সংখ্যা কম হলেও কিছু রাজ্যে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধির হার উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। আসা, ছত্তিসগড়, উত্তরাখণ্ড, ত্রিপুরা, ঝাড়খণ্ড, হিমাচলপ্রদেশের মত রাজ্যে মহারাষ্ট্র বা তামিনাড়ুর চেয়ে সংখ্যা কম হলেও গত কয়েকদিন যাবৎ সে সংখ্যা বেশ ভালই বাড়ছে।
গত এক সপ্তাহে আসামে প্রায় ১৪০ জনের নতুন সংক্রমণের ফলে সেরাজ্যে মোট সংক্রমিত এখন ৩৬০, এবং উত্তরাখণ্ডে সংখ্যাটা ১০০ থেকে ৪০০-তে পৌঁছিয়েছে। ত্রিপুরা, হিমাচলপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড এবং গোয়াতেও একই রকম ঘটনা ঘটছে। প্রায় সব ক্ষেত্রেই এই সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে যাঁরা চলাচল শুরু করেছেন তাঁদের মধ্যে, বিশেষ করে অন্যত্র কর্মরত যাঁরা নিজেদের শহরে বা গ্রামে ফিরছেন, তাঁদের মধ্যে। এই সমস্ত রাজ্যগুলিতেই বৃদ্ধির হার জাতীয় স্তরে বৃদ্ধির হারের চেয়ে বেশি।
এই রাজ্যগুলিতে মোট সংক্রমণের সংখ্যা এর চেয়েও বেশি হতে পারে, কারণ এঁদের মধ্যে প্রায় ৩০০০ জনের সংক্রমণ নিজেদের বসতি এলাকার বাইরে ধরা পড়েছে, ফলে কোনো রাজ্যের ডেটাবেসেই এঁরা অন্তর্ভুক্ত হননি।
যেমন কয়েকদিন আগেই পাঞ্জাব জানিয়ে দিয়েছে লুধিয়ানায় যে ৪০ জনের আরপিএফ কর্মীর সংক্রমণ ধরা পড়েছে, তাদের তারা রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত বলে হিসেব করবে না, কারণ তারা ওই রাজ্যের বাসিন্দা নয়।
যেহেতু অনেকেই এখন চলাচল শুরু করেছেন, তাঁদের কেউ পজিটিভ হলে, কোনও রাজ্যই তাঁদের দায়িত্ব নিতে চাইছে না। এই সংখ্যাটা এখন বিহারের মোট সংক্রমিতের চেয়েও বেশি। এঁদের অনেকেই এমন রাজ্যের বাসিন্দা, যেখানে সংক্রমিতের সংখ্যা কম, এবং পরবর্তীকালে এঁরা এই রাজ্যগুলির ডেটাবেসেই অন্তর্ভুক্ত হবেন।
মঙ্গলবার ভারতে সংক্রমিতের সংখ্যা দেড় লক্ষ ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে ৮৩ হাজার অ্যাক্টিভ। গত দু দিন ধরে মহারাষ্ট্রে নতুন সংক্রমণের সংখ্যা সামান্য কমছে। মঙ্গলবার এ রাজ্যে ২০০-এর কিছু বেশি নতুন সংক্রমিতের হদিশ পাওয়া গিয়েছে। দুদিন আগে পর্যন্ত এ রাজ্যে প্রতিদিন প্রায় ৩০০০ সংক্রমণ পাওয়া যাচ্ছিল। রাজ্যে মঙ্গলবার প্রায় ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা এতদিনের মধ্যে প্রায় সর্বাধিক।
মুম্বইয়ে বর্তমানে ৩৫ হাজারের বেশি সংখ্যক সক্রিয় সংক্রমিত, এবং কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, আগামী মাসে এই সংখ্যাটা দ্বিগুণ হবে। শহরে হাসপাতালের বেড কম পড়তে শুরু করেছে এবং বান্দ্রা কুরলা কমপ্লেক্সের মত বেশ কিছু জায়গাকে আইসোলেশন সুবিধা সহ অস্থায়ী হাসপাতালে রূপান্তরিত করা হচ্ছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা শহরের হাসপাতালের বেডসংখ্যা জুনের মধ্যে এক লক্ষের বেশি বাড়াবে এবং জুনের শেষে তা দেড় লক্ষ হবে।
তামিলনাড়ু ও গুজরাট দেশের দ্বিতীয় ও তৃতীয় রাজ্য শীর্ষ সংক্রমিত রাজ্য, তাদের সংখ্যার ক্রমবৃদ্ধি হচ্ছে এবং চতুর্থ স্থানে থাকা দিল্লিরও সেরকমই অবস্থা।বিহারে এক সপ্তাহ পর সংক্রমণ বৃদ্ধি হারে শ্লথতা দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার সেখানে ২৩১ জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এখন সে রাজ্যে সংক্রমণ প্রায় ৩০০০।