গত সপ্তাহে ভারতের বেশ কিছু রাজ্যে কারাবন্দির সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে কমানো হয়েছে। কোভিড ১৯- এর প্রতিরোধক পদ্ধতি হিসেবে আপৎকালীন প্যারোলে এবং বিচারাধীন বন্দিদের একাংশকে জামিনে ছাড়া হয়েছে।
সারা বিশ্বেই নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে কারাবন্দিদের ছেড়ে দেবার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। কারা কর্তৃপক্ষ জেলের মধ্যে সংক্রমণ আটাকাতে সমস্যার মুখে পড়ছেন।
জেলে দেখতে যাওয়া বন্ধ করা এবং অন্যান্য পরিষেবা বন্ধ হবার ফলে কয়েকটি দেশের জেলে ব্যাপক হাঙ্গামা হয়েছে। এ মাসে শুধু ইতালিতেই জেলে ২৫টি হাঙ্গামার ঘটনা ঘটেছে, যার জেরে বেশ কয়েকজনের প্রাণহানি ঘটেছে।
১৫ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপিয় দফতর একটি অন্তরবর্তী নির্দেশিকা জারি করে।
তাতে বলা হয়, কারাগার বা অন্যান্য জায়গায় যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে এক জায়গায় আটকে রয়েছেন, তাঁদের করোনাভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কা সাধারণ মানুষের চেয়ে বেশি।
ওই নির্দেশিকায় বলা হয়, কোনও সংক্রামক প্যাথোজেন য়খন কারাগারের মত জায়গায় ঢুকে পড়ে, তখন রোগ সংক্রমণের আশঙ্কা কয়েকগুণ বেড়ে যায়, ফলে মহামারীর উপর তার প্রভাবও বাড়ে, সংক্রমিত মানুষের সংখ্যাও বাড়তে থাকে।
কমিউনিটির মধ্যে সংক্রমণ আটকানোর কোভিড ১৯ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় যেসব পদ্ধতি গ্রহণ করতে হয়, সেগুলি কারাগারের মত জায়গায় সম্ভব নয়।
বেশ কিছু দেশে কারাগার ও অন্যান্য জায়গায় স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের। এমনকি কোনও কোনও ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য মন্ত্রক ও বিচার মন্ত্রক একযোগে এই দায়িত্বে থাকে। এরকম ক্ষেত্রে কারাবন্দিদের স্বাস্থ্যের তো বটেই, উভয় মন্ত্রকের দায়িত্ব থাকে বৃহত্তর কমিউনিটির মধ্যেও যেন রোগ না ছড়ায়।
কারাবন্দি ও অন্যান্য জায়গায় আটক রয়েছেন যাঁরা, তাঁদের স্বাধীনতা এমনিতেই ক্ষুণ্ণ, এরপর তাঁদের উপর আরও বিধিনিষেধ লাগু হলে তাঁর অন্যভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারেন।
নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, “কারাগারের মত জায়গায় স্বাধীনতা এমনিতেই ক্ষুণ্ণ। এখানে সকলে খুব কাছাকাছি থাকেন। এসব জায়গায় ড্রপলেটের মাধ্যমে কোভিড ১৯ ছড়াবার আশঙ্কা বেশি।”
জনবিন্যাসের চরিত্র অনুসারে জেলবন্দি মানুষদেররোগের আশঙ্কা এবং স্বাস্থ্য খারাপ হবার শঙ্কা সাধারণ মানুষের চেয়ে বেশি। ধকল, পুষ্টির অভাব, যক্ষ্মা এবং ড্রাগের নেশা জাতীয় কারণে তাঁদের ঝুঁকিও বেশি।”
২৬ মার্চ ব্রিটেনে ৮৪ বছরের এক জেলবন্দি করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ২৯ মার্চ আমেরিকার লুইজিয়ানায় জেলবন্দি একজনের করোনা সংক্রমণে মৃত্যু ঘটে।
আমেরিকা ও ব্রিটেনে সম্ভাব্য নিশ্চিত অপরাধীদের এক জায়গায় করা হচ্ছে বলে খবর।