কোভিড-১৯ আক্রান্ত ক্যানসার রোগীদের মধ্যে মৃত্যুহারের খতিয়ান নিয়ে আমেরিকায় একটি নতুন গবেষণা হয়েছে। এ ধরনের গবেষণার মধ্যে বৃহত্তম বলে দাবি করা এই পেপারে বলা হয়েছে ক্যানসারে আক্রান্ত কোভিড-১৯ রোগীদের মধ্যে মৃত্যুহার ক্যানসারহীন রোগীদের চেয়ে বেশি হওয়ার সম্ভাবনা। অ্যালবার্ট আইনস্টাইন কলেজ অফ মেডিসিন এবং মন্টেফিওর হেলথ সিস্টেমের চিকিৎসক-গবেষকদের এই পেপার ক্যানসার ডিসকভারির অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত হয়েছে।
নিউ ইয়র্কের মন্টিফিওর মেডিক্যাল সেন্টারে গত ১৮ মার্চ থেকে ৮ এপ্রিলের মধ্যে ভর্তি হওয়া কোভিড আক্রান্ত ২১৮ জন ক্যানসার রোগীর মধ্যে এই গবেষণা করা হয়। এঁদের মধ্যে ৬১ জন কোভিড-১৯ এ মারা যান, অর্থাৎ মৃত্যুহার ২৮ শতাংশ, যেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া হিসেব অনুসারে সারা আমেরিকায় কোভিড-১৯ আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুহার ৫.৮ শতাংশ।
এই রোগীদের অধিকাংশই ছিলেন উপসর্গযুক্ত, যাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন হয়েছিল। গবেষকরা বলছেন এর ফলে ক্যানসারাক্রান্তদের মৃত্যুহার বেশি হওয়ার সম্ভাবনা আংশিকভাবে প্রমাণিত। তবে নিউইয়র্ক শহরে ক্যানসারাক্রান্ত নন এমন কোভিড রোগীদের ওই সময়কালের মধ্যে মৃত্যুহার হিসেব করে দেখা যাচ্ছে ক্যানসার রোগাক্রান্তদের মৃত্যুহার অনেকটাই বেশি।
লিউকোমিয়া ও লিম্ফোমিয়ার মত ব্লাড ক্যানসার আক্রান্ত কোভিড-১৯ রোগীদের মধ্যে মৃত্যুহার সবচেয়ে বেশি- ৩৭ শতাংশ (৫৪ জনের মধ্যে ২০ জন)। সলিড ম্যালিগন্যান্সির ক্ষেত্রে মৃত্যুহার ২৫ শতাংশ (১৬৪-র মধ্যে ৪১)। লাং ক্যানসারের রোগীদের মধ্যে মৃত্যুহার ৫৫ শতাংশ এবং কোলোরেকটাল ক্যানসারের ক্ষেত্রে এই হার ৩৮ শতাংশ। অন্যদিকে ব্রেস্ট ক্যানসারে মৃত্যুহার ১৪ শতাংশ ও প্রস্টেট ক্যানসারে মৃত্যুহার ২০ শতাংশ।
মন্টিফিয়োরের সার্জিকাল ক্যানসার বিশেষজ্ঞ তথা আইনস্টাইন কলেজের সহ অধ্যাপক বিকাশ মেহতা এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত। তিনি বলেছেন, “আমাদের গবেষণায় ক্যানসার আক্রান্তদের কোভিড সংস্পর্শে আসা থেকে বিরত রাখার উপর জোর দেওয়া হয়েছে, এবং যদি তাঁরা এসে পড়েনও, তাহলেও তাঁদের চিহ্নিত করতে হবে এবং বিপজ্জনক উপসর্গ দেখা দিচ্ছে কিনা সে ব্যাপারে কড়া নজর রাখতে হবে।” তিনি বলেছেন, “আমরা আশা করছি আমাদের গবেষণা যে সব জায়গায় এখনও অতিমারী ভয়াবহ ভাবে হানা দেয়নি, তাদের ক্যানসার রোগীদের ব্যাপারে সতর্ক করতে পারবে।”
সূত্র- অ্যালবার্ট আইনস্টাইন কলেজ অফ মেডিসিন