণ হতে পারে?

 মন্ত্রকের নির্দেশিকা বলছে, কোভিড ১৯ সংক্রমণের মূল চালিকা হল ক্ষুদ্রাকার ফোঁটা (ড্রপলেট)। যাঁরা সাধারণ প্রতিষেধক মেনে চললে, মৃতদেহ থেকে কোভিড ১৯ সংক্রমণের বাড়তি কোনও আশঙ্কা স্বাস্থ্যকর্মী বা পরিবারের লোকদের নেই। কেবলমাত্র মৃত রোগীর ফুসফুস যদি অটোপ্সির সময়ে কাটা ছেঁড়া করা হয়, তাহলে তা সংক্রামক হতে পারে।

মৃতদেহ তদারকির সময়ে  কী ধরনের ন্যূনতম সাধারণ প্রতিষেধক মেনে চলা উচিত?

Advertisment

মন্ত্রকের তরফ থেকে স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য এ ধরনের পাঁচটি মূল প্রতিষেধকের কথা বলা হয়েছে- হাতের স্বাস্থ্য, দস্তানা, মাস্ক সহ ব্যক্তিগত সুরক্ষার উপকরণ ব্যবহার, তীক্ষ্ন কোনও কিছুর সাবধানী ব্যবহার, মৃতদেহ জীবাণুরহিত ব্যাগে রাখা এবং তা ঢাকা দেবার চাদর ইত্যাদি জীবাণুমুক্ত করা। মর্গে, অ্যাম্বুল্যান্সে, শ্মশানে বা গোরস্থানে যাঁরা থাকবেন, তাঁদের সংক্রমণ প্রতিরোধের প্রশিক্ষণ থাকতে হবে।

 ঘর থেকে বা আইসোলেশন ওয়ার্ড থেকে মৃতদেহ কীভাবে সরানো হবে?

যথাযথ হাতের স্বাস্থ্যবিধি মানা এবং পিপিই-র ব্যবহার ছাডা়ও মৃতদেহের মুখ ও নাকের ছিদ্র খুব ভালভাবে আটকাতে হবে যাতে সেখান দিয়ে কোনও রকম নিঃসরণ না বেরোতে পারে। গাইডলাইনে বলা হয়েছে, “যদি রোগীর পরিবার আইসোলেশন রুম থেকে মৃতদেহ বের করবার সময়ে তা দেখতে চায়, তাহলে সাধারণ প্রতিষেধক বিধি মেনে তার অনুমতি দেওয়া যালে। এর পর মৃতদেহ লিকপ্রুফ প্লাস্টিকের বডি ব্যাগে ভরতে হবে এবং ওই ব্যাগের বহির্ভাগ ১ শতাংশ সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট দিয়ে বীজাণুমুক্ত করতে হবে।”

মানসিক ভাবে মৃতের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর ব্যাপারে গাইডলাইনে কী বলা আছে?

মন্ত্রক বলছে পরিবারের সদস্যদের মানসিক সমর্থন দিতে হবে এবং তাঁদের ভাবাবেগকে সম্মান জানাতে হবে।

 শরীর যদি মর্গে থাকে?

গাইডলাইন অনুসারে, মৃতদেহ রাখতে হবে কোল্ড চেম্বারে, যার তাপমাত্রা হবে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মৃতদেহ মর্গ থেকে সরানোর পর, সেখানে সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট দিয়ে বীজাণুমুক্ত করতে হবে। তবে কোনওভাবেই মৃতদেহ সংরক্ষণ করে রাখা যাবে না।

করোনাভাইরাসে মৃতদের কি অটোপ্সি বা পোস্টমর্টেম করা যেতে পারে?

 মন্ত্রকের পরামর্শ না করার। বলা হয়েছে, “অটোপ্সি এড়ানো উচিত। তবে যদি বিশেষ কারণে প্রয়োজন হয় তাহলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি মানতে হবে।”

 মৃতদেহের গোর দেবার অনুমতি রয়েছে কি?

হ্যাঁ। গাইডলাইন অনুসারে মৃতের বিশ্বাস অনুসারে মৃতদেহ দাহ করা বা সমাধিস্থ করা যেতে পারে।

 স্বাস্থ্যকর্মী এবং মৃতদেহের গাড়ির চালকদের জন্য কী নির্দেশ রয়েছে?

নির্দেশিকায় বলা রয়েছে, নিরাপদ বডি ব্যাগে যদি মৃতদেহ থাকে এবং ওই ব্যাগের বহিরাংশ যদি জীবাণুমু্ক্ত করা থাকে তাহলে যিনি মৃতদেহ নিয়ে যাচ্ছেন, তাঁর আশঙ্কার কোনও কারণ নেই। যে গাড়িতে করে দেহ নিয়ে যাওয়া হবে, সেটিকে সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে।

 সৎকার বা সমাধির সময়ে কতজন থাকতে পারেন?

গাইডলাইনে বলা হয়েছে, শ্মশানে বা গোরস্থানে বড় জমায়েত সামাজিক দূরত্বের বিধি মোতাবেক বর্জনীয়।

মৃতদেহ দাহ করা হলে তার ছাই নিরাপদ। কেবলমাত্র সেইসব আনুষ্ঠানিকতাই পালন করা যাবে যাতে মৃতদেহ স্পর্শ করার ব্যাপার থাকে না, যেমন পুস্তক পাঠ বা জল ছেটানো। তবে স্নান করানো, আলিঙ্গন বা চুম্বন- এসব কিছুই মৃতদেহের সঙ্গে করা যাবে না।

পরিবারকে শেষবারের মত দেখতে দেবার জন্য মৃতদেহের ব্যাগ খোলা যেতে পারে। দাহ করা বা গোর দেবার পর পরিবার ও সেখানকার কর্মীদের হাতের স্বাস্থ্য রক্ষা করতে হবে। শ্মশান ও গোরস্থানের কর্মীদের বোঝাতে হবে যে এর ফলে তাঁরা রোগাক্রান্ত হবেন না।

গোর দেবার ক্ষেত্রে কি অতিরিক্ত কোনও নির্দেশিকা রয়েছে?

 মন্ত্রকের গাইডলাইনে তেমন কোনও উল্লেখ নেই।তবে পাঞ্জাবের এক স্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়েছেন সাধারণের চেয়ে এ ক্ষেত্রে বেশি গভীরে কবর দেওয়া হচ্ছে যাতে কেউ তার সংস্পর্শে না আসতে পারেন বা মৃতদেহ খুঁড়ে তোলা যায়।

coronavirus corona