Advertisment

কোভ্যাক্সিন - কোভিডের খাঁটি ভারতীয় ভ্যাকসিনের অনুমোদন পেতে কত দেরি?

কোভ্যাক্সিন পশুর শরীরে পরীক্ষা করা হয়ে গিয়েছে, তার পরেই নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে এ ব্যাপারে পদক্ষেপের কথা বলেছে সংস্থা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Covaxin

ভারত কোভিড-১৯-এর ভ্যাকসিন দেশিয় স্তরে তৈরির ব্যাপারে এক ধাপ এগিয়ে গেল

ভারতের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অরগানাইজেশন এ দেশের প্রথম নিজস্ব কোভিড -১৯ ভ্যাকসিন কোভ্যাক্সিনকে মানুষের উপর পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছে। সারা ভারতে জুলাই মাস থেকে শুরু হবে এই হিউম্যান ট্রায়াল।

Advertisment

কোভ্যাক্সিন কী, কেমন করে তৈরি হল?

ভারত বায়োটেক ইন্ডিয়া লিমিটেড এই কোভ্যাক্সিন তৈরি করেছে। এ ব্যাপারে তাদের সহযোগিতা করেছে আইসিএমআর-এর ন্যাশনাল ইনস্টিট্যুট অফ ভাইরোলজি।

এই প্রক্রিয়ায় এনআইভি গত মে মাসে একজন উপসর্দবিহীনের শরীরের ভাইরাসের একটি স্ট্রেন পৃথক করে বিবিআইএলের কাছে পাঠায়। সেখান থেকেই হায়দারাবাদের একটি ল্যাবরেটরিতে এই ইনঅ্যাকটিভেটেড ভ্যাকসিন প্রস্তুত করা হয়েছে।

এই ভ্যাকসিন একবার মানুষের শরীরে প্রবেশ করানো হল, তার আর সংক্রমিত করার বা রেপ্লিকেট করার ক্ষমতা থাকে না, কারণ সে ভাইরাসকে মেরে ফেলে। প্রতিরোধ ব্যবস্থায় এটি একটি মৃত ভাইরাস হিসেবে কাজ করে এবং ভাইরাসের অ্যান্টিবডি তৈরি করে। সংস্থার পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এমনটাই বলা হয়েছে।

কোভ্যাক্সিন পশুর শরীরে পরীক্ষা করা হয়ে গিয়েছে, তার পরেই নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে এ ব্যাপারে পদক্ষেপের কথা বলেছে সংস্থা।

ভারতের ক্ষেত্রে এই অনুমতির অর্থ কী?

মানুষের উপর এই ভ্যাকসিনের প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর ফলে ভারত কোভিড-১৯-এর ভ্যাকসিন দেশিয় স্তরে তৈরির ব্যাপারে এক ধাপ এগিয়ে গেল।

প্রথম পর্যায়ে সাধারণত অল্প সংখ্যক মানুষের মধ্যে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়, যাতে দেখা হয় ভ্যাকসিনের ডোজ কতটা সুরক্ষিত, প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করার ব্যাপারে তা কতটা কার্যকর ও এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কী। দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল বেশি সংখ্যক মানুষের মধ্যে সংঘটিত হয়, যাতে বয়স ও লিঙ্গভিত্তিক কার্যকারিতাও বিবেচনা করা হয়। এই পর্যায়ে নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর মধ্যে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা দেখা হয়ে থাকে।

আর ক পর্যায়ের পরীক্ষা অনুমোদনের জন্য প্রয়োজন?

সব ওষুধের মতই ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রেও চার পর্যায়ের ট্রায়াল হবে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছ থেকে অনুমোদনের পর সংস্থাকে রোগীর উপর ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে হবে এবং বাজারে ছাড়ার পর নজরদারি চালাতে হবে, যার মাধ্যমে দেখা হবে এর কোনও দীর্ঘমেয়াদি অনভিপ্রেত কুফল রয়েছে কিনা।

ভারত বায়োটেকের পরিকল্পনা জুলাই জুড়ে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল চালানোর, তবে অনুমোদন কবে পাওয়া যাবে সে সম্পর্কে তারা অনিশ্চিত।

বিবিআইএল বলেছে, "এই মুহূর্তে আমরা বলতে পারছি না কেমন করে মানুষের উপর ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে, কারণ ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হয়নি। প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের সাফল্য দেখার পর আমরা বৃহত্তর ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের দিকে এগোব। এর পর নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনের উপর নির্ভর করবে লাইসেন্সে পাওয়ার সময়।"

আর কোন ভারতীয় সংস্থা কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন তৈরি করছে, তারা কোন পর্যায়ে রয়েছে?

জাইডাস ক্যাডিলা, সিরাম ইনস্টিট্যুট অফ ইন্ডিয়া এবং এ মাসের গোড়া থেকে প্যানাসিয়া বায়োটেকের মত ভারতীয় সংস্থা এ কাজে এগিয়েছে।

প্যানাসিয়া এখনও প্রি ক্লিনিক্যাল পর্যায়ে রয়েছে, তবে জাইডাস ও সিরাম তাদের প্রিক্লিনিক্যাল গবেষণা শেষ করেছে কিনা তা স্পষ্ট নয়।

কোভ্যাক্সিন পৃথিবীর অন্য ভ্যাকসিন পরীক্ষার সঙ্গে কীভাবে তুলনীয়?

ভারত বায়োটেক আরও দুটি কোভিড ভ্যাকসিন প্রস্তুত করার জন্য টমাস জেফারসন ইউনিভার্সিটি ও উইসকন-ম্যাডিসন ইউনিভার্সিটির সঙ্গে একযোগে কাজ করছে। এ দুটির চেয়ে পর্যায়গত ভাবে এগিয়ে রয়েছে কোভ্যাক্সিন। বাকি দুটি প্রি ক্লিনিক্যাল পর্যায়ের রয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

তবে কোভিড-১৯-এর বিশ্ব দৌড়ে তারা অনেকটাই পিছিয়ে। সবচেয়ে এগিয়ে অ্যাসট্রাজেনেকা, তাদের কাজ চলছে অক্সফোর্ড ইউনিভারিসিটির সঙ্গে। তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল চালাচ্ছে তারা। সিরাম ইনস্টিট্যুট তাদের ভ্যাকসিন প্রস্তুত করার ব্যাপারে চুক্তিবদ্ধ।

একটু পিছিয়ে রয়েছে মডার্না। তারা তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু করতে চলেছে।

কোভ্যাক্সিন ছাড়া সারা বিশ্বে অন্তত ৬টি ভ্যাকসিন দ্বিতীয় বা তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে রয়েছে, আরও পাঁচটি রয়েছে প্রথম পর্যায়ের ট্রায়ালে।

coronavirus COVID-19
Advertisment