সাম্প্রতিক এক গবেষণা থেকে দেখা যাচ্ছে ২১০০ সালে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য অতিরিক্ত গরমে ১৫ লক্ষ অতিরিক্ত ভারতীয়ের মৃত্যু ঘটবে। শুধু তাই নয়, আগামী ২০ বছরে ভারতের বিদ্যুতের ব্যবহার দ্বিগুণ হবে, যার মূল কারণ জীবাশ্ম জ্বালানি। দূষণের পরিমাণ যদি এখনকার মতই ব্যাপক থাকে তাহলে ২১০০ সালে ভারতে প্রতি এক লক্ষ জনসংখ্যায় মৃত্যু ঘটবে ৬০ জনের।
বর্তমানে মুখের ক্যানসারে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। গবেষণায় দেখা যাচ্ছে তার থেকে মৃত্যু হার দ্বিগুণ হবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে। Climate Change and Heat-Induced Mortality in India শীর্ষক গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের টাটা সেন্টার অফ ডেভেলপমেন্টের সহযোগিতায় ক্লাইমেট ইমপ্যাক্ট ল্যাব।
গবেষণায় বলা হয়েছে, ভারতের গড় বার্ষিক তাপমাত্রা ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে বেড়ে হবে ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশে অত্যধিক উষ্ণ দিন (৩৫ ডিগ্রির বেশি)-এর সংখ্যা ৮ গুণ বাড়বে। ২০১০ সালে যে দিনের সংখ্যা ছিল ৫.১ তা ২১০০ সালে বেড়ে হবে ৪২.৮। ২০৫০ সালে বছরে ১৫.৮ দিন অত্যধিক উষ্ণ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এনসিআর এলাকায় অতিরিক্ত উষ্ণ দিন হবে ২২ গুণ এবং ২১০০ সালের মধ্যে জলবায়ু জনিত মৃত্যুর সংখ্যা হবে ২৩ হাজার। অতিরিক্ত উষ্ণ দিন সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হবে ওড়িশায়, এখনকার থেকে সে সংখ্যা বাড়বে ২১ গুণ। সমস্ত রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অতিরিক্ত উষ্ণ দিন পরিলক্ষিত হবে পাঞ্জাবে, বছরে ৮৫ দিন।
গবেষণায় অনুমান করা হয়েছে দেশের মোট ৬টি রাজ্যে ৬৪ শতাংশ মৃত্যু হবে হৃদরোগে। ওই ৬টি রাজ্য হল উত্তর প্রদেশ (৪,২০,২৮০), বিহার (১,৩৬,৩৭২), রাজস্থান (১,২১,৮০৯), অন্ধ্র প্রদেশ (১,১৬,৯২০), মধ্য প্রদেশ (১,০৮,৩৭০) এবং মহারাষ্ট্র (১,০৬,৭৪৯)।
অতিরিক্ত দূষণের কারণে ২১০০ সালে প্রতি ১ লক্ষ জনসংখ্যায় ৬০ জনের মৃত্যুর কথা যেমন গবেষণায় অনুমান করা হয়েছে, তেমনই বলা হয়েছে, দূষণের পরিমাণ কমালে প্রতি ১ লক্ষ জনসংখ্যার মৃত্যুর হার ১০ করে কমতে পারে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, অতিরিক্ত উষ্ণতার বিষয়টি সারা পৃথিবীর এক এক জায়গায় এক এক রকম এবং তা অনেকটাই সম্পদের উপর নির্ভরশীল। উদাহরণ হিসেবে বলা হয়েছে, একটি উষ্ণ দিনে সম্পদশালী শহর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাউস্টনে প্রতি ১ লক্ষে মৃত্যু হতে পারে ০.৪ জনের, সেখানে দরিদ্রতর শহর দিল্লিতে ওই একই উষ্ণতার দিনে মৃত্যু হতে পারে ০.৮ জনের।