গত ২০ দিনেরও কম সময়ে ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩ গুণ বেড়েছে। বৃহস্পতিবার প্রায় ৪০০০ জনের নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েছে, মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ৮২ হাজার ছাড়িয়েছে। ২৫ এপ্রিলে এই সংখ্যাটা ছিল ২৭ হাজারের কম।
এর মধ্যে ৫৩ হাজার সক্রিয় সংক্রমিত, অর্থাৎ বাকি ২৮ হাজার জন ইতিমধ্যেই সুস্থ হয়ে গিয়েছেন এবং তাঁরা অন্যদের সংক্রমণ ঘটাতে পারবেন না।
আরও পড়ুন, আপৎকালীন পরিস্থিতিতে বন্দিমুক্তি
যেমনটা আশঙ্কা করা হচ্ছিল, তামিলনাড়ু বৃহস্পতিবার করোনা সংক্রমণে গুজরাটকে ছাড়িয়ে গিয়েছে, দেশের সংক্রমণের দ্বিতীয় শীর্ষ এখন দক্ষিণের এই রাজ্য। যদিও তামিলনাড়ুতে গত দুদিনে নতুন সংক্রমণের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কমেছে। ব়হস্পতিবার নতুন ৪৪৭ জনের সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। তামিলনাড়ুতে এখন মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ৯৬৭৪, যার অধিকাংশই চেন্নাইয়ে কোয়েম্বাডু বাজার এলাকার। গুজরাটে বৃহস্পতিবার ৩২৪ জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, রাজ্যে সংক্রমিত ৯৫৯২।
তবে মোট সংক্রমণে মহারাষ্ট্র অনেক এগিয়ে, সে রাজ্যে সংক্রমণ ২৭৫২৪। শুধু মুম্বই শহরেই অন্য যো কোনও রাজ্যের থেকে বেশি সংক্রমিত। বৃহস্পতিবার মুম্বইয়ে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ১৬৭৩৮, মৃত ৬২১, যা অন্য যে কোনও রাজ্যের চেয়ে বেশি।
রাজ্য | মোট সংক্রমিত | নতুন সংক্রমণ | মৃত্যু |
মহারাষ্ট্র | ২৭৫২৪ | ১৬০২ | ১০১৯ |
তামিলনাড়ু | ৯৬৭৪ | ৪৪৭ | ৬৬ |
গুজরাট | ৯৫৯২ | ৩২৪ | ৫৮৬ |
দিল্লি | ৮৪৭০ | ৪৭২ | ১১৫ |
রাজস্থান | ৪৪২৮ | ২০৬ | ১২৫ |
মধ্যপ্রদেশ | ৪৪২৬ | ২৫৩ | ২৩৭ |
উত্তরপ্রদেশ | ৩৯০২ | ১৪৪ | ৮৯ |
পশ্চিমবঙ্গ | ২৩৭৭ | ৮৭ | ২১৫ |
অন্ধ্রপ্রদেশ | ২১৩৫ | ৩৬ | ৪৮ |
পাঞ্জাব | ১৯৩৫ | ১১ | ৩২ |
চলাফেরায় শিথিলতা দেখা দেওয়ার পর, ভ্রমণকারীরা অনেকেই এখন ভাইরাসের নতুন বাহক। যেসব রাজ্যে ভিন রাজ্যের কর্মরতরা ফিরছেন, সেখানে গত কয়েকদিনে সংক্রমণের বাহুল্য দেখা দিয়েছে। বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, উত্তরপ্রদেশ, ছত্তিসগড়েই নয়, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, এবং গোয়ার ক্ষেত্রেও তা সত্য। ওড়িশায় এখন সবচেয়ে দ্রুতহারে সংক্রমণ বাড়ছে, বৃহস্পতিবার সে রাজ্যে ৬১ জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যাঁদের প্রায় সকলেই ভিন রাজ্য থেকে ফেরত আসা বা তাঁদের নিকট সংস্রব। এ মাসের শুরুতে যেখানে ওড়িশায় সংক্রমণ ছিল ১৫০-র কম, সেখানে বৃহস্পতিবার সংক্রমিতের সংখ্যা ৬৭২।
বিহারেও বৃহস্পতিবার ৪৭ জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে এবং রাজ্যের গড়ের তুলনায় ফিরে আসা শ্রমিকদের মধ্যে এই হার অনেকটাই বেশি। ৪২৭৫ জন পরিযায়ী শ্রমিককে পরীক্ষা করে তাঁদের মধ্যে ৩২০ জনকে পজিটিভ পাওয়া গিয়েছে। বিহারে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ১০০০-এর কম হলেও, গত কয়েকদিনে সংখ্যা বিপুল পরিমাণে বাড়ছে।
আরও পড়ুন, নর্দমার জল থেকে করোনা সংক্রমণ হতে পারে কি?
সোমবার থেকে অন্ধ্রে যে ১১৭ জনের নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েছে তার মধ্যে ১০৫ জন ভিন রাজ্য থেকে ফিরেছেন। তেলেঙ্গানায় এই সংখ্যাটা ১৪৯-এর মধ্যে ৬৭। ফলে এই দুই রাজ্যেই যাঁরা ফিরছেন তাঁদের জন্য নতুন করে স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পাঞ্জাবে মহারাষ্ট্রের নান্দেড থেকে ফেরা তীর্থযাত্রীদের নিয়ে এই সমস্যা দেখা গিয়েছিল। তবে সেখানে গত কয়েকদিনে নতুন সংক্রমণের সংখ্যা অনেকটাই কমেছে। বৃহস্পতিবার রাজ্যে ১১ জনের নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েছে, আগের দিন সংখ্যাটা ছিল ১০।
দিল্লিতে গত কয়েকদিন ধরে যে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে সেই সংখ্যা ঠিকঠাক করার কাজ চলছে তবে সরকারি বুলেটিনে সে খতিয়ান নেই। বৃহস্পতিবার দিল্লি সরকার আরও ৯জনের মৃত্যুর কথা ঘোষণা করেছে, মোট মৃত্যুর সংখ্যা সেখানে ১১৫। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে কোনও মৃত্যু ঘটেনি। সরকারি বুলেটিনে যে মৃত্যুর সংখ্যা পাওয়া যাচ্ছে তাতে ব্যাপক গরমিল দেখা যাচ্ছে এবং সে খবর আগেই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত হয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন