Advertisment

মহামারী মোকাবিলায় এবার রাজ্যের হাতে অধিক দায়িত্ব

যেহেতু রাজ্যগুলির সহমতের ভিত্তিতে এখন থেকে আন্তঃরাজ্য পরিবহণও চালু হয়ে গেল, এবার এ নিয়ে রাজ্যগুলির মধ্যে সংঘাত পরিস্থিতি তৈরি হবে, কারণ কেউই নিজেদের উপর অতিমারীর চাপ বাড়াতে চাইবে না।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
lockdown 4.0 state

দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে এই চতুর্থ দফার লকডাউনে

১০ মে থেকে ১৭ মে পর্যন্ত এক সপ্তাহে ভারতে মোট ২৭৯৮৮ জনের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যা ৩ মে থেকে ১০ মে পর্যায়ের থেকে ২০ শতাংশ বা ২২,৯৫৯ বেশি। তার আগের সপ্তাহে (২৬ এপ্রিল থেকে ৩ মে) ১৩৪৮৪ জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। তখন লকডাউন ২.০ চলছিল।

Advertisment

এর থেকে আগামী দিনগুলির একটা সম্ভাব্য প্রবণতা দেখা যাচ্ছে যখন দেশ লকডাউন ৩.০ থেকে আরও শিথিল লকডাউন ৫.০-এ যাত্রা শুরু করেছে। কিন্তু এই সংখ্যা বৃদ্ধিকে টেস্টের পরিমাণের বিচারে দেখা উচিত। ২৬ এপ্রিলে যেখানে টেস্টের সংখ্যা ছিল প্রতিদিন ৪০ হাজার, ১৬ মে-তে সে সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে দৈনিক ৯৩ হাজারে। মোট পজিটিভের সংখ্যা এই পর্যায়ে ৪ শতাংশ থেকেছে। টেস্ট যত বেশি করা হবে, তত বেশি মানুষকে আইসোলেট ও চিকিৎসা করা যাবে।

এ সপ্তাহ থেকে টেস্ট করা, আইসোলেট করা, অনুসরণ করা এবং চিকিৎসা করা করতে হবে।

আপনাদের হয়ত মনে থাকবে যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গত ১২ মে-র জাতির উদ্দেশে ভাষণে এবং অর্থমন্ত্রীর পরপর সাংবাদিক সম্মেলনে অর্থনীতি ক্ষেত্রে মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি কোভিড উত্তর পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছে।এ থেকে বোঝা যাচ্ছিল কোভিড পরিস্থিিত নিয়ে কেন্দ্র সরাসরি নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে রাখতে চাইছিল না। এবারের গাইডলাইনে যেভাবে কনটেনমেন্ট গাইডলাইন তৈরি হয়েছে এবং জোন চিহ্নিতকরণের কথা বলা হয়েছে তাতে রাজ্যের হাতে বেশি দায়িত্ব দেওয়া হল।

প্রথম তিনদফার লকডাউন কঠোরভাবে নিজেদের হাতে রাখার পর কোভিড মোকাবিলায় এবার থেকে রাজ্যের হাতে নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দেওয়া হল। আগামী দিনগুলিতে রাজ্য ভিত্তিক গাইডলাইন রাজ্যগুলি নিজেরাই স্থির করবে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, বিধিনিষেধ নিয়ন্ত্রণের জন্য রাজ্যগুলি নিজেরাই রেড, অরেঞ্জ ও গ্রিন জোন স্থির করতে পারবে। যেহেতু রাজ্যগুলির সহমতের ভিত্তিতে এখন থেকে আন্তঃরাজ্য পরিবহণও চালু হয়ে গেল, এবার এ নিয়ে রাজ্যগুলির মধ্যে সংঘাত পরিস্থিতি তৈরি হবে, কারণ কেউই নিজেদের উপর অতিমারীর চাপ বাড়াতে চাইবে না।

আগের তিন দফার লকডাউন থেকে শিক্ষা নিয়ে রাজ্যগুলি এবার আরও অভিজ্ঞ হয়ে উঠে তাদের পারফরম্যান্স উন্নত করতে পারে, বিশেষ করে যেখানে পরিযায়ীরা যাতায়াত শুরু করার ফলে আরও বেশি সংক্রমিত সামনে আসবে, আরও বেশি অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জ দেখা যাবে।

ফলে এবার আমাদের নজর রাখতে হবে রাজ্যগুলি কীভাবে ক্লাস্টার চিহ্নিত করছে, গাইডলাইন লাগু করছে এবং অতিমারী রোধে কেন্দ্রীয় মোকাবিলার সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রেখে তিভাবে চিকিৎসার বন্দোবস্ত করছে।

মহারাষ্ট্র, গুজরাট, তামিলনাড়ু ও দিল্লি- এই চার রাজ্যের রোগের চিত্র একটা দিক দেখাচ্ছে। তবে অবশিষ্ট ভারতেও, যেখানে আন্তঃরাজ্য পরিযায়ীদের যাতায়াত বেড়েছে, সেখানে গত এক সপ্তাহে সামান্য হলেও সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। হটস্পট রাজ্যগুলি মহামারী রোধে কী ভূমিকা নেয়, এবার সে দিকেও তাকিয়ে থাকতে হবে।

এছাড়া ৩০টি পুর এলাকার দিকে অতিরিক্ত নজর রাখতে হবে, কারণ এ শহর এলাকায় দেশের মোট সংক্রমণের ৭৯ শতাংশ ঘটেছে। এগুলি হল, বৃহন্মুম্বই, গ্রেটার চেন্নাই, আমেদাবাদ, থানে, সমস্ত দিল্লি পুর এলাকা, ইন্দোর, পুনে, কলকাতা, জয়পুর, নাসিক, যোধপুর, আগ্রা, তিরুভাল্লার, ঔরঙ্গাবাদ, কাড্ডালোর, গ্রেটার হায়দরাবাদ, সুরাট, চেঙ্গালপাত্তু, আরিয়ালুর, হাওড়াস কুর্নুল, ভোপাল, অমৃতসর, ভিল্লুপুরম, ভদোদরা, উদয়পুর, পালঘর, বেহরামপুর, সোলাপুর ও মিরাট।

এবারের শিথিলতার পর রোগের প্রকোপের কার্ভ একদিকে অবশিষ্ট ভারতে অন্য চেহারা নেবে, আর এই ৩০টি শহরে আরেক রকম, এ সপ্তাহের শেষে অতিমারী মোকাবিলার পরবর্তী ধাপ কী হবে তার ছবিও স্পষ্ট হয়ে উঠবে। অনেক কিছু খুলে দেওয়া হয়েছে, আমাদের সে নিয়ে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে এই চতুর্থ দফার লকডাউনে।

Lockdown COVID-19
Advertisment