আসামে বিহারের মত পরিস্থিতি তৈরি হতে চলেছে, যদিও তা সংখ্যায় তুলনামূলকভাবে কম। রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকরা তাঁদের শহরে ফেরার পর থেকেই আসামে সংক্রমণের নতুন স্রোত বইছে, যার জেরে নতুন সংক্রমিতের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়ছে।
সোমবার আসামে নতুন করে ১৪৮ জনের মধ্যে সংক্রমণ দেখা গিয়েছে, যার জেরে মোট সংক্রমিত এখন ৫২৬। প্রায় সব নতুন সংক্রমিতরাই হয় অন্য জায়গা থেকে ফিরেছেন বা তাঁদের সরাসরি সংস্পর্শে এসেছেন। ৪ মে লকডাউন শিথিল করার পর থেকেই সংক্রমণ বাড়ছিল কিন্তু গত এক সপ্তাহে সে সংখ্যা হুড়মুড়িয়ে বেড়েছে। এবারে পজিটিভের সংখ্যা ৫ গুণ লাফিয়ে বেড়েছে, যার জেরে আসাম এই মুহূর্তে সবচেয়ে দ্রুত সংক্রমিত রাজ্যের অন্যতম হয়ে উঠেছে।
কোভিড ১৯ ও হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন, এতদিনে যা যা জানা গেল
আসামে প্রথমবারের সংক্রমণের কারণ ছিল দিল্লি থেকে ফেরা তাবলিগি জামাতে অংশগ্রহণকারীরা। সে সময়ে রাজ্যে ৪২ জন পজিটিভ হয়েছিলেন। এর মধ্যে একজন মারা যান, বাকি সকলে সুস্থ হয়ে ওঠেন। এর পর ফের নতুন করে সংক্রমণ স্রোত শুরু হয়েছে রাজ্যে।
ওই এলাকার আরও কিছু রাজ্যে ফেরৎ আসা মানুষদের মধ্যে সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। নাগাল্যান্ডে সোমবার প্রথম তিনজনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এঁরা সকলেই চেন্নাই থেকে ফিরছিলেন। পরে চেন্নাই থেকে ফেরা আরও একজনের সংক্রমণ ধরা পড়ে। এর আগে নাগাল্যান্ডের একজনের সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। তিনি গুয়াহাটির হাসপাতালে ভর্তি হন ও সুস্থ হয়ে যান বলে তাঁকে নাগাল্যান্ডের হিসেবে ধরা হয়নি।
মণিপুরে এর আগে মাত্র দুজনের সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। এবার নতুন করে ৩০জনের বেশি মানুষের দেহে ভাইরাসের হদিশ মিলেছে। এঁরা প্রায় সকলেই চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, দিল্লি ও হায়দরাবাদ থেকে ফিরেছেন। রাজ্যে এখন মোট সংক্রমিত ৩৬।
ত্রিপুরাতেও সংখ্যাবৃদ্ধির হার সামান্য বেড়েছে। এর আগে পর্যন্ত রাজ্যে সংক্রমণ দেখা গিয়েছিল মূলত ধলাই জেলার একটি বিএসএফ ক্যাম্পে। ১৫০ জনেরও বেশি বিএসএফ কর্মী সংক্রমিত হন। কিন্তু গত কয়েকদিনে বেশ কয়েকজন পরিযায়ী পজিটিভ হয়েছেন এবং রাজ্যে মোট সংক্রমিত এখন ১৯৮।
মেঘালয়ে এর আগে এক পরিবারের ১৩ জন সংক্রমিত হয়ে সেরে গিয়েছিলেন। কিন্তু সোমবার অন্তত একজন ফেরত আসা পরিযায়ীর মধ্যে সংক্রমণ দেখা গিয়েছে।
উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলির মত ছবি দেখা গিয়েছে উত্তরাখণ্ডেও। সেখানে সংক্রমিতের সংখ্যা গত এক সপ্তাহে তিন গুণ বেড়েছে। রাজ্যে মোট সংক্রমিত এখন ৩৩০ জন।
রবিবার সারা দেশে প্রায় সাত হাজার নতুন সংক্রমণ ধরা পড়ার পর, সোমবার সংখ্যাটা একটু কমেছে। এদিন মোট নতুন সংক্রমণ ছ হাজারের সামান্য বেশি। এর একটা কারণ মহারাষ্ট্রে সংক্রমণের সংখ্যা কমা। রবিবার মহারাষ্ট্রে ৩০০০ সংক্রমণ ধরা পড়ার পর সোমবার সেখানে ২৪৩৬ জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এর মধ্যে মুম্বইয়েই সংক্রমিত ৬০ শতাংশ। এ শহরে করোনায় মৃতের সংখ্যা ১০০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে।
এর মধ্যে বিহারে দ্রুত গতিতে বাড়ছে সংক্রমণ। সোমবার বিহারে ১৬৩ জনের নতুন সংক্রমণ দেখা গিয়েছে, এখন অন্ধ্রকে ছাড়িয়ে এ রাজ্য সংক্রমণে নবম স্থানে উঠে এসেছে।