Advertisment

কোভিড ১৯ রোগীর মৃতদেহ দাহ বা গোর দেওয়া কি নিরাপদ?

যাঁরা কবর দিতে চাইবেন, তাঁদের সে অনুমতি দেওয়া যেতে পারে যদি গোরস্থান আকারে বড় হয়, এবং সংক্রমণের ঝুঁকি না থাকে, একমাত্র সেক্ষেত্রেই। তবে সার্কুলারে গোরস্থানের নির্দিষ্ট মাপের কথা উল্লেখ করা হয়নি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

গুজরাটে গোর দেওয়া হচ্ছে কোভিড ১৯ মৃতদেহ (ছবি- জাভেদ রাজা)

গত সপ্তাহে মুম্বইয়ের বৃহন্মুম্বাই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন একটি সার্কুলার জারি করে জানায়, সমস্ত কোভিড ১৯ ম়তদের দেহ কোনও আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া নিকটবর্তী শ্মশানে দাহ করতে হবে। পরে এই সার্কুলার সংশোধন করে বলা হয়, বড় কোনও গোরস্থানে মৃতদেহ সমাধিস্থও করা যেতে পারে।

Advertisment

কেন এই নির্দেশ?

১৮৮৭ সালের মহামারী আইন অনুসারে মুম্বইয়ের মিউনিসপ্যাল কমিশনার কোভিড ১৯ আটকানোর জন্য নির্দেশ দেবার অধিকারী। কমিশনার জানিয়েছেন, এক স্থানীয় নেতা গোরস্থানগুলি অতি ঘন বসতিপূর্ণ হবার দরুন সেখান থেকে সংক্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে বলেই এই নোটিস। এ ঘটনা সংশোধনী জারির আগেকার।

৮৫ বছর বয়সী এক জেনারেল সার্জন হিন্দুজা হাসপাতালে মারা যান, তার আগে তাঁর কোভিড ১৯ সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। ২৭ মার্চ হাসপাতাল থেকে মৃতদেহ ছাড়া পাবার পর তাঁর আত্মীয়রা মিউনিসিপ্যালিটির কর্মীদের ছাড়াই মৃতদেহ সমাধিস্থ করে দেন। এর পরই বিএমসি প্রয়োজনীয় প্রতিষেধক নেওয়া হয়েছে কিনা এ ব্যাপারে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে।

এখনকার সুপারিশ কী?

বিএমসি-র প্রস্তাব বৈদ্যুতিক বা প্রাকৃতিক গ্যাসের পাইপলাইন ব্যবহার করে মৃতদেহ দাহ করা হোক। সার্কুলারে বলা হয়েছে মৃতদেহ প্লাস্টিকে মুড়ে রাখতে হবে, যদিও তাতেও সংক্রমণের আশঙ্কা চলে য়ায় না, কারণ প্লাস্টিকের মধ্যে মৃতদেহে পচন ধরতে দেরি হয়। বলা হয়েছে অন্ত্যেষ্টির সময়ে পাঁচজনের বেশি জড়ো হতে পারবেন না।

মৃতদেহ গোর দেওয়াই যাঁদের ঐতিহ্য, তাঁদের কী হবে?

সার্কুলারে একটি ব্যতিক্রমের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যাঁরা কবর দিতে চাইবেন, তাঁদের সে অনুমতি দেওয়া যেতে পারে যদি গোরস্থান আকারে বড় হয়, এবং সংক্রমণের ঝুঁকি না থাকে, একমাত্র সেক্ষেত্রেই। তবে সার্কুলারে গোরস্থানের নির্দিষ্ট মাপের কথা উল্লেখ করা হয়নি।

সার্কুলার যেদিন প্রকাশিত হয়, সেদিনই মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ টোপি জানিয়েছিলেন সব রাজ্যকেই মৃতদেহ সম্পর্কে কেন্দ্রীয় সরকারের গাইডলাইন মানতে হবে।

কেন্দ্রীয় নির্দেশিকা কী বলছে?

মন্ত্রকের নির্দেশিকা বলছে, কোভিড ১৯ সংক্রমণের মূল চালিকা হল  ড্রপলেট। যাঁরা সাধারণ প্রতিষেধক মেনে চললে, মৃতদেহ থেকে কোভিড ১৯ সংক্রমণের বাড়তি কোনও আশঙ্কা স্বাস্থ্যকর্মী বা পরিবারের লোকদের নেই।

মন্ত্রকের তরফ থেকে স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য পাঁচটি মূল প্রতিষেধকের কথা বলা হয়েছে- হাতের স্বাস্থ্য, দস্তানা, মাস্ক সহ ব্যক্তিগত সুরক্ষার উপকরণ ব্যবহার, শাণিত কোনও কিছুর সাবধানী ব্যবহার, মৃতদেহ জীবাণুরহিত ব্যাগে রাখা এবং তা ঢাকা দেবার চাদর ইত্যাদি জীবাণুমুক্ত করা।মর্গে, অ্যাম্বুল্যান্সে, শ্মশানে বা গোরস্থানে যাঁরা থাকবেন, তাঁদের সংক্রমণ প্রতিরোধের প্রশিক্ষণ থাকতে হবে।

মৃতদেহ লিকপ্রুফ প্লাস্টিকের বডি ব্যাগে ভরতে হবে এবং ওই ব্যাগের বহির্ভাগ ১ শতাংশ সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট দিয়ে বীজাণুমুক্ত করতে হবে।

গোর দেওয়া হলে কি সংক্রমণের আশঙ্কা থাকতে পারে?

এইচআইভি ও সার্স কোভ ২-এর মত মাইক্রোব সংক্রমিত মৃতদেহ বায়োসেফটি লেভেল ২ ও ৩-এর আওতায় আসে। মৃতদেহ সিল করা থাকলে গোর দেওয়া নিরাপদ বলেই গণ্য।

মৃতদেহ দাহ করা হলে ছাই থেকে কোনও ঝুঁকি নেই। সমস্ত নিয়ম মেনে চলা হলে গোর দেওয়া বা দাহ করায় কোনও ঝুঁকি নেই। সম্ভাব্য সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে বেশি লোকজন জড়ো না হওয়াই ভাল।

কত দ্রুত দাহ বা সমাধির কাজ সেরে ফেলা উচিত?

মুম্বইয়ের কেইএম হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডক্টর হরিশ পাঠক বলেন, দ্রুত এ কাজ সেরে ফেলাই ভাল।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

coronavirus
Advertisment