/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2020/03/m-1.jpg)
বর্তমান লকডাউনের অর্থ হল সামনের শীতে এই ভাইরাস ফের আসতে পারে
ডক্টর মার্ক- অ্যালেন উইডোসন সংক্রামক রোগের মহামারী বিশেষজ্ঞ। ১৮ বছর ধরে তিনি আমেরিকার রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিষেধক কেন্দ্রে কাজ করেছিলেন। একন তিনি বেলজিয়ামের আনটোয়ের্প ইনস্টিট্যুট অফ ট্রপিকাল মেডিসিনে কর্মরত। করোনাভাইরাস অতিমারী নিয়ে তিনি কথা বললেন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে।
মানবজাতির এক পঞ্চমাংশ লক ডাউনের মধ্যে রয়েছে। এ ভাবে কতদিন চলতে পারে?
এক এক জায়গায় এক রকম ভাবে এই পদ্ধতি কার্যকর হবে। নাতিশীতোষ্ণ এলাকায় কয়েকমাস জুড়ে তীব্র সংক্রমণ হবে, উষ্ণ এলাকায় সারা বছর ধরে সংক্রমণ চলবে। ইউরোপে গ্রীষ্মের শুরু পর্যন্ত লকডাউনই লক্ষ্য, ততদিনে পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আমাদের আশা। ভারতে সারা বছর ধরেই রোগ ছড়াবে। দীর্ঘদিন ধরে এখানে সব বন্ধ রাখা মুশকিল।
এ ভাইরাস কি থেকে যাবে এবং স্থানীয় মহামারী হয়ে উঠবে?
সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। কিন্তু আমার মনে হয়, তামনটাই হবে। আগামী এক দু বছরের মধ্যে সারা বিশ্বের অধিকাংশ মানুষই এ রোগের সংস্পর্শে এসে যাবেন বলে মনে হয়। একন- আগামী দেড় বছরের মধ্যে প্রতিষেধক এসে যাবে বলে আশা করা যাক। এবং তার চেয়েও জরুরি, ভারতীয় প্রতিষধক তৈরির সংস্থাগুলি যেন এ প্রতিষধক তৈরি করতে পারে - দুনিয়ার আমলাতন্ত্র এড়িয়ে যেন প্রতিষেধক তৈরি বিকেন্দ্রীকৃত হয়। তা সত্ত্বেও ভাইরাস থেকে যাবে বলেই মনে হয়।
আরও পড়ুন, করোনার শিকার বয়স্করা বেশি হচ্ছেন কেন, সম্ভাব্য কারণ
গবেষণায় দেখা যাচ্ছে ষাটোর্ধ্বরা এ রোগের শিকার বেশি হচ্ছেন। সবচেয়ে কার্যকর চিকিৎসা কী হতে পারে?
হ্যাঁ। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এ সংক্রমণ মৃদু এবং ফুসফুস পর্যন্ত পৌঁছচ্ছে না। কিন্তু যদি গভীর টিস্যুতে সংক্রমণ হয়. তাহলে ফুসফুসে সমস্যা হবে, শ্বাস নিতে কষ্ট হবে।অতি আক্রান্তদের অক্সিজেন দিতে হবে, ভেন্টিলেটরে রাখতে হবে। বেশ কিছু ওষুধ ট্রায়াল পর্যায়ে আছে, অনেকগুলিই কার্যকর হচ্ছে, কিন্তু কোনটা কখন কাজে লাগবে তা বলার সময় এখনও আসেনি।
বিভিন্ন সারফেসে এই ভাইরাসে বেশ কয়েকিদন অবধি থেকে গিয়েছে। এটা নির্ভর করছে সারফেস ও পরিবেশের উপর। কিন্তু তাপ পেলে তা দ্রুত বিলীন হয়ে যাচ্ছে। দরজার হাতলের মত সারফেস এড়িয়ে যাওয়া ও বারবার পরিষ্কার করা জরুরি।
একটা মত হচ্ছে, জনসংখ্যার ৫০ শতাংশ যদি ভাইরাসের সংস্পর্শে আসে তাহলে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয় যাবে।
এটা গোষ্ঠী প্রতিরোধের ধারণা- অনেকের মধ্যে সংক্রমিত হলে তার ক্ষমতা কমে যায় এবং প্রতিরোধ ক্ষমতাহীনরা সুরক্ষা পান। কিন্তু বর্তমান লকডাউনের অর্থ হল সামনের শীতে ইউরোপে এই ভাইরাস ফের আসতে পারে।
আরও পড়ুন, ২১ দিনের লকডাউনে প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের জোগান দিতে ভারত কতটা প্রস্তুত?
ভারতের টেস্টিং নিয়ে বিশাল বিতর্ক হচ্ছে।
ভারতের কোনও কোনও জায়গায় কোভিড ১৯ সংক্রমণের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। টেস্টিংয়ের ফলে সমস্যার মাপ বুঝতে সুবিধে হবে এবং হ্যাঁ, এর ফলে সংক্রমিতদের সংস্রব থেকে অন্যদের সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব।
একইসঙ্গে মনে রাখতে হবে, উপসর্গহীন কারও কাছ থেকেও সংক্রমণ ছড়াতে পারে, ফলে টেস্ট ও আইসোলেশন নীতি গ্রহণ করলেই সংক্রমণ এড়ানো কার্যকর হবে তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। বরং অক্সিডেন ডেলিভারির সমস্ত ব্যবস্থা রাখা এবং কম-সম্পদ সম্পন্ন এলাকায় সর্বোত্তম চিকিৎসা সংক্রান্ত গবেষণাই মূল বিষয়।