Advertisment

দিল্লিতে কোভিড মৃত্যুর হিসেবে গরমিলের কারণ কী?

হাসপাতালগুলির প্রতিটি মৃত্যুর ঘটনা কেস সামারি, মেডিক্যাল ফাইল ও অন্যান্য নথি স্ক্যান করে প্রতিদিন  বিকেল পাঁচটার মধ্যে রিপোর্ট করার কথা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Delhi Covid Death Data Mismatch

দিল্লি সরকারের হিসেব অনুসারে ১ জুন থেকে ১১ জুনের মধ্যে মৃতের সংখ্যা ৫২৩ থেকে বেড়ে ১০৮৫-তে দাঁড়িয়েছে

দেশের রাজধানীর কোভিড মৃত্যুর সংখ্যায় গরমিলের প্রসঙ্গ ফের একবার সামনে এসেছে। শহরের তিনটি পুরসভা কোভিড প্রটোকল অনুসারে দাহ ও সমাধির মোট সংখ্যা প্রকাশ করার পর রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংখ্যাগত তফাতের বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছে।

Advertisment

দিল্লি সরকারের হিসেব অনুসারে ১ জুন থেকে ১১ জুনের মধ্যে মৃতের সংখ্যা ৫২৩ থেকে বেড়ে ১০৮৫-তে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু বিজেপি পুরচালিত পুরসভাগুলির দাবি কোভিড ১৯-এ মৃত্যুর কারণে শেষকৃত্য করা হয়েছে এখনও পর্যন্ত ২০৯৮ জনের।

সংখ্যার এই তফাৎ কবে সামনে এল?

বৃহস্পতিবার দিল্লির পুরসভার তরফ থেকে উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্ব দিল্লির মেয়রদের নিয়ে এক যৌখ সাংবাদিক সম্মলেনে এই তারতম্যের কথা তুললেও মে মাসেই মৃত্যু সংখ্যায় গরমিলের বিষয়টি উঠে এসেছিল। ৯ মে নাগাদ যখন সরকারি হিসেবে দিল্লিতে মৃতের সংখ্যা ৬৬, তখন আলাদা করে বিভিন্ন হাসপাতালের দেওয়া পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছিল কোভিডের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা ১১৬। মুখ্যসচিব বিজয় দেব ১০ মে এক নির্দেশ জারি করে বলেন, সরকারি ও বেসরকারি কোনও হাসপাতালই যথাসময়ে ও যথাযথভাবে কোভিডের কারণে মৃত্যুর রিপোর্ট করছে না।

আরও পড়ুন, করোনাসংক্রমণ- দেশে ক্রমবর্ধমান মৃত্যুর সংখ্যাই উদ্বেগজনক

এর মধ্যে পুরসভা কবে এল?

প্রথমবার সংখ্যার তারতম্য দেখা দেওয়ার পর ১৬ মে দিল্লির স্বাস্থ্যসচিব পদ্মিনী সিংলা পুরসভাগুলির কাছে নিগমবোধ ঘাট, পাঞ্জাবি বাগ শ্মশান ও আইটিও সমাধিস্থলে কোভিডে মৃত ব্যক্তিদের শেষকৃত্যের খতিয়ান চেয়ে পাঠান। দিল্লি পুরসভা জানায় তারা ১৬ মে পর্যন্ত ৬টি নির্দিষ্ট শ্মশান ও সমাধিস্থলে ৪২৬ জনের শেষকৃত্য করেছে। সে সময়ে সরকারি খতিয়ান ছিল ১৯৪।

এরপর কী হল?

১৯ মে স্বাস্থ্যসচিব ফের একবার হাসপাতালগুলিকে দেরিতে মৃত্যুর রিপোর্ট দেওয়ার ব্যাপারে উল্লেখ করেন। সমস্ত জেলাশাসক ও হাসপাতালগুলিকে তিনি এ ব্যাপারে চিঠি লেখেন। তিনি বলেন সমস্ত মৃত্যুর ঘটনা হাসপাতালগুলিকে ২০ এপ্রিল রাজ্য সরকারের গঠিত ডেথ অডিট কমিটিতে জানাতে হবে। তিনি বলেন, “বারবার বলা সত্ত্বেও মৃত ব্যক্তির মৃত্যুর সারসংক্ষেপ ডেথ অডিট কমিটিতে জানানো হচ্ছে না যার ফলে ভুল বা বিলম্বিত তথ্য পেশ হচ্ছে।”

ডেথ অডিট কমিটি কী?

এই কমিটি তিন সদস্যের। হেলথ সার্ভিসের প্রাক্তন ডিজি ডক্টর অশোক কুমার এই কমিটির প্রধান। অন্য দুই সদস্য হলেন ডক্টর বিকাশ ডোগরা এবং ডক্টর আর এন দাস। প্রতিদিন পরিসংখ্যান প্রকাশের আগে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ঘটা প্রতিটি কোভিড-১৯ মৃত্যুর অডিট করা এই কমিটির কাজ।

 হাসপাতালগুলি ও কমিটি কী ধরনের সাধারণ পরিচালন প্রণালী অনুসরণ করে?

নির্দেশিকার আওতায় হাসপাতালগুলির প্রতিটি মৃত্যুর ঘটনা কেস সামারি, মেডিক্যাল ফাইল ও অন্যান্য নথি স্ক্যান করে প্রতিদিন  বিকেল পাঁচটার মধ্যে রিপোর্ট করার কথা। এ কারণে হাসপাতালগুলিকে নোডাল অফিসার নিয়োগ করার কথাও বলা হয়েছে। এর পর বিকেল সাড়ে পাঁচটা অডিট কমিটির ওই রিপোর্ট পরীক্ষা করে কোভিড১৯ মৃত্যু সম্পর্কিত ঘোষণা করার কথা।

আরও পড়ুন, কোভিড-১৯ উপসর্গবিহীন সংক্রমণ কতটা গুরুতর, তথ্যপ্রমাণ কী বলছে

কোনও হাসপাতাল যদি কোনও দিন রিপোর্ট পেশ না করে, তাহলে রাজ্য সরকারের সারভেলিয়েন্স অফিসার সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের সঙ্গে তৎক্ষণাৎ যোগাযোগ করবেন। যদি তাতেও কাজ না হয় তাহলে হেলথ সার্ভিসের ডিদি বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করবেন। যদি তাতেও বিলম্ব হয়, তাহলে পরদিনই ওই হাসপাতালকে বিলম্বের কারণ ব্যাখ্যা করতে হবে।

 এই গরমিলের ব্যাপারে দিল্লি হাইকোর্ট কী বলছে?

গত মাসের শেষ দিকে করোনামৃত্যুর পরিসংখ্যান নিয়ে গরমিল রয়েছে বলে একটি জনস্বার্থ মামলা হাইকোর্টে দায়ের করা হয়। তবে আদালত এ ব্যাপারে যথেষ্ট প্রমাণ নেই বলে আবেদন খারিজ করে দেয়।

আদালত একই সঙ্গে বলে কমিটি সদস্যরা এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ। শাসক দল আপের কাছে এই রায় স্বস্তিমূলক ছিল। আদালত বলেছিল আবেদনকারী তাঁর ক্ষোভ নিয়ে যথাযথ তথ্যপ্রমাণ সহ কোনও পর্যায়ে আবেদন করতে পারেন। রায়ে বলা হয়েছিল, “যথাযথ কোনও গবেষণা ছাড়াই” সংবাদপত্রের রিপোর্টের ভিত্তিতে আবেদন করা হয়েছে।

COVID-19
Advertisment