গত কয়েকদিনে বিহারে বহুল পরিমাণ করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যার জেরে সংক্রমণে শীর্ষ ১০ রাজ্যের মধ্যে ঢুকে পড়ল বিহার। বৃহস্পতিবার ৩৮০ জনের নতুন সংক্রণের পর, শুক্রবার আরও ১৭৯ জনের সংক্রমণের ফলে রাজ্যে সব মিলিয়ে নিশ্চিত সংক্রমিতের সংখ্যা এখন ২১৬৬।
এর জেরে সংক্রমণের শীর্ষে থাকা দশ রাজ্যের শেষ রাজ্য হিসেবে পাঞ্জাবের জায়গায় চলে এল বিহার। গত এক সপ্তাহ ঝরে পাঞ্জাবে উল্লেখযোগ্যভাবে সংক্রমণ কমেছে, সেখানে সংক্রমণের স্ফীতি দেখা গিয়েছিল মহারাষ্ট্রের নান্দেড থেকে ফেরা মানুষদের মধ্যে সংক্রমণ দেখা দেওয়ার জেরে। শুক্রবার পাঞ্জাবে মাত্র একজনের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। এখনও পর্যন্ত সে রাজ্যে মোট সংক্রমিত ২০২৯ জন।
আরও পড়ুন, সোমবার বা তার পর বিমানে চড়ছেন? কয়েকটা বিষয় যা জানা দরকার
এর মধ্যে বিহারে গত এক সপ্তাহে ১১ শতাংশ সংক্রমণ বৃদ্ধি ঘটেছে, এবং সংক্রমণে দ্বিগুণত্বের হার মাত্র ৬.৪৫ দিন। জাতীয় স্তরে সংক্রমণের দ্বিগুণত্বের হার এখন ১৩.৩৩ দিন।
সংক্রমণে শীর্ষ ১০ রাজ্য
রাজ্য | মোট পজিটিভের সংখ্যা | নতুন সংক্রমণ | মোট আরোগ্য | মৃত্যু |
মহারাষ্ট্র | ৪৪৫৮২ | ২৯৪০ | ১২৫৮৩ | ১৫১৭ |
তামিলনাড়ু | ১৪৭৫৩ | ৭৮৬ | ৭১২৮ | ৯৮ |
গুজরাট | ১৩২৭৩ | ৩৬৩ | ৫৮৮০ | ৮০২ |
দিল্লি | ১২৩১৯ | ৬৬০ | ৫৮৯৭ | ২০৮ |
রাজস্থান | ৬৩৮১ | ২৬৭ | ৩৫৭৫ | ১৫৩ |
মধ্যপ্রদেশ | ৬১৭০ | ১৮৯ | ৩০৮৯ | ২৭২ |
উত্তরপ্রদেশ | ৫৭৩৫ | ২২০ | ৩৩২৪ | ১৫২ |
পশ্চিমবঙ্গ | ৩৩৩২ | ১৩৫ | ১২২১ | ২৬৫ |
অন্ধ্রপ্রদেশ | ২৫১৪ | ২৭ | ১৭৩১ | ৫৫ |
বিহার | ২১৬৬ | ১৭৯ | ৬২৯ | ১১ |
বিহারে সংক্রমিতদের অর্ধেকের বেশি ভিনরাজ্য থেকে ফেরা শ্রমিক, এবং মনে করা হচ্ছে বিশেষ করে দিল্লি, পশ্চিমবঙ্গ ও মহারাষ্ট্র থেকে যাঁরা ফিরছেন, তাঁরা বিশেষভাবে ঝুঁকিপ্রবণ।
দিল্লি থেকে যাঁরা ফিরেছেন, তাঁদের মধ্যে যাঁদের পরীক্ষা করা হয়েছে, তার মধ্যে ২৫ শতাংশ পজিটিভ। পশ্চিমবঙ্গ ও মহারাষ্ট্রের ক্ষেত্রে এই অনুপাত ১০ শতাংশ।যাঁরা আগে থেকেই বিহারে ছিলেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এই হার তিন শতাংশেরও কম।
বিহার সরকার এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছে দিল্লি, মুম্বই, সুরাট, পুনে, মুম্বই, পুনে, আমেদাবাদ ও নয়ডার মত ১১টি অতি ঝুঁকিপ্রবণ শহর থেকে যাঁরা ফিরছেন, তাঁদের বাধ্যতমূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারান্টিনে যেতে হবে। অন্যরা, যদি উপসর্গবিহীন হন, তাহলে হোম কোয়ারান্টিনে থাকতে পারবেন।
বৃহস্পতিবার সারা দেশে ৬০০০-এর বেশি সংক্রমিতের সন্ধান মিলেছে- যার মধ্যে ৫০০০-এর বেশি মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, দিল্লি, গুজরাট ও রাজস্থান, এই ৫ রাজ্য থেকে। সারা দেশে ১.১৮ লক্ষের বেশি সংক্রমিত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার সেরে গিয়েছেন।
আরও পড়ুন, লকডাউনে দেশের কৃষকরা যেসব চ্যালেঞ্জের মুখে
যেসব রাজ্যে সংক্রমিতের সংখ্যা কম, তাদের মধ্যে কয়েকটি রাজ্য থেকে গত কয়েকদিন বেশি সংক্রমণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। আসাম, ছত্তিসগড় ও হিমাচলপ্রদেশ থেকে সে রাজ্যগুলির তুলনায় বেশি সংক্রমণের খবর আসছে। আসামে এখন মোট সংক্রমিত ২৫৯, এর মধ্যে শুক্রবার ৫৬জনের নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েছে, অন্যদিকে ছত্তিসগড়ে ৪৪ জনের সংক্রমণ ধরা পড়ার পর সেখানে এখন মোট সংক্রমিত ১৭২। হিমাচল প্রদেশে শুক্রবার ১৬ জনের সংক্রমণ ধরা পড়ার পর, সে রাজ্যে এখন সংক্রমিত ১৬৮।
কেরালায় এতদিনের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক সংক্রমণ ধরা পড়েছে শুক্রবার, নতুন ৪২ জনের সংক্রমণের হদিশ মিলেছে সেখানে। দ্বিতীয় পর্যায়ে অন্য দেশ থেকে আটকে পড়াদের ফিরিয়ে আনার আগে পর্যন্ত কেরালায় দৈনিক সংক্রমণ এক অঙ্কের মধ্যে থাকছিল। এই পর্যায়ে নতুন করে কেরালায় সংক্রমণ প্রবাহ দেখা দিয়েছে, ফেরত আসা যাত্রীদের অনেকেই পজিটিভ। এর জেরে সোমবার থেকে চালু হওয়া অন্তর্দেশীয় বিমানযাত্রীরা যারা কেরালা আসবেন, তাঁদের ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারান্টিনের কথা বলেছে কেরালা সরকার।
শুক্রবারই কেরালায় চতুর্থ করোনা মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। যেসব রাজ্যে বেশি সংখ্যায় সংক্রমণ ঘটেছে, তাদের মধ্যে মৃত্যুহার কেরালায় সবচেয়ে কম।