সারা পৃথিবীর সরকার এখন করোনাভাইরাস অতিমারীর বিরুদ্ধে লড়ছে। তার মধ্যেই বেশ কিছু গণতান্ত্রিক দেশের নেতাদের জনপ্রিয়তা বাড়ছে বলে জানিয়েছে পোলিং এজেন্সিগুলি।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ, স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সাঞ্চেজ এই তালিকায় রয়েছেন। ফিনান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদন অনুসারে এ ব্যাপারে সবথেকে বেশি এগিয়ে রয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মনে রাখতে হবে গত কয়েক মাসে তাঁর জনপ্রিয়তা ছিল পড়তির দিকে। তাঁর পরেই রয়েছেন মেহিকোর আন্দ্রে ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাডর।
করোনাভাইরাসের সামূহিক সংক্রমণ বৃদ্ধির ইতিবাচক দিকও রয়েছে
সম্প্রতি করোনাভাইরাস অতিমারীর সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি দেখা দিয়েছে আমেরিকায়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যেভাবে সংকট মোকাবিলা করেছেন তা নিয়ে বেশ কিছু মহল অসন্তুষ্ট। কিন্তু তাতে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তায় ঘাটতি দেখা দিচ্ছে না। গোটা মার্চ মাস জুড়ে তাঁর জনপ্রিয়তা বেড়েছে।
পৃথিবীর অন্যত্রও বহু নেতাদের, যাকে বলে পোলিং নাম্বার, তা বেড়েছে। ব্রিটেনের বরিস জনসন, যিনি ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ভোটে ব্যাপক জয়লাভ করেছিলেন, তিনি সারা বিশ্বে জনপ্রিয়তার বৃদ্ধিতে সর্বোচ্চ স্থানে অধিকার করেছেন।
খেয়াল রাখতে হবে, জনসনের নিজেরই করোনা সংক্রমণ ঘটেছে এবং তিনি আইসোলেশনে রয়েছেন। ফিনানশিয়াল টাইমসের রিপোর্ট অনুসারে এ বছরের শুরু থেকে জনসনের রেটিং বেড়েছে ২৫ শতাংশ। স্পেনে চারটি সাধারণ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী সাঞ্চেজের রেটিং বাড়তে থেকেছে, দেশের ৩৬ শতাংশ মানুষের মতে তাঁর নেতৃত্ব ভাল থেকে খুব ভালর মধ্যে বলে সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে।
ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদন অনুসারে ইজরায়েলের বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ৬০ শতাংশ অ্যাপ্রুভাল পেয়েছেন, ইতালির জুসেপ্পে কোন্তে এবং জার্মানির অ্যাঞ্জেলা মার্কেল ৭০ শতাংশ ও কানাডার জাস্টিন ট্রুডো ৬৪ শতাংশ অ্যাপ্রুভাল পেয়েছেন।
তাবলিগি জামাত কী, কেমন করে চলে এ সংগঠন?
‘পতাকা ঘিরে সমাবেশ’ ক্রিয়া
জনপ্রিয়তার এই উত্থান, বিশেষ করে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে পতাকা ঘিরে সমাবেশ। রাষ্ট্রবিজ্ঞানেই এই ধারণা ১৯৭০-এ নিয়ে এসেছিলেন জন মুলার। মুলারের মতে কোনও সংকটকালে কোনও প্রেসিডেন্ট যদি ব্যাপক জনসমর্থন পান, তাহলে তাকে বলা যেতে পারে পতাকা ঘিরে সমাবেশ।
মুলারের মতে এই প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে যখন সমস্যা হবে আন্তর্জাতিক, এবং তা আমেরিকা, বিশেষ করে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকবে। মুলার একে মার্কিন প্রেক্ষিতে দেখলেও এই ধারণা গোটা বিশ্বেই প্রযুক্ত।
ইউরোপে লক ডাউন কেমন চলছে?
এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি দেখা গিয়েছিল আমেরিকায় ৯-১১ হামলার পর। ওই ঘটনার পর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জর্জ ডবলু বুশের অ্যাপ্রুভাল রেটিং পৌঁছেছিল ৮৪ শতাংশ। করোনাভাইরাস অতিমারী আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এমন এক ঘটনা যার সঙ্গে বেশ কিছু সরকার যুক্ত। সে কারণেই এই মুলারনীতি এসব জায়গায় কাজ করছে বলে মনে করা হচ্ছে।