ভারতে কোভিড-১৯ উপসর্গে কী চিকিৎসা হচ্ছে?

এখনও নির্দিষ্ট ওষুধ বেরোয়নি, তা বলে থেমে নেই কোভিড-১৯ চিকিৎসা। আমাদের দেশে কী ওষুধে চিকিৎসা হচ্ছে, তার দামই বা কত?

এখনও নির্দিষ্ট ওষুধ বেরোয়নি, তা বলে থেমে নেই কোভিড-১৯ চিকিৎসা। আমাদের দেশে কী ওষুধে চিকিৎসা হচ্ছে, তার দামই বা কত?

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Covid-19 treatment in India

ভারতে প্রথম ম্যালেরিয়ার চিকিৎসার জন্য হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহৃত হয়

করোনাভাইরাস সংক্রমণের এখনও পর্যন্ত কোনও প্রমাণিত চিকিৎসাপদ্ধতি বেরোয়নি। এ পরিস্থিতিতে চিকিৎসার জন্য রোগীদের অন্য রোগের জন্য অনুমোদিত ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা হচ্ছে। রেমডেসিভির ও ফ্লাপিরাভিরের জেনেরিক ভার্সন ব্যবহারে ভাইরাল লোড কমছে, কিন্তু তা পরিস্থিতি বদলে দেওয়ার মত কার্যকর হয়নি।

Advertisment

ভারতে টোসিলিজুমাব এবং প্লাজমা থেরাপিও কাজে লাগানো হচ্ছে নির্দিষ্ট ধরনের রোগীদের জন্য। এ ছাড়া ভারতে ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনও ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে বহু বিতর্ক রয়েছে। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তাদের সলিডিরিটি ট্রায়ালে এ ওষুধ নিয়ে পরীক্ষা বন্ধ করে দিয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে মৃত্যুহার কমাতে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ব্যর্থ হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত।

এ ছাড়া, ব্রিটেন সরকার গত সপ্তাহে কম দামের বহুল ব্যবহৃত স্টেরয়েড ডেক্সামেথাসোন ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। এই ওষুধ গুরুতর অসুস্থদে প্রাণের ঝুঁকি কমায় বলে প্রমাণিত হয়েছে।

Advertisment

কোভিড-১৯ চিকিৎসায় এখন যেসব ওষুধ ব্যবহৃত হচ্ছে

১. রেমডিসিভির

আমেরিকান বায়োফার্মা কোম্পানি Gilead Sciences-এর তৈরি রেমডিসিভির ইবোলার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়েছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সলিডিরিটি ট্রায়ালে রেমডেসিভির-এর আপৎকালীন ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে মার্কিন সংস্থা এফডিএ।

 কারা রেমডেসিভির তৈরি করে, তার দামই বা কত?

২১ জুন, সেন্ট্রাল ড্রাগ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন, রেমডেসিভির উৎপাদন ও বিপণনের জন্য হেটেরা ড্রাগস ও সিপলাকে অনুমতি দেয় দুই সংস্থাই রেমডেসিভিরের পেটেন্ট হোল্ডার কোম্পানি গাইলিড সায়েন্সেসের সঙ্গে নন এক্সক্লুসিভ চুক্তি করেছে।

হেটেরো জানিয়েছে কোভিফোর নামের এই ওষুধ পাওয়া যাবে ১০০ মিলিগ্রামের ভায়ালে, যা হাসপাতালের মত পরিকাঠামোয় ইঞ্জেকশন হিসেবে দিতে হবে। হেটেরো সংস্থার এমডি ভামসি কৃষ্ণা বামজি সংবাদসংস্থা পিটিআইে বলেছেন রেমডেসিভিরের দাম হবে প্রতি ডোজ ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা।

সিপলা জানিয়েছে তারা সিপ্রেমি ব্র্যান্ড নেমে এই ওষুধ বিক্রি করবে। এর দাম এখনও তারা ঘোষণা করেনি।

২. ফাভিপিরাভির

ফাভিপিরাভির একটি অ্যান্টিভাইরাল যা ইনফ্লুয়েঞ্জার জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে। জাপানের ফুজিফিল্ম টোয়ামা কেমিক্যাল লিমিটেড এই ওষুধ বানিয়েছিল।

কোন সংস্থা ফাভিপিরাভির বানায়, কত দাম?

গ্লেনমার্ক ফার্মাসিউটিক্যালস ফাবিফ্লু ব্র্যান্ড নেমে এই ওষুধ তৈরি করছে। ভারতে কোভিড-১৯ চিকিৎসায় ফাভিপিরাভির অনুমোদিত এটাই প্রথম খাবার ওষুধ। এর দামস্থির হয়েছে প্রতি ট্যাবলেট ১০৩ টাকা।

ডেক্সামেথাসোন

ডেক্সামেথাসোন একটি জেনেরিক স্টেরয়েড। অন্যান্য অসুখে প্রদাহ কমানোর জন্য এই ওষুধ ব্যবহার করা হয়। রিউম্যাটিজম, অ্যাজমা, অ্যালার্জির জন্য তো এই ওষুধ ব্যবহার করা হয়ই, এমনকি কেমোথারাপির পর ক্যান্সার রোগীদের বমিভাবের মোকাবিলাতেও এই ওষুধ ব্যবহার করা হয়।

কোন সংস্থা এ ওষুধ তৈরি করে, দাম কত?

ব্রিটেনে এই স্টেরয়েড অনুমোদিত হয়েছে। এর এক কোর্সের মূল্য সেখানে ৫ পাউন্ড। ভারতে এ ওষুধ এখনও চিকিৎসা প্রটোকলের অন্তর্ভুক্ত নয়। ভারতে এ ইঞ্জেকশনের দাম ১০ টাকার কম।

 ৪. হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন

ভারতে প্রথম ম্যালেরিয়ার চিকিৎসার জন্য হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহৃত হয়। আর্থ্রাইটিস রোগীদের ফোলা ও ব্যথা কমানোর জন্য এ ওষুধ ব্যবহার করা হয়।

কোন সংস্থা এ ওষুধ তৈরি করে, দামই বা কত?

ভারতে ১২টি উৎপাদন সংস্থা হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন বিক্রি করছে, এর মধ্যে জাইডাস ক্যাডিলা এবং ইপকা ল্যাবরেটরিজ বৃহত্তম উৎপাদক। এ ছাড়া রয়েছে ইন্টাস ফার্মাসিউটিক্যালস, ইন্দোরের এমসিডবলিউ হেলথকেয়ার, ম্যাকলয়েডস ফার্মাসিউটিক্যালস, সিপলা ও লুপিন। ভারতে একটি হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ট্যাবলেটের দাম তিন টাকারও কম।

 ৫. প্লাজমা থেরাপি

কনভালসেন্ট প্লাজমা থেরাপি বা সিপিটি-তে আরোগ্যলাভ করা রোগীর রক্তের প্লাজমা অন্য রোগীর শরীরে দেওয়া হয়। এর আগে বহু রোগের চিকিৎসায় এই পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়েছে, কিন্তু কোভিড-১৯-এ এই রোগের কার্যকারিতা এখনও পরীক্ষামূলক। যাঁদের অক্সিজেন স্যাচুরেশন মাত্রা বিপজ্জনক ভাবে কমে গিয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে, বা সাইটোকিন স্টর্ম যাঁদের দেখা দিচ্ছে, তাঁদের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।

coronavirus COVID-19