Covishield manufacturer AstraZeneca: করোনা রুখতে দেশজুড়ে টিকাকরণ করা হয়েছে। তার মধ্যে কোভিশিল্ড টিকা নিয়েছেন, এমন নাগরিকদের সংখ্যা নেহাত কম নয়। কিন্তু, এতদিনে কোভিশিল্ড নির্মাতা অ্যাস্ট্রাজেনেকা (AstraZeneca) জানাচ্ছে, এই টিকার সাইড এফেক্ট আছে। কিছু ক্ষেত্রে রক্ত জমাট বাঁধতে পারে। একইসঙ্গে অবশ্য সংস্থাটি জানিয়েছে, সবার আতঙ্কের কারণ নেই। খুবই বিরল ক্ষেত্রে টিকাগ্রহীতার শরীরে কোভিশিল্ডের জন্য রক্ত জমাট বেঁধে যেতে পারে।
এবারই অবশ্য প্রথম নয়। অতীতেও অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন এবং টিটিএস নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছিল। থ্রম্বোসিস উইথ থ্রোম্বোসাইটোপেনিয়া সিন্ড্রোম বা টিটিএস হল মেডিকেল বা ডাক্তারি পরিভাষায় একটি অবস্থা। এই অবস্থায় অস্বাভাবিকভাবে রোগীর শরীরে প্লেটলেট কমে আসে। রক্ত জমাট বাঁধে। গ্লোবাল ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট অ্যাস্ট্রাজেনেকা (AstraZeneca) কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্যই এজেডডি১২২২ (AZD1222) টিকা বা ভ্যাকসিন তৈরি করেছে। এই ভ্যাকসিনই কোভিশিল্ড (Covishield) নামে ভারতে তৈরি হয়েছে।
অ্যাস্ট্রাজেনেকা থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিন্ড্রোম (টিটিএস) এবং থ্রম্বোসিসের সঙ্গে এই ভ্যাকসিনের একটি যোগসূত্র স্বীকার করেছে। কোভিশিল্ড তৈরির জন্য করোনভাইরাস অতিমারী চলাকালীন অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন সূত্রটি পুনের ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া (এসআইআই)-কে দেওয়া হয়েছিল। তাদের টিকা তৈরির লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। সেই লাইসেন্স অনুযায়ী, সিরাম ভারতে কোভিশিল্ড (Covishield)-এর ১৭৫ কোটিরও বেশি ডোজ তৈরি করেছে।
এদেশে অবশ্য টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থাটির বিরুদ্ধে কোনও মামলা হয়নি। তাদের টিকার যে সাইড এফেক্ট আছে, তা জানা গিয়েছে ব্রিটেন থেকে। সংস্থাটি প্রথমে এসব নিয়ে চুপচাপ ছিল। কিন্তু, ব্রিটেনে অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোম্পানির বিরুদ্ধে আনা মামলার জেরে আদালতের নথিতে সংস্থাটি রক্ত জমাট বাঁধার কথা স্বীকার করেছে। ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট বা টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থাটি ২০২০ সালে দাবি করেছিল, কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে তারা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় ভ্যাকসিনটি তৈরি করেছে। এই ভ্যাকসিন সম্পূর্ণ সুরক্ষিত। সেই সুরক্ষার দাবির বিরুদ্ধেই মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- বিজয় মালিয়ার মত ঋণখেলাপিদের দেশত্যাগ আর আটকাতে পারবে না প্রশাসন, বিরাট নির্দেশ আদালতের
ব্রিটেনের গণমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, গত বছর দুই সন্তানের বাবা জেমি স্কট টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থাটির বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। জেমির শরীরে রক্ত জমাট বেঁধে যাচ্ছিল। তিনি মস্তিষ্কে আঘাত পর রক্ত জমাট বাঁধার দরুণ তাঁর চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছিল। জেমির দাবি, ২০২১ সালে তিনি কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন নেন। তারপর থেকেই তাঁর শরীরে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। সব মিলিয়ে ব্রিটেনের হাইকোর্টে এনিয়ে ৫১টি মামলা দায়ের হয়েছে। ভুক্তভোগীরা টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থার থেকে ১০০ মিলিয়ন পাউন্ড পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন।