দিল্লির ভোটে আপ আবার ব্যাপক জয়লাভের পথে। বিজেপি দিল্লি ইউনিটেও কয়েক মাসের মধ্যেই ব্যাপক বদল হবে বলেই আশা করা যায়।
দিল্লি ইউনিটের বর্তমান সভাপতি মনোজ তিওয়ারিকে ২০১৭ সালে পুর ভোটের আগে দায়িত্বে নিয়ে আসা হয়। বিজেপি তিনটি কর্পোরেশনই ধরে রাখতে সক্ষম হয় এবং পূর্বাঞ্চল ভোটকে সংহত করার ব্যাপারে মনোজ তিওয়ারির ভূমিকাকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছিল।
পূর্বাঞ্চল ফ্যাক্টর
দিল্লিতে পূর্বাঞ্চলী বলতে বোঝানো হয় যাঁদের শিকড় বিহার ও উত্তর প্রদেশে, তাঁদের কথা। এঁরা ক্রমশ শক্তিশালী ভোটব্যাঙ্ক হয়ে উঠছেন। ২০১৫ সালের ভোটে আপ সবচেয়ে বেশি মনোনয়ন দিয়েছিল পূর্বাঞ্চলী প্রার্থীদের।
দিল্লির বাসিন্দাদের মোটামুটি ৩৫ শতাংশ পূর্বাঞ্চলী। কয়েক বছর আগেও মনে করা হত এরা পূর্ব ও উত্তরপূর্ব দিল্লিতে সংখ্যায় বেশি। কিন্তু গত দু দশকে দিল্লি শহরের দিকে দিতে পূর্বাঞ্চলীরা ছড়িয়ে পড়েছেন, এখন দক্ষিণ দিল্লি ও বহির্দিল্লির বিভিন্ন জায়গাও পূর্বাঞ্চলীদের জোরের জায়গা।
এই ভোটে এদের সমর্থন জোগাড় করতে পেরেছে আপ, দলীয় সদস্যরা নারেলা, বুরারি, বাদলি, রিথালা, দেওলি প্রভৃতি এলাকায় ভাল ফল করছেন।
বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্ব
এই রাজ্য-শহরে বেশ কয়েকজন নেতাকে দলের মুখ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করানোর নিয়ে আপত্তি ছিল দলের মধ্যেই। তবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দ্রুত তা চাপা দিয়েছেন।
বিজেপির কৌশল ব্যর্থ
আপের এবারের জয়ের ফলে, এবং যদি ধরে নেওয়া হয়, আপ আগামী ৫ বছর এখানে শাসন করবে, তাহলে মোট ২৭ বছর দিল্লির ক্ষমতার অলিন্দে ঢুকতে পারল না বিজেপি। যেখান থেকে কেন্দ্রীয় সরকার পরিচালিত হয় এবং গত ১২ বছর ধরে যেখানে পুরসভা বিজেপির দখলে, সেখানে এই জয় আরও তাৎপর্যপূর্ণ।
দিল্লিতে বিজেপির প্রচারে নিয়ে এসেছিল ২০০ সাংসদ, ১১ জন মুখ্যমন্ত্রী, বেশ কয়েকজন দলীয় নেতাকে। এসেছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং অন্য বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও।
বিজেপির পোস্টারে বিজেপির মুখ হিসেবে রাখা হয়েছিল কেবলমাত্র মোদীকে। কিন্তু বাস্তবত ভোটের সমস্ত কাজের দায়িত্বে ছিলেন অমিত শাহ। তিনি শহরে মোট ৫২টি রোড শো করেছিলেন।
শাহিনভাগ ও সিএএ বিরোধী বিক্ষোভ বিজেপির প্রচারে ঢুকে পড়েছে জানুয়ারি মাস থেকে। এর আগে বিজেপির প্রচার ছিল আপের কাজের দাবিকে ভুল প্রমাণ করা।
তবে জাতীয়তাবাদী প্রচারের বিপরীতে কাজ ও প্রশাসনের বিষয়টি নিয়ে প্রচার থেকে নড়েনি আপ।