করোনা রুখতে প্রথম থেকেই মাস্ক ব্যবহারের উপরই জোর দিয়েছিল বিশ্বের ওয়াকিবহাল মহল। ভ্যাকসিনবিহীন বিশ্বে এছাড়া প্রাথমিকভাবে কোনও উপায়ও ছিল না। কিন্তু সম্প্রতি যে তথ্য সামনে এনেছেন বিজ্ঞানীরা, তার ভিত্তিতে তাঁরা দাবি করেছেন, করোনাভাইরাস বায়ুবাহিত রোগ। সেই মোতাবেক বিশ্বের ২৩৯ জন বিজ্ঞানী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে চিঠিও দিয়েছেন।
এখন এই নয়া প্রমাণই ভাবিয়ে তুলছে বিশ্বকে। তাহলে কি সব মাস্কই সুরক্ষা করবে কোভিড-১৯ সংক্রমণ থেকে? না কেবল এন-৯৫ মাস্কেই আটকাবে করোনা? কোন উপাদান দিয়ে মাস্ক তৈরি করলে তবেই এই বায়ুবাহিত ভাইরাসটিকে আটকানো সম্ভব হবে? কতটা গুরুত্বপূর্ণ মাস্ক পরা?
আরও পড়ুন, করোনা ভ্যাকসিন তৈরির মাঝপথেই পদত্যাগ বিজ্ঞানী গগনদীপ কাংয়ের
মাস্কের ব্যবহারে কতটা আটকাচ্ছে এই ভাইরাস, সেই বিষয়টি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সময় ফ্লোরিডা আটলান্টিক ইউনিভার্সিটির গবেষকরা প্রথমে ম্যানেকুইনের উপর এই পরীক্ষা করেন। যেখানে কৃত্রিমভাবে হাঁচি দেওয়ার প্রক্রিয়া করা হয়। এরপর লেসার ব্যবহার করে দেখা হয়, কীভাবে সেই বায়ুবাহিত পার্টিকালগুলি বাতাসে নিক্ষিপ্ত হচ্ছে। এই পরীক্ষাটির ফলাফল 'ফিজিক্স অফ ফ্লুয়িড' জার্নালেও প্রকাশিত হয়েছে।
কী কী বিষয় জানতে পারা গেল এই পরীক্ষা থেকে?
* দেখা যাচ্ছে, আলগা ভাঁজ করা রুমাল দিয়ে বানানো ফেস মাস্ক এবং ব্যান্ডানা স্টাইলের যে মুখ ঢাকা মাস্ক রয়েছে, সেগুলি শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় ক্ষুদ্রতম কণাগুলি আটকাচ্ছে।
* এমনকী বাড়িতে বানানো সুতির একাধিক লেয়ার বিশিষ্ট মাস্ক এবং দোকানের তিনকোনাবিশিষ্ট যে মাস্ক পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলিও হাঁচি কিংবা কাশির সময় মিউকাস জাতীয় পদার্থের বাইরে বেরোনো রুখে দিচ্ছে।
* কিন্তু এই সবকটি মাস্কে যদি কোনও প্রকার ছিদ্র থাকে বা ফাঁকা থেকে যায়, তাহলেই বিপদের আশংকা থাকছে।
* মুখ না ঢেকে হাঁচি কিংবা কাশি, অনেকসময় কথা বললেও কমপক্ষে ৬ ফিট পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ছে এই করোনা জীবাণু।
পরীক্ষার সময় পরিস্রুত জল এবং গ্লিসারিন দিয়ে একধরণের মিশ্রণ তৈরি করে তা স্মোক তৈরি হয় এমন মেশিন দিয়ে ম্যানেকুইনের মাস্কের মধ্যে দিয়ে পাঠান হয়। যেখানে কাশির মাধ্যমে আমাদের নাক মুখ দিয়ে মিউকাসের যে ক্ষুদ্র অণু নিক্ষেপ হয় তার থেকেও কম পরিধিবিশিষ্ট (১০ মাইক্রন) অণু পাস করানো হয় মাস্কের মধ্যে দিয়ে। দেখা গিয়েছে, যদি আলতো করে রুমাল বাঁধা থাকে, সেক্ষেত্রে মোট দূরত্বের ১/৮ ভাগ কম দূরত্বে ছড়াচ্ছে মিশ্রণটি। আর যদি মাল্টি-লেয়ার মাস্ক পরা থাকে, সেক্ষেত্রে ৬ ফিট থেকে কমে ৩ ফিট দূরত্ব অবধি ছড়িয়ে পড়ছে মিশ্রণ। অর্থাৎ মাল্টি-লেয়ার মাস্কের ক্ষেত্রে অনেকটাই আটকানো যাবে সংক্রমণ।
Read the story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন