করোনা ভাইরাস যে বায়ুবাহিত এ বিষয়ে বৈজ্ঞানিকভাবে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত না হলেও বাতাসকে মাধ্যম করে অনেক ক্ষেত্রে ছড়িয়ে পড়ছে এই SARS-CoV-2 ভাইরাসটি, তা আগেই জানিয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। আর ঠিক সেই কারণেই মাস্ক এবং সামাজিক দূরত্ব বিধি বজায় রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল সংক্রমণ থেকে বাঁচতে। তবে ল্যানসেট জার্নালে এবার বৈজ্ঞানিকভাবে জানান হয়েছে যে কেন এই SARS-CoV-2 ভাইরাসটি এত প্রবলভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। প্রধান কারণ হল- এই ভাইরাস একেবারেই বায়ুবাহিত তাই।
যদিও করোনার যে বায়ুবাহিত চরিত্র রয়েছে তা নতুন নয়। অতিমারীর নেপথ্যে কি করোনা ভাইরাসের বায়ুবাহিত চরিত্রই দায়ী? এই বিষয়ে একাধিক মত ছিল বিজ্ঞানীদের। প্রাথমিকভাবে করোনাকে মিউকাস বাহিত মনে করা হলেও ৯ জুলাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এক আপডেটে জানিয়ে দেয় যে বদ্ধ জনবহুল জায়গায় বাতাসেও করোনাভাইরাস থেকে যেতে পারে এবং স্বল্পদূরত্বে এই ভাইরাসের বায়ুবাহিত সংক্রমণ হচ্ছে।
আরও পড়ুন, মারাত্মক আকার ধারণ করতে চলেছে করোনা সংক্রমণ, দ্বিতীয় পর্যায়ে ক্ষতি বেশি
এখন প্রশ্ন উঠতে পারে যে কী কী প্রমাণ থেকে এতটা নিশ্চিত হচ্ছে বিশ্বের বিজ্ঞানী ও গবেষক মহল? Lancet জার্নালে প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে, "এক ঘরে না থাকলেও কোয়ারেন্টাইন হোটেলে পাশাপাশি ঘরে থেকেও করোনা সংক্রমিত হয়েছে। অর্থাৎ লং-রেঞ্জ ট্রান্সমিশন হচ্ছে। যা কেবল বায়ুবাহিত হলেই সম্ভব।" জার্নালে এও বলা হয় স্বাস্থ্যকর্মীরা পিপিই কিট পরে থাকলেও তারা আক্রান্ত হচ্ছে এই ভাইরাসের 'নসোকমিকাল ইনফেকশনের' (nosocomial infection) মাধ্যমে।
অতিমারীর পরে পরীক্ষাগারে এই ভাইরাস নিয়ে চলছে বিশ্লেষণ। দেখা গিয়েছে SARS-CoV-2 ভাইরাস বাতাসে অনায়াসে ৩ ঘন্টা বেঁচে থাকতে পারছে। তাই এবার অনেক সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে এমনটাই জানাচ্ছেন এই পেপার প্রকাশক বিজ্ঞানীরা। ব্রিটেন, আমারিকা, কানাডার ৬ জন বিজ্ঞানীরা করোনা ভাইরাসের বায়ুবাহিত চরিত্র নিয়ে গবেষণা করেন। এরপরই তাঁরা এই সিদ্ধান্তে আসেন।
আরও পড়ুন, করোনার ‘দ্বিতীয় ঢেউ’-এ পুন:সংক্রমণ কম! খুব সতর্ক থাকতে হবে ষাটোর্ধ্বদের
এই পেপারের অন্যতম গবেষক অক্সফোর্ড বিশেবিদ্যালয়ের তৃষা গ্রিনহালহ দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, "ভাইরাসের যা চরিত্র তা বিশ্লেষণ করে বোঝা যাচ্ছে আরও পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। হাইজিন অনেক বেশি মানতে হবে। বদ্ধ নয়, খোলা জায়গায় থাকুন। প্রয়োজনে এয়ার ফিল্ট্রেশন ব্যবহার করুন। জনসমাগম একেবারে এড়িয়ে চলুন।"
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন করোনা আক্রান্ত রোগীরা যখন ঘরের মধ্যে হাঁচি দিচ্ছেন কিংবা কাশছেন তখন ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অণু হয়ে ঘরের বাতাসে থাকছে এই ভাইরাস। পরিবর্তীতে প্রশ্বাসের মাধ্যমে আরেকজনের শরীরে প্রবেশ করছে এই কোভিড ভাইরাস। মানুষের ফুসফুসের উপর যে আস্তরণ রয়েছে তা ফিল্টার হিসেবে কাজ করলেও। এই ভাইরাসে এতটাই ক্ষুদ্র যে তা ভেদ করে ফুসফুসকে আক্রান্ত করতে বিন্দুমাত্র অসুবিধা হচ্ছে না।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন