বিভিন্ন দেশে বিধিনিষেধ শিথিল হতে শুরু করেছে এবং লকডাউনও উঠতে শুরু করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক বিভিন্ন বেসরকারি দফতরে ১০০ শতাংশ উপস্থিতির অনুমোদন দিয়ে দিলেও, যথাসম্ভব বাড়ি থেকে কাজের ব্যাপারে অনুরোধ করেছে। শুধু ভারতই নয়, বিভিন্ন দেশ কর্মক্ষেত্রে নতুন নিয়ম চালু করেছে। নিউজিল্যান্ডে যেমন, প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডেন বলেছেন, যাঁদের পক্ষে সম্ভব, তাঁরা যেন দেশের অর্থনীতির স্বার্থে চারদিনের সপ্তাহ অনুসারে কাজ শুরু করে দেন।
অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার অনলাইনে বিভিন্ন ওয়ার্কশপ ও প্রশিক্ষণ চালনার ব্যাপারে উৎসাহ দিচ্ছে, সহকর্মীদের দু'মিটার দূরে সিটে বসতে বলেছে এবং সকলের কাছে অনুরোধ করেছে, নিয়মিত বিভিন্ন জায়গা জীবাণুনাশক দিয়ে সাফ করতে ও করমর্দন না করতে। এ ছাড়া কর্মীদের আন্তর্জাতিক ও অন্তর্দেশিয় বিজনেস ট্রিপের বদলে যতদূর সম্ভব ভিডিও ও ফোন কলের উপর নির্ভর করতে বলেছে।
নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ কোরিয়া, এই দুই দেশ করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সক্ষম দেশগুলির অন্যতম। কর্মীদের জন্য এই দুই দেশের গাইডলাইন অন্যদের কাছে শিক্ষণীয় হতে পারে।
আরও পড়ুন: পরিযায়ী নিয়ে মাথাব্যথা, বিহার উঠে এল সংক্রমণের শীর্ষ দশে
কিছু বেসরকারি সংস্থাও অতিমারীর জেরে তাদের কর্ম সংস্কৃতি বদলাতে শুরু করেছে। টেক জায়েন্ট টুইটার যেমন প্রথম আন্তর্জাতিক সংস্থা হিসেবে কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ অনুমোদন করেছে। ১২ মে এক ব্লগ পোস্টে টুইটারের পিপল টিম লিডার জেনিফার ক্রিস্টি বলেছেন, অতি সামান্য ব্যতিক্রম ছাড়া কোনও অফিস সেপ্টেম্বরের আগে খুলবে না এবং ২০২০-র শেষ দিকের আগে সংস্থার কোনও ইভেন্টও হবে না। পরে সিইও জ্যাক ডরসে বলেন, তিনি সংস্থার কর্মীদের স্থায়ী ভাবে বাড়ি থেকে কাজ করার সুযোগ দিচ্ছেন।
ফেসবুকের সিইও মার্ক জুকেরবার্গ বৃহস্পতিবার সংস্থার কর্মীদের সঙ্গে লাইভ স্ট্রিমিংয়ে এক বৈঠকে বলেন, সংস্থার অনেক কর্মচারীকেই স্থায়ীভাবে বাড়ি থেকে কাজের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন. আগামী দশকে ফেসবুকের ৪৫ হাজার কর্মী বাড়ি থেকে কাজের সুযোগ পাবেন।
আরও পড়ুন: সোমবার বা তার পর বিমানে চড়ছেন? কয়েকটা বিষয় যা জানা দরকার
মাইক্রোসফট সংস্থা তাদের কর্মীদের অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ি থেকে কাজের সুযোগ দিয়েছে, গুগল সে সুযোগ দিয়েছে এ বছরের শেষ পর্যন্ত।
কোভিড-১৯ কীভাবে কর্মসংস্কৃতির বদল ঘটাতে পারে
কোভিড-১৯ সময়ে তো বটেই, এমনকি অতিমারীর পরেও মানুষ কাজের পরিবেশের বদল চাইতে পারেন। একটি সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী মার্কিন কর্মীদের মধ্যে ৫৯ শতাংশ (৫ জনের মধ্যে ৩ জন) বলেছেন, তাঁরা পরবর্তীকালেও বাড়ি থেকে কাজ করতে চাইবেন। ৪১ শতাংশ বলেছেন, তাঁরা কাজের জায়গায় ফিরতে চান। ৬২ শতাংশ বলেছেন, তাঁরা অতিমারীর সময়েই বাড়ি থেকে কাজ করতে চান।
এ ছাড়া যেসব কর্পোরেট ক্যাম্পাসে ক্রিয়েটিভ ধরনের কাজের চাহিদা বেশি, যেমন ফেসবুক বা গুগল, সেখানে বিনামূল্যে খাবার, পিংপং টেবলের মত আয়োজনও করা হতে পারে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস।
দূর থেকে কাজ করার সুবিধা চালু হলে অনেক কর্মীই বড় শহর ছেড়ে চলে যাবেন, কারণ বড় শহরগুলি খরচসাপেক্ষ। উল্লেখযোগ্যভাবে, যে কোনও জায়গা থেকে কাজ করা শুরু হলে, বেতনও কমবে। যাঁরা দূরবর্তী শহর থেকে কাজ করবেন, তাঁদের জীবনধারণের খরচ কমায়, তাঁদের বেতনও কমতে পারে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন