Advertisment

করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা ঠিক কেমন?

হাসপাতালের উপর চাপ কমাতে কোভিড ১৯ হাসপাতালের কাছে অবস্থিত হোটেল, হস্টেল, গেস্টহাউস, স্টেডিয়ামকে কেয়ার সেন্টার হিসেবে গড়ে তুলে স্বল্প সংক্রমিতদের সেখানে রাখা যেতে পারে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

গ্রেটার নয়ডা এলাকায় সিল করে দেওয়া হাউজিং সোসাইটি (ছবি- গজেন্দ্র যাদব)

গত কয়েকদিনে এনসিআর এলাকা সিল করে দেওয়া হয়েছে, রোগ নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনায়। স্বাস্থ্য মন্ত্রক কিছুদিন আগে বিদেশ থেকে আগতদের জন্য যে ব্যবস্থা নিয়েছিল, এটি তারই নয়া সংস্করণ।

Advertisment

এই নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনার অবয়ব ঠিক কেমন?

এই পরিকল্পনা রোগ ছড়ানোর পর্যায়ের উপর ভিত্তি করে কৌশলগত পদক্ষেপের রূপরেখা। পাঁচটি পর্যায় চিহ্নিত করা হয়েছে, ভ্রমণজনিত যে সব ঘটনা ভারতে রিপোর্ট করা হয়েছে, স্থানীয় সংক্রমণ, নিয়ন্ত্র্ণের উপর নির্ভর করে যে সব সংক্রমণ আটকানো সম্ভব, ব্যাপকতর গোষ্ঠী সংক্রমণ, কোভিড ১৯ অতিমারীর শিকার ভারত।

উপসর্গহীনদের থেকে কীভাবে করোনা সংক্রমণ ছড়াতে পারে?

আধিকারিকরা জানাচ্ছেন এসব বিষয়ে যখন ছবি আরও স্পষ্ট হবে, তার উপর নির্ভর করে এই পরিকল্পনা প্রয়োজনে বদলানো যেতে পারে।

বিভিন্ন পর্য়ায়ের জন্য কী ধরনের পদক্ষেপের কথা সুপারিশ করা হয়েছে?

স্থানীয় সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ নির্ভর করবে ব্যাপকতর সংস্রব চিহ্নিতকরণ এবং নিয়ন্ত্রিক এলাকায় এ ব্যাপারে খোঁজ খবরের উপর, যেখানে সংস্রবের ঝুঁকি বেশি, সেখানে সমস্ত সন্দেহপ্রবণ ঘটনার টেস্ট এবং সমস্ত নিশ্চিত সংক্রমতিদের আইসোলেট করা, সংস্রবে যাঁরা এসেছেন- তাঁদের কোয়ারান্টিনে রাখা এবং সামাজিক দূরত্ব।

রোগের ব্যাপকতর প্রাদুর্ভাবের সময়ে সাধারণ পদক্ষেপের সঙ্গে সঙ্গে নির্দিষ্ট ভৌগোলিক এলাকায় বেশি নজর দিতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার হাসপাতালগুলিকে আরও বেশি রোগীর জন্য প্রস্তুত রাখতে হবে।

কোভিড ১৯ সংক্রমণ ও মৃত্যুর জাতীয় হিসাব ও বিশ্লেষণ

মার্চের গোড়ায় আগ্রায় এই পদক্ষেপ করা হয়েছিল, এলাকা ঘিরে ফেলা হয়েছিল, লোহামান্ডি এলাকায় ব্যাপকভাবে সংস্রব চিহ্নিতকরণের কাজ চলছিল এবং এস এন হাসপাতালকে কেন্দ্র করে নজরদারি টিম তৈরি হয়েছিল এবং সেখানে প্রয়োজনে সন্দেহপ্রবণ ব্যক্তিদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।

এরই সঙ্গে উপসর্গবিহীন সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন দেওয়া হয়েছিল প্রতিষেধক হিসেবে।

যে পরিকল্পনার নথি তৈরি হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, কোভিড ১৯-এর ভৌগোলিকভাবে ছড়ানোর ক্ষেত্র H1N1 ইনফ্লুয়েঞ্জা অতিমারীর মতই। অর্থাৎ আমাদের জনসাধারণের মধ্যে এর ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা যেমন খুবই বেশি, তেমনই দেশের সর্বত্র একইভাবে রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা খুবই কম। ফলে এক এক জায়গার জন্য এক এক ধরনের নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনা নিতে হবে, হটস্পটগুলিতে ব্যাপক নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে হবে।

করোনাভাইরাস- মৃত্যুহারই যখন প্রশ্নের মুখে

নিশ্চিত ও সন্দেহভাজনদের ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত?

পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, সমস্ত সম্ভাব্য ও নিশ্চিত কোভিড ১৯ সংক্রমিতদের কোভিড ১৯ হাসপাতাল বা হাসপাতাল ব্লকে রাখতে হবে, যতদিন না তাঁদের দুটি স্যাম্পলই নেগেটিভ আসে। এঁদের মধ্যে ১৫ শতাংশের হাসপাতালে রাখা প্রয়োজন এবং ৫ শতাংশের ভেন্টিলেটর প্রয়োজন।

হাসপাতালের উপর চাপ কমাতে কোভিড ১৯ হাসপাতালের কাছে অবস্থিত হোটেল, হস্টেল, গেস্টহাউস, স্টেডিয়ামকে  কেয়ার সেন্টার হিসেবে গড়ে তুলে স্বল্প সংক্রমিতদের সেখানে রাখা যেতে পারে।

মৌলিক স্বাস্থ্যের গুরুত্বের ব্যাপারে চোখ খুলে দিতে পারে এই মহামারী”

মাঝারি থেকে প্রবল অসুস্থ, যাঁদের নিউমোনিয়ার রেডিওলজিকাল প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে, তাঁদের কোভিড হাসপাতালে রাখতে হবে।

শ্বাসযন্ত্র বা অন্য সাহায্যের জন্য সরকারি বা বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রের তৃতীয় পর্যায়ের কেন্দ্রগুলিকে মাইক্রো প্ল্যানের অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।

তাহলে কি প্রাবল্যের উপরেই ব্যবস্থাগ্রহণ নির্ভর করবে?

হ্যাঁ। স্বাস্থ্যমন্ত্রক তাদের জারি করা নির্দেশিকায় নির্দিষ্ট ব্যবস্থাকেন্দ্রগুলিকে তিন ভাগে ভাগ করেছে। কোভিড কেয়ার সেন্টার, কোভিড হেলথ সেন্টার এবং কোভিডের জন্য নির্দিষ্টীকৃত হাসপাতাল।

কেয়ার সেন্টারগুলি মৃদু বা অতিমৃদু সংক্রমিতদের জন্য, বা সন্দেহভাজন রোগীদের জন্য। হেলথ সেন্টারে মধ্যমাত্রার রোগী বলে চিহ্নিতদের হাসপাতাল বলে ধরা হবে।

প্রবল সংক্রমণে যাঁরা ভুগছেন প্রথমত তাঁদের জন্যই এই নির্দিষ্ট হাসপাতাল।

কোভিড কেয়ার সেন্টার হবে অস্থায়ী। এগুলি সরকারি বা বেসরকারি হস্টেল, হোটেল, স্কুল, স্টেডিয়াম, লজ ইত্যাদি জায়গায় তৈরি করা যেতে পারে। কোভিড হেলথ সেন্টার হয় পূর্ণ হাসপাতাল হতে হবে বা কোনও একটি হাসপাতালের নির্দিষ্ট একটি ব্লক হতে পারে, যেখানে আলাদা প্রবেশ ও বাহির পথ থাকলে ভাল। সেখানে সম্ভাব্য ও নিশ্চিত সংক্রমিতদের আলাদা রাখতে হবে। কোনও ভাবেই সম্ভাব্য ও নিশ্চিতদের একসঙ্গে রাখা যাবে না।

চিকিৎসার রূপরেখা কী?

এই নথিতে আইসিএমআরের বিভিন্ন অ্যাডভাইজরি সমাহার করা হয়েছে, এবং জোর দিয়ে বলা হয়েছে, কোভিড ১৯-এক কোনও নির্দিষ্ট ওষুধ বা ভ্যাকসিন নেই।

তবে উপসর্গবিহীন যে সব স্বাস্থ্যকর্মীরা কোভিড ১৯ রোগীদের দেখভাল করছেন তাঁদের, এবং নিশ্চিত সংক্রমিতদের সংস্পর্শে এসে যাঁরা উপসর্গবিহীন, তাঁদের হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন দেবার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া যাঁরা প্রবলভাবে কোভিড ১৯ আক্রান্ত, তাঁদের চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ও অ্যাজিথ্রোমাইসিন দেওয়া যেতে পারে।

এখানে কি স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যাপারে কিছু বলা হয়েছে?

সারা দেশে চিকিৎসাকর্মীদের মধ্যে পিপিই-র অভাবে যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, তার মধ্যে দাঁড়িয়ে পর্যাপ্ত পিপিই-র কথা এই পরিকল্পনায় ফের বলা হয়েছে। নথিতে দিনে অন্তত দুবার মেঝে মোছা এবং ড্যাম্প ক্লিনিংয়ের উল্লেখও করা হয়েছে। এর জন্য লাইজল বা ফিনাইলজাতীয় বস্তু ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

coronavirus
Advertisment