বড়সড় মুক্তি স্থগিত হয়ে গিয়েছে, সিনেমা, টিভি, ওয়েব সিরিজের শুটিং বন্ধ, হলে সিনেমা দেখানো হচ্ছে না, প্রতিদিনের দুমুঠো খাবারের জন্য কষ্ট করতে হচ্ছে দৈনিক রোজগারের কর্মীদের, ১৮৩ বিলিয়ন ডলারের ভারতীয় ফিল্ম ইন্ডস্ট্রি লকডাউনের জেরে বিধ্বস্ত। লকডাউনের প্রভাব কতদূর হবে, তা এখনও হিসেব কষা বাকি, তবে গত একমাসে প্রযোজনা ও সংলগ্ন বিষয়ে কতটা প্রভাব পড়েছে একবার দেখে নেওয়া যেতেই পারে।
ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কোভিডের প্রথম প্রভাব পড়েছিল রিলায়েন্স এন্টারটেনমেন্ট সংস্থার রোহিত শেট্টির ছবি সূর্যবংশী ১২ মার্চ অনির্দিষ্টকালের জন্য মুক্তি ঘোষণায়। এ ছবির মুখ্য ভূমিকায় অক্ষয় কুমার ও ক্যাটরিনা কাইফ। মুক্তির কথা ছিল ২৪ মার্চ।
একই রাস্তায় হাঁটে স্যার, সন্দীপ আউর পিংকি ফারার, হাতি মেরে সাথী, এবং ৮৩টি ছবি। বাগী ৩ দ্বিতীয় সপ্তাহে খুব সামান্য দর্শক পেয়েছিল এবং ইরফান খানের আংরেজি মিডিয়ম হল থেকে সরিয়ে নিতে হয়। তবে এ ছবি ডিজনি হটস্টারে মুক্তি পেয়েছে। আঞ্চলিক ভাষার বেশ কিছু বড় ছবিরও মুক্তি পিছিয়ে দিতে হয়েছে।
কোভিড ১৯-এর প্রভাব প্রথমবার অনুভূত হয় যখন ফেডারেশন অফ ওয়েস্টার্ন ইন্ডিয়ান সিনে এমপ্লয়িজ (FWICE) এবং ইন্ডিয়ান ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ডিরেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন (IFTDA)সমস্ত ফিল্ম, টিভি শো এবং ওয়েব সিরিজের শুটিং বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। বালাজি মোশন পিকচার্স, ধর্মা প্রোডাকশান এবং যশরাজ ফিল্মসের মত বড় প্রযোজনা সংস্থাগুলিও দ্রুত তাদের প্রযোজনার কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। বিভিন্ন রাজ্যে সিনেমা হল বন্ধ করার নির্দেশ দিতে থাকে সরকার। ২১ মার্চ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণার পর সব প্রকল্পই বন্ধ হয়ে যায়।
রণবীর কাপুর-আলিয়া ভাটের ব্রহ্মাস্ত্র নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা ছিল। বেশ কয়েকবার বিলম্বের পর, স্থির হয়েছিল ২০২০-র ৪ জিসেম্বর এ ছবি মুক্তি পাবে। সে এখন বিশ বাঁও জলের তলায়। শহিদ কাপুরের জার্সি, ওই নামেরই তেলুগু সিনেমার রিমেকের শুটিং স্থগিত রাখা হয়।
যেসব ছবি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে সঞ্জয় লীলা বনশলির গাঙ্গুবাই কাঠিয়াওয়াড়ি। ছবির একটি চরিত্রে রয়েছেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী সীমা পাহওয়া। তিনি বললেন, “আমি বুঝতে পারছি না কী করে এথন প্রোডাকশন হবে। ফিল্ম সিটিতে সেট তৈরি করা রয়েছে, এদিকে জুনে বৃষ্টি শুরু হবে। আমি বাড়িতে বসে রয়েছি, এ সময়ে আমার আরেকটা সিনেমা আর ওয়েব সিরিজে শুটিং করার কথা। ডিসেম্বর পর্যন্ত যাদের কথা দিয়ে রেখেছি, তার সবই দেরি হচ্ছে। গোটা শিডিউল ওলোটপালোট হয়ে গেছে, আমরা নতুন কোনও কাজে সইও করতে পারছি না।”
মুক্তি পিছোনোয় ক্ষতি
জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে তনহাজি, ছপক, স্ট্রিট ড্যান্সার ৩ডি, পাঙ্গা, মালাং, ভূত এবং শুভ মঙ্গল জাদা সাবধানের মুক্তির পর মার্চ-এপ্রিল সরিয়ে রাখা ছিল সূর্যবংশী ও রণবীর সিংয়ের স্পোর্টস ড্রামা ৮৩-র জন্য। এখন মনে হচ্ছে সলমন খানের ঈদের মুক্তি রাধে এবং অক্ষয় কুমারের দিওয়ালির মুক্তি পৃথ্বীরাজও ক্ষতির মুখে পড়বে। করণ জোহরের বহু প্রতীক্ষিত পিরিয়ড ড্রামা তখত আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ফ্লোরে আসার কথা ছিল। এখন মনে হচ্ছে সে ম্যাগনাম ওপাসেরও ভবিষ্যৎ খুব উজ্জ্বল নয়।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা বিনোদন শিল্পে এই লকডাউনের জেরে কয়েক হাজার কোটি টাকার ধাক্কার মুখে পড়বে। বাণিজ্য বিশ্লেষক গিরীশ জোহরের কথায়, “আমাদের ইতিহাসে এই প্রথম বার বক্স অফিসের পরিমাণ শূন্য। এর আগে স্থানীয়স্তরে ধর্মঘট বা বনধ হয়েছে কিন্তু সারা ভারতে এমন হয়নি। আমার আশঙ্কা এই ত্রৈমাসিক শূন্য হবে এবং সেটা বিশাল ব্যপার। মুক্তির তারিখ ২০২১ পর্যন্ত পিছোবে।”
ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের এক রিপোর্ট অনুসারে ২০২০ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকে ২৯.১ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে গত বছর এই সময়কালের তুলনায়।
থাপ্পড় ছবির সাফল্যের দিকে যিনি তাকিয়েছিলেন সেই অভিনেত্রী তাপসী পান্নু বললেন “আমার মনে হয় সমস্ত ব্যবসাই আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে, তার মধ্যে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিও রয়েছে।” মনমর্জিয়া, ছপক, থাপ্পড়, নেটফ্লিক্সের হোয়াইট টাইগারের মত প্রজেক্টে কাজ করেছেন স্টিল ফোটোগ্রাফার তেজিন্দর সিং। তিনি ব্যাখ্যা করলেন, “এ এমন একটা কাজ যেখানে খুব কাছাকাছি থাকতে হয়। লাইটম্যান, ইলেক্ট্রিশিয়ান, সাউন্ডম্যান, কস্টিউম অনেকের হাত ঘুরে অভিনেতার কাছে পৌঁছয়। কত লোক মিলে খাবার ব্যবস্থা করে, স্পট বয়রা জল এনে দেয়, এবং গোটা ব্যাপারটা অপরিচ্ছন্নও। এরপর ভ্রমণের ব্যাপারও রয়েছে। এখন দেখার বিষয় কোন ছবির প্রোডাকশন শুরু হয়, কবে শুরু হয়। বাইরে যাবার ব্যাপার যত দেরিতে হয়, তত ভাল। আমার মনে হয় না অগাস্টের আগে কিছু ঘটবে।”
সিনেমা হলের ব্যবসায়ে প্রভাব
আকুইটে রেটিংস অ্যান্ড রিসার্চের তরফ থেকে সুমন চৌধুরী ইকুয়িটিবুলসকে জানিয়েছেন, তাঁরা পরবর্তী ত্রৈমাসিকে মাল্টিপ্লেক্সে দর্শকসংখ্যা ৫০ শতাংশ কমার আশঙ্কা করছেন, বিশেষ করে মেট্রো ও টায়ার ২ শহরে। তিনি মনে করছেন বেশ কিছু ছবির মুক্তি পিছোবে এবং পিভিআর ও আইনক্সের মত তালিকাভুক্ত মাল্টিপ্লেক্সের আয় কমবে।
টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতে প্রভাব
চ্যানেলগুলি তাদের ব্যাঙ্কিং করা এপিসোড দেথিয়ে ফেলেছে, সব মিলিয়ে এই আইসোলেশন পর্যায়ে দর্শকসংখ্যা ৬০ শতাংশ বেড়েছে বলে জানিয়েছে গবেষক সংস্থা নিয়েলসেন।
রামায়ণ, মহাভারত, ব্যোমকেশ বক্সীর মত আইকনিক শোগুলি ফের প্রদর্শনের সিদ্ধান্তে ব্যাপক সাড়া পড়ায় অন্য চ্যানেলও সিআইডি, হাম পাঁচের মত জনপ্রিয় শো ফের দেখানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এক সপ্তাহে দূরদর্শনের সংখ্যায় ৬৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পয়েছে এবং পরপর দু সপ্তাহ ধরে সবথেকে বেশি মানুষ এই চ্যানেল দেথেছেন। বার্কের রিপোর্ট অনুসারে ১৪ তম সপ্তাহে জিইসি চ্যানেলের ১.৯ বিলিয়ন দর্শকের নিজেদের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে দূরদর্শন। অভিনেত্রী রেণুকা সাহানে এর কারণ হিসেবে বলেছেন, “অনেক শো আমাদের মনে বহু বছর পরেও মনে রয়ে যায়।” টিভি অভিনেতা বরুণ বাদোলার মেরে ড্যাড কি দুলহনের প্রোডাকশনের কাজ বন্ধ। তিনি বললেন, “এর দর্শকদের অনেকেই প্রথমবার এয়ার হওয়ার সময়েও এই শোগুলো দেখেছিলেন।”
বিনোদন শিল্পে জড়িত দিনমজুররা
সম্ভবত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির দৈনন্দিন ভাতায় কাজ করা কর্মীরা। ৩০ বছর ধরে স্পট বয়ের কাজ করছেন রাকেশ দুবে। তিনি জানালেন ১৫ দিন কাজ পেলে মাসে ২০ হাজার টাকা পাওয়া যায়। “এখন লকডাউনে আমরা বাড়িতে আটকে রয়েছি। আমি জানি না কীভাবে আমাদের চলবে। আমার তিনটি সন্তান ও স্ত্রী রয়েছে। যেটুকু জমানো টাকা ছিল, খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে আসছে।”
বাদোলার মতে দৈনিক রোজগারের কর্মীরা ব্যাপক সমস্যার মুখে পড়বেন দ্রুত কাজ না শুরু হলে। “কিন্তু এ অবস্থায় লোককে সেটে আসতে বলা যাবে কী করে? আমরা যে পরিবেশে কাজ করি তাতে ব্যাপক বদল আনতে হবে। অন্য দেশের দিকে দেখুন, একটা নির্দিষ্ট ব্যবস্থার প্রয়োজন রয়েছে, আমাদের মত দিন আনি দিন খাই টিভি ব্যবসা নয় সেখানে।”
সম্প্রতি সিনে অ্যান্ড টিভি আর্টিস্টস অ্যাসোসিয়েশন (CINTAA) বলিউডের প্রথম সারির ব্যক্তিত্বদের কাছে অনুদান ও দৈনিক রোজগেরেদের সাহায্যে এগিয়ে আসতে আবেদন করেছে। সলমন খান, বিদ্যা বালান, হৃতিক রোশনরা এগিয়ে এসেছেন, অর্থ সাহায্য করেছেন এবং রেশনের বন্দোবস্ত করেছেন। কিন্তু প্রশ্ন হল প্রযোজকরা অভিনেতা ও কলাকুশলীদের জন্য কতটা নিরাপদ কাজের পরিবেশের বন্দোবস্ত করতে রাজি হবেন।
বিশ্লেষক গিরীশ জোহর বলেছেন এটা একটা বিশাল কর্মকাণ্ড। “ফিল্ম শেষ করতে হবে এবং একবার কাজে ফিরলে নতুন সেফটি গাইডলাইন মান্য করে চলতে হবে। সেটে ১০০ থেকে ২০০ জন কাজ করেন। এটা একটা শ্রমনিবিড় শিল্প, ফলে স্বাস্থ্যের ব্যাপারে নিশ্চয়তা লাগবেই।”
অন্য ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে প্রভাব
আঞ্চলিক ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির ক্ষতির পরিমাণ এখনও হিসেব করতে শুরু করা হয়নি। কিন্তু সকলেই জানেন সংখ্যাটা বিপুল এবং এর প্রভাব অন্তত এক বছর ধরে চলবে।
চলচ্চিত্র নির্মাতা ও পরিবেশক মধুরা শ্রীধর রেড্ডি বলেন, তেলুগু ছবিতে এ বছরের গ্রীষ্মে ৪০০ কোটি টাকা তোলার কথা আশা করা হয়েছিল। “এখন সমস্ত হিসেব গুলিয়ে গেছে। লকডাউনের পর বড় বাজেটের ফিল্ম রিলিজের আগেই ধরে নেওয়া হচ্ছে ২৫ শতাংশ ক্ষতি হবে। এবং ছোট বাজেটের ছবি বেশ কিছুদিনের মধ্যে হলে মুক্তিই পাবে না।”
উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উনের সম্ভাব্য উত্তরাধিকারী কারা?
তেলুগু প্রযোজক এসকেএন জানিয়েছেন লকডাউনের ফলে ১০০০ আসনের হলে মাসে ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতি হচ্ছে। এবং স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম কার্যকরী বিকল্প কিনা সে ব্যাপারেও তিনি অনিশ্চিত। তিনি বলেন, “আমি জানি না হলে মুক্তি পাওয়ার আগে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ছবি কিনবে কিনা, কারণ আমরা জানি না যে ছবি চলবে কি চলবে না। ওটিটি সাধারণভাবে চালু ছবিই কেনে।”
চেন্নাইয়েও পরিস্থিতি একই রকম। তামিল ছবির পরিবেশক তিরুপুর সুব্রহ্মণিয়ম বলেন তাঁদের আশঙ্কা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি সব শেষে খুলবে। “আমরা আমাদের কর্মীদের পুরো বেতন দিচ্ছি, হল সাফ রাখছি। আমার আশঙ্কা, তামিল ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি লকডাউনের পর আর আগের মত থাকবে না।”
ওটিটি-র সাফল্য
লকডাউনের সুবিধে যদি কেউ পেয়ে থাকে, তাহলে তা হল নেটফ্লিক্স ও আমাজন প্রাইম ভিডিওর মত ওটিটি স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম।
বাড়তি চাহিদা মেটাতে আমাজন প্রাইম ভিডিও এবং নেটফ্লিক্স ব্যান্ডউইদের উপর চাপ কমাতে এইচডি থেকে তাদের এসডি-তে নামিয়ে এনেছে। ডিজনি হটস্টারের নতুন লঞ্চের ফলে উপভোক্তাদের সামনে অঢেল সুযোগ। স্পেশাল অপস, পঞ্চায়েত, মরজি, ফোর মোর শটস প্লিজ সিজন ২, এবং হাসমুখকে দর্শকরা সাদরে গ্রহণ করেছেন। পাহওয়া মনে করছেন ওটিটি লকডাউনের পরেও মানুষের কাছে আকর্ষণীয় থেকে যাবে। তাঁর মতে বাড়িতে থেকে কনটেন্ট দেখতে মানুষ অভ্যস্ত হয়ে পড়বেন। তিনি এমনকি কম বাজেটের ছবি এখানেই মুক্তির কথাও বলছেন। তিনি বলেন, “যদিও আমার মনে হয় না এখানে খুব লাভ হবে, তবুও, আমরা যদি প্রোডাকশন কস্টটা তুলে আনতে পারি, তাহলে তা কম নয়।”
লকডাউনের সময়ে যেসব বড় ছবি মুক্তি পেল না সেগুলির কী হবে?
থাপ্পড়ের পরিচালক অনুভব সিনহার কথায়, ছবির মুক্তি ধাপে ধাপে হবে, সীমিত শো বা সীমিত টিকিট বিক্রির মত। ফলে বড় ছবির ক্ষেত্রে শুরুতে সমস্যা হবেই।
উরি পরিচালক আদিত্য ধর এখন পরের ছবি ইমমর্টাল অশ্বত্থামা লিখছেন। তিনি বলছেন, “দর্শকরা বাড়ি বসে ডিজিটাল কনটেন্টে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছেন। আমাদের এমন কিছু দারুণ দিতে হবে যা শুধু হলে গিয়ে দেখা যায়।” ছোট ফিল্ম এখন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মেই দেখানো হবে বলে মনে করেন তিনি।
৪৭ বছর আগের এক রায় ধরে রেখেছে সংবিধানের মৌলিক কাঠামো
গিরীশ জোহরের কথায়, “ভারতের বিনোদনবাজার খুবই ঐতিহ্যনির্ভর। ফলে আমাদের কাছে সিনেমা হলে রিলিজ এবং বক্স অফিসের মান্যতাপ্রাপ্তি খুব বড় ব্যাপার যা ওটিটিতে পাওয়া যায় না।”
ওটিটি খুব দামি ছবি কিনতে পারবে বলেও মনে করেন না তিনি। “ওরা পাঁচ কোটির ছবি কিনতে পারে। ১০০ কোটির ছবি কিনে টাকা তুলবে কী করে?”
তাহলে বড় ছবির এখনও বড় হলে মুক্তি প্রয়োজন। ভারতে বক্স অফিসের বড় শেয়ার আসে দশটি বড় শহর ও ৬টি মেট্রো সিটি থেকে, যার মধ্যে রয়েছে দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই ও আরও কয়েকটি শহর যার মধ্যে কয়েকটি বর্তমান হটস্পট তালিকাতেও রয়েছে। এখন প্রশ্ন হল লকডাউন শেষ হবার পর এই হলগুলিও খোলে কিনা। “ভয় কাটলে ফের লোকজন হলে যেতে শুরু করবেন, চাহিদা বাড়বে, তবে তাতে সময় লাগবে” বলে মনে করেন জোহর।
কলাকুশলীরা কী ধরনের সুবিধা প্রত্যাশা করছেন?
তাপসী পান্নু শাবাশ মিঠু, রশমি রকেট এবং লুপ লপেতার মত ছবিতে কাজ শুরু করছিলেন। তিনি বলেন “সকলকেই ব্যাপারটা মসৃণ করার দিকে হাত বাড়াতে হবে। কিছুদিনের জন্য সেটে কম লোক থাকবে এবং সেটে স্বাস্থ্যে ব্যাপারে নজরদারি বাড়ানো হবে।”
ফোটোগ্রাফার তাজিন্দর সিংয়ের মতে “সমস্ত প্রোডাকশন হাউসের এ ব্যাপারে উপদেষ্টা রাখার একটা নিয়ম তৈরি করা যেতে পারে।”
নির্মাতারা কি বদল আনছেন ?
অতিমারীর কারণে লকডাউনে রুপোলি রেখা দেখতে পাচ্ছেন আদিত্য ধর। আমরা আশা করছি কিছু সংশোধন হবে, সেটা শুধু কনটেন্টে নয়, ছবির অর্থনীতিতেও। যেমন “এ তালিকার শিল্পীরা কিছু কম অর্থ নেবেন, কলাকুশলীরাও কিছুটা কম অর্থ নেবেন, যাতে ছবি তৈরি করার দিকে পুরো শক্তি ব্যয়িত হয়, ছবি থেকে অর্থ তৈরি নয়।”
তাঁর আশা “এর ফলে ছবির মান ভাল হবে, আমরা বিশ্বমানের ছবি রচনা করতে পারব।”
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন