Advertisment

কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ডেটা সুরক্ষা বিলের অনুমোদন, জানুন বিষয়বস্তু, উদ্বেগ কোথায়?

মন্ত্রিসভায় ডিজিটাল পার্সোনাল ডেটা প্রোটেকশন বিলের অনুমোদন, জেনে নিন এতে আপনার কী লাভ?

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Digital Personal Data Protection Bill, Data protection, Data Protection Bill, Supreme Court, Explained Economics, Explained, Indian Express Explained, Current Affairs

বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ডিজিটাল ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা (DPDP) বিল অনুমোদন করেছে। সংসদের আসন্ন বাদল অধিবেশনে বিলটি পেশ করা হবে। ডেটা সুরক্ষা বিল এখনও আইনে পরিণত হয়নি। এটি মন্ত্রিসভা থেকে অনুমোদন পেয়েছে। এবার এই বিল সংসদে পেশ করা হবে। সংসদে অনুমোদনের পর তা রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। এরপর সারাদেশে তা কার্যকর করা হবে।

Advertisment

মোবাইল ও ইন্টারনেটের এই যুগে ব্যক্তিগত তথ্যের ব্যাপক অপব্যবহার করার অভিযোগ উঠে এসছে বারে বারে। তথ্যের অপব্যবহার সংক্রান্ত কোন কঠোর আইন না থাকায় অনলাইনে প্রতারণা, ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস-এর মত নানান বিষয় সামনে আসছে। এর থেকে সাধারণ মানুষকে রেহাই দিতেই তথ্য সুরক্ষা বিল আনছে সরকার। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই বিল অনুমোদন করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, প্যান এবং আধার সহ কোনও ডেটা অপব্যবহার করলেই পড়তে হবে কঠোর শাস্তির মুখে।

সংসদের বাদল অধিবেশন ২০ জুলাই শুরু হবে এবং ১১ আগস্ট পর্যন্ত চলবে। 'গোপনীয়তার অধিকারকে মৌলিক অধিকার' ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্টের আদেশের পর গত বছরের ২৭ আগস্ট ডিপিডিপি বিলের কাজ শুরু হয়। সরকার ২০২২ সালের আগস্টে ব্যক্তিগত তথ্য বিল প্রত্যাহার করে। এটি প্রথম ২০১৯ সালের শেষের দিকে চালু করা হয়েছিল। বিলের নতুন সংস্করণের খসড়া ২০২২ এর নভেম্বরে সামনে আনা হয়।  

আগের খসড়ার প্রায় সব ধারাই বিলটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের পরামর্শের জন্য ওই খসড়া জারি করেছে। প্রস্তাবিত আইন থেকে সরকারি বিভাগগুলিকে পুরোপুরি ছাড় দেওয়া হয়নি। বিরোধের ক্ষেত্রে তথ্য সুরক্ষা বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে। নাগরিকদের দেওয়ানি আদালতে গিয়ে ক্ষতিপূরণ দাবি করার অধিকার থাকবে। খসড়াটিতে মোট ২১ হাজারের বেশি পরামর্শ এসেছে।

'আইন কার্যকর হওয়ার পর, ব্যক্তিদের তাদের তথ্য, সুরক্ষা ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত জানার অধিকার থাকবে। সূত্রের খবর 'বিস্তর আলোচনার পর এই খসড়াটি মন্ত্রিসভার সামনে আনা হয়েছে। সব মিলিয়ে খসড়াটিতে প্রায় ২১,৬৬০ টি পরামর্শ গৃহীত হয় এবং তাদের প্রতিটি বিবেচনা করা হয়েছিল। খসড়া চূড়ান্ত করার আগে সরকারের ৪৮টি প্রতিষ্ঠান এবং অভ্যন্তরীণ ৩৮টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পরামর্শ করেছে।

ডেটা সুরক্ষা বিলের নীতি লঙ্ঘন করলে ২৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা আরোপ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এই বিল নিয়ে বিভিন্ন সংস্থা, সংগঠন, ব্যক্তির সঙ্গে আলোচনা করা হয়। তাঁদের মতামত নেওয়া হয়। এর পর খসড়া বিলটি চূড়ান্ত করা হয়। এ বার সংসদের বাদল অধিবেশনে সেই বিল পেশ করা হবে।

বেশ কিছুদিন ধরে ব্যাংক, বীমা, ক্রেডিট কার্ড সংক্রান্ত তথ্য ফাঁসের কারণে অনলাইন নিরাপত্তার প্রতি মানুষের আস্থা ভেঙে পড়ে। দেশে তা রক্ষায় আইন না থাকায় ব্যক্তিগত তথ্য যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করত কোম্পানিগুলো। এবার এই বিল আইনে পরিণত হলে সাধারণের ব্যক্তিগত তথ্য পুরোপুরি সুরক্ষিত থাকবে। নতুন আইনের অধীনে, অভিযোগ মোকাবেলা করার জন্য একটি ডেটা সুরক্ষা বোর্ড গঠন করা হবে। ডেটা সংগ্রহকারীদেরও এর নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে হবে। কেন্দ্র ইতিমধ্যেই ব্যক্তিগত ডেটা ব্যবহার নিয়ে একটি খসড়া বিল পেশ করেছে। তবে প্রবল বিক্ষোভের জেরে তা প্রত্যাহার করতে হয়। এরপর জনগণের পরামর্শ ও বিভিন্ন মন্ত্রকের সঙ্গে ব্যাপক আলোচনা করে নতুন খসড়া তৈরি করা হয়েছে।

নতুন আইনে, শিশুদের ডেটা অ্যাক্সেস করার জন্য পিতামাতার সম্মতি বাধ্যতামূলক করা হবে। জাতীয় নিরাপত্তা-আইন-শৃঙ্খলার ভিত্তিতে তথ্য ব্যবহারের বিশেষ অনুমতি পাবে সরকারি সংস্থাগুলি। সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলার পরে, কোম্পানির ডেটা মুছে ফেলা বাধ্যতামূলক। কোম্পানিগুলি তাদের নিজস্ব ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য ছাড়া অন্য ডেটা ব্যবহার করতে পারবে না। ব্যবহারকারীর তার ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধন বা মুছে ফেলার অধিকার থাকবে।বিলটি, একবার আইনে পরিণত হয়ে গেলে, অন্যান্য দেশগুলির সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, এবং বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো অংলে, যেখানে ডেটা সুরক্ষা নিয়ম (GDPR) বিশ্বের সবচেয়ে সম্পূর্ণ গোপনীয়তা আইনগুলির মধ্যে একটি।

আপনার ডেটা নিরাপদ রাখতে এই বিল আনা হয়েছে। শুধু তাই নয়, ডিজিটাল পার্সোনাল ডেটা প্রোটেকশন বিলের খসড়ায় প্রস্তাবিত বিধান লঙ্ঘনের জন্য জরিমানার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। এই জরিমানা ২৫০ কোটি টাকা করা হয়েছে। এর মানে হল যে কেউ যদি আপনার ডেটা অপব্যবহার করে, তাহলে তাকে ২৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা যেতে পারে। ডিজিটাল সুরক্ষা বিলে একটি বিশেষ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, দেশের ইতিহাসে এটিই প্রথম। এই বিলে নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্য Her/She শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে।

যদিও বিলটির বিষয়বস্তু সংসদে আনা না হওয়া পর্যন্ত গোপনীয় থাকবে, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানতে পেরেছে যে নভেম্বরের খসড়ায় বিশেষজ্ঞদের দ্বারা চিহ্নিত কিছু বিতর্কিত বিষয়গুলি বজায় রাখা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কেন্দ্র এবং এর সংস্থাগুলিকে বিস্তৃত ছাড় দেওয়া এবং ডেটা সুরক্ষা বোর্ডের ভূমিকাকে হ্রাস করা।তথ্য সুরক্ষা বোর্ডের সদস্য নিয়োগের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণ এবং কেন্দ্রীয় সরকার এবং কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির জন্য বিস্তৃত ছাড়ের প্রস্তাব ঘিরে কিছু বিতর্ক সৃষ্টি হতে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞমহল।

Modi Government Data Leak
Advertisment