Creating time standard for the Moon: চাঁদের জন্য একটি স্ট্যান্ডার্ড টাইম তৈরি করার চেষ্টা চলছে। তবে, ব্যাপারগুলো এখনও বিজ্ঞানীরা পরিষ্কার করেননি। একজন ওএসটিপি কর্তা রয়টার্সকে বলেছেন যে পৃথিবীর মত, চন্দ্রপৃষ্ঠেও সময়ের মান নির্ধারণের জন্য পারমাণবিক ঘড়ি বসানো হতে পারে। আর, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়ন ইতিমধ্যেই চাঁদের জন্য একটি টাইমকিপিং স্ট্যান্ডার্ড প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবও করেছে। শুধু তাই নয়, আমেরিকার হোয়াইট হাউস এর অনেক আগেই চলতি বছরের এপ্রিলে আনুষ্ঠানিকভাবে ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনকে (নাসা) চাঁদের জন্য একটি সময় মান নির্ধারণের নির্দেশ দিয়েছিল।
পৃথিবীতে কীভাবে সময় নির্ধারণ হয়?
বিশ্বের বেশিরভাগ ঘড়ি এবং সময় অঞ্চল- একই ভৌগলিক অঞ্চল। যা একই মানক সময় ব্যবহার করে। এই সময় সমন্বিত সর্বজনীন সময়ের (UTC) ওপর ভিত্তি করে তৈরি। যা ফ্রান্সের প্যারিসে আন্তর্জাতিক ওজন ও পরিমাপ ব্যুরো দ্বারা স্থির করা হয়েছে। ইউটিসি (UTC) মূলত বিশ্ব সময়ের জন্য একটি আন্তর্জাতিকভাবে স্থির করা মানদণ্ড। এটি বিশ্বের বিভিন্ন অংশে স্থাপিত ৪০০টিরও বেশি পারমাণবিক ঘড়ির ওজনযুক্ত গড় দ্বারা ট্র্যাক করা হয়। পারমাণবিক ঘড়িগুলো অনুরণিত ফ্রিকোয়েন্সির পরিপ্রেক্ষিতে সময় পরিমাপ করে।
পরমাণুর সময়
সিজিয়াম পরমাণু নির্দিষ্ট কম্পাঙ্কের আলো শুষে নিয়ে নির্দিষ্ট সময় বাদে সেই শক্তি তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ আকারে ছেড়ে দেয়। ঠিক যেমন আদর্শ অবস্থায় একটি পেন্ডুলাম নির্দিষ্ট সময় অন্তর বিশেষ একটি স্থানে পৌঁছায়। সিজিয়ামের ঘড়িতে আলোর ৯১৯,২৬,৩১,৭৭০ বার স্পন্দন বা দোলন হওয়ার কালকে এক সেকেন্ড ধরা হয়। সিজিয়াম এক সেকেন্ডকে (SI) সিজিয়াম-১৩৩ পরমাণুর একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক অনিশ্চিত গ্রাউন্ড-স্টেট হাইপারফাইন ট্রানজিশন হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়। সিজিয়াম মান তাই প্রাথমিক সময়। আর, একে ফ্রিকোয়েন্সি মান হিসেবে গণ্য করা হয়। সিজিয়াম ঘড়ির মধ্যে রয়েছে NIST-F1 ঘড়ি। এই ঘড়ি ১৯৯৯ সালে তৈরি করা হয়েছিল। ২০১৩ সালে তৈরি হয়েছিল NIST-F2 ঘড়ি।
আরও পড়ুন- কর্ণাটকে চরম অশান্তিতে বিরোধী কংগ্রেসের সরকার, দুর্নীতির কাঠগড়ায় খোদ মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া
কেন চাঁদের জন্য একটি সময় নির্ধারণের প্রয়োজন?
ইউটিসি (UTC) চাঁদে সময় নির্ধারণ করতে ব্যবহার করা যাবে না। কারণ চাঁদে সময় পৃথিবীর তুলনায় ভিন্নভাবে হয়। স্কটল্যান্ড রয়্যালের জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক, ক্যাথরিন হেইম্যান ইমেলের মাধ্যমে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, 'মহাবিশ্বে প্রকৃতির একটি মৌলিক দিক হল, সব জায়গায় একই সময় কার্যকরী নয়। আপনি যদি চাঁদে ভ্রমণ করেন, তাহলে আপনার ঘড়ির কাঁটা যদি আপনি পৃথিবীতে থাকতেন তার চেয়ে কিছুটা দ্রুত টিক টিক করে। এটি আলবার্ট আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিক তত্ত্বের একটি ফলাফল যা আমাদের বলে যে মহাকর্ষ স্থান এবং সময়কে নির্ধারণ করে। চাঁদে মাধ্যাকর্ষণ কম থাকায়, পৃথিবীর সময়ের তুলনায় সেখানে সময় কিছুটা দ্রুত টিকটিক করে।' আর, সেই কারণে, মহাকাশে, পৃথিবীতে আর চাঁদে সময়ের মান ভিন্ন। তাই চাঁদের জন্য আলাদা সময় নির্ধারণের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।