শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশের তিনটি প্রদেশের চলমান লকডাউনের সমালোচনায় মুখর হয়ে তাকে অতীব কঠিন বলে সমালোচনা করেছেন এবং প্রকাশ্যে ওই প্রদেশগুলিতে সামাজিক দূরত্ববিরোধী আন্দোলনের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে প্রেসিডেন্ট লিবারেট মিনেসোটা, লিবারেট মিশিগান ও লিবারেট ভার্জিনিয়া আন্দোলনের সমর্থন করেছেন এবং নিউ ইয়র্কের গভর্নরের নিন্দা করেছেন।
LIBERATE MINNESOTA!
— Donald J. Trump (@realDonaldTrump) April 17, 2020
এক সপ্তাহ ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রদেশগুলির রাজধানীতে দড়ো হয়ে অতি দক্ষিণপন্থী ভোটাররা জমায়েত হয়ে লকডাউনের নির্দেশকে চরম বলে দাবি করেছেন এবং এর ফলে স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন। ট্রাম্প যে চারটি প্রদেশের নিন্দা করেছেন, সেখানকারর গভর্নররা সকলেই ডেমোক্রেটিক পার্টির। রিপাবলিকান ট্রাম্প এই নভেম্বরে পুনর্নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত এবং ডেমোক্রেটিক পার্টির জো বিডেনকে হারাতেই হবে তাঁকে।
করোনাক্রান্তের সংখ্যার দ্বিগুণ বৃদ্ধি, ভারতে ও অন্যত্র
আমেরিকায় লকডাউন
করোনাভাইরাস সম্প্রতি আমেরিকায় কঠোর আক্রমণ করেছে, সে দেশে মৃত্যু এ সংক্রমণের সংখ্যা সারা বিশ্বের মধ্যে সর্বাধিক। এর প্রেক্ষিতে, ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান উভয় পার্টির গভর্নররাই বাড়িতে থাকের নির্দেশ জারি করেছেন।
কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই অতিমারীকে গুরুত্ব দিতে চাননি, ডেমোক্র্যাটরা ভাইরাস নিয়ে রাজনীতি করছে বলে অভিযোগ করেছেন এবং মার্চের শেষে বিশেষজ্ঞদের মতামতের বিরুদ্ধে গিয়ে ইস্টারের (১২ এপ্রিল) আগে মার্কিন অর্থনীতির কাজ শুরুর পক্ষে সওয়াল করেছেন।
পরে তিনি অবশ্য জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি করে ক্রমবর্ধমান রোগের প্রকোপের মোকাবিলা করবার কথা বলেছেন এবং মার্কিনদের কাছে বাড়ি থেকে কাজ করবার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার ট্রাম্প সমস্ত প্রদেশের গভর্নরদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের রাস্তায় গিয়ে বলেছেন কবে প্রদেশগুলি থেকে লকডাউন তোলা যা সে ব্যাপারে পরিকল্পনা করবার, তাঁরা অধিকারী। কিন্তু তার পর ২৪ ঘণ্টা কাটতে কাটতে তিনি ভিন্ন সুর গ্রহণ করে সামাজিক দূরত্ব নীতি শিথিল করবার জন্য রাজনৈতিক চাপের রাস্তায় হাঁটতে শুরু করেছেন।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে লকডাউন ও সতর্কতামূলক নীতি
আকস্মিক ক্রোধ
কয়েক মাস পরেই ট্রাম্প পুনর্নির্বাচনের মুখে পড়বেন। করোনাভাইরাস অতিমারীর মোকাবিলায় তাঁর ভূমিকা তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। পিউ রিসার্চ সেন্টারের বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ফলানুসারে, প্রায় দুই তৃতীয়াংশ (৬৫ শতাংশ) আমেরিকান মনে করেন অন্য দেশগুলিতে সংক্রমণ ধরা পড়বার পর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে ট্রাম্প অনেক শ্লথ ভূমিকা নিয়েছেন।
একইসঙ্গে অতিমারীজনিত আর্থিক মন্দাও নভেম্বরের নির্বাচনে তাঁর জনপ্রিয়তা অক্ষুণ্ণ রাখবার ব্যাপারে বড় চ্যালেঞ্জ। বিশ্বের অন্য জায়গার মতই লকডাউনের ফলে আমেরিকাতেও অর্থনীতি ব্যাপক ঘা খেয়েছে- ২০ মিলিয়েনের বেশি মানুষ কর্মচ্যুত- যা ১৯৩০ সালের গ্রেট ডিপ্রেশন পরবর্তীতেত সবচেয়ে কঠোর শ্রমিক পরিস্থিতি বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।
বর্তমানে যেসব অতি দক্ষিণপন্থীরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, ২০১৬ সালের ভোটে তাঁরা ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছিলেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, তাদের ভোট ধরে রাখবার জন্যই প্রেসিডেন্টের এই সমর্থন পদক্ষেপ। একই সঙ্গে তাঁরা আশা অর্থনীতির মন্দার বিরুদ্ধে জনগণের বড় অংশের মুখ ঘুরিয়ে দিতে পারলে তাঁর ফের ভোটে জিততে সুবিধে হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ব্যালান্স শিট- কোথা থেকে অর্থ আসে, কোথায় খরচ হয়
সমালোচকরা এই বিক্ষোভের নিন্দা করেছেন এবং একে সমর্থন করার জন্য ট্রাম্পেরও সমালোচনা করেছেন। তাঁরা মনে করছেন আমেরিকার ভঙ্গুর স্বাস্থ্য পরিস্থিতির উপর এর কুপ্রভাব পড়বে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন