মঙ্গলবার ২৩ জুন, সরকারি ই মার্কেটে বিক্রির জন্য সমস্ত পণ্য কোন দেশে উৎপাদিত তা জানানো বাধ্যতামূলক বলে জানিয়েছে সরকার। নতুন কোনও পণ্য নথিভুক্তির সময়েই তা জানাতে হবে। ডিপার্টমেন্ট ফর প্রমোশন অফ ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড ইন্টারনাল ট্রেড একই রকম প্রস্তাব বেসরকারি ই কমার্স প্ল্যাটফর্মের জন্য লাগু করা যায় কিনা পরীক্ষা করে দেখছে।
সরকারি ই পোর্টালে বিক্রির ব্যাপারে কী বদল হবে?
এই পোর্টালে বাণিজ্যমন্ত্রক বিভিন্ন মন্ত্রক ও সরকারি সংস্থার জন্য পণ্য ও পরিষেবা খরিদ করে। এই পোর্টালে বিক্রেতাদের এবার থেকে তাঁদের পণ্যের উৎপাদনস্থল জানাতে হবে। এই পোর্টালে একটি মেক ইন ইন্ডিয়া ফিল্টারও রয়েছে, যার মাধ্যমে ক্রেতা জানতে পারেন নির্দিষ্ট পণ্য উৎপাদনে কতটা দেশিয় কাঁচামাল ব্যবহার করা হয়েছে।
এর ফলে যেসব পণ্য ৫০ শতাংশ স্থানীয় কাঁচামাল দিয়ে তৈরি, তেমন তা পছন্দ করার অধিকার থাকবে। উল্লেখ্য সরকার এ মাসের গোড়ায় পণ্যের স্থানীয় কাঁচামালের পরিমাণের ভিত্ততে সরবরাহকারীদের চিহ্নত করার নিয়ম সংশোধন করেছে।
এসব কেন হচ্ছে?
এই সিদ্ধান্তের পিছনে নরেন্দ্র মোদী সরকারের আত্মনির্ভর ভারতের ভাবনা রয়েছে, যা স্থানীয় স্তরে তৈরি পণ্য ব্যবহারের মাধ্যমে স্বনির্ভরতা বাড়াবে। এর আরেকটা কারণ ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় চিনা ও ভারতীয় সেনার সংঘর্ষ, যার জেরে বেশ কিছু সরকারি বিভাগ টিন থেকে পণ্য আমদানির ব্যাপারে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।
চিন থেকে ভারতে সবচেয়ে বেশি পণ্য আমদানি হয়। হিসেবটা এরকম, ২০১৮-১৯ সালে ৭০.৩২ বিলিয়ন ডলার এবং ২০১৯ সালের এপ্রিল থেকে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৬২.৩৮ বিলিয়ন ডলার (যা এখনও পর্যন্ত ১৪ শতাংশ)।
কনফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স নামের একটি সংগঠন দাবি করেছে বেসরকারি ই কমার্স সংস্থাগুলিকেও পণ্য উৎপত্তিস্থলের ট্যাগ লাগাতে হবে। এই সংগঠনের বক্তব্য অনুসারে বেশির ভাগ ই কমার্স সংস্থা বহুল পরিমাণে চিনা দ্রব্য বিক্রি করছে।
সাধারণ খরিদ্দারদের উপর এর কী প্রভাব পড়বে?
সরকারি ই পোর্টালে পণ্য বিক্রয়ের জন্য উৎপাদক দেশের নাম ঘোষণার সঙ্গে সরকারের মেক ইন্ডিয়া প্রচার ও আত্মনির্ভরতায় জোর দেওয়ার ফলে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সরকারি দফতরে ব্যবহার্য আমদানিকৃত পণ্যের ফিল্টার করা যাবে।
সরকারি পোর্টালে সরকারি আধিকারিকদের ব্যবহার্য স্টেশনারি দ্রব্য থেকে রোগীদের উপর ব্যবহারের চিকিৎসাদ্রব্য কেনা হয়ে থাকে - এবং এর ফলে ভারতীয় উৎপাদকরা নিজেদের পণ্য সরকারকে বিক্রির সুযোগ পাবেন।
আরও সরাসরি প্রভাব দেখা যাবে, যদি উৎপাদক দেশের নাম বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব বেসরকারি প্ল্যাটফর্মেও লাগু হয়।
এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রাহকদের আরও স্পষ্ট ভাবে তাঁদের পণ্য কোথায় তৈরি সে কথা জানাতে সাহায্য করবে, যার ফলে তাঁরা কোনও নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডের পণ্য কিনবেন নাকি অন্য কিছু নেবেন, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।