কালীপুজো এবং দেওয়ালির এক সপ্তাহও বাকি নেই। এখনও পর্যন্ত এ কথা স্পষ্ট হল না যে মানুষজন দূষণ কমানোর জন্য কোন ধরনের বাজি কিনবেন। এদিকে বায়ুদূষণের পরিমাণ, বিশেষ করে উত্তর ভারতে ক্রমবর্ধমান।
২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল কম দূষণ হয় এবং নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে শব্দ হয়, কেবলমাত্র এরকম বাজিই বিক্রি ও ব্যবহার করা যাবে। বাজি পোড়ানোর সময়সীমাও নির্দিষ্ট করে দিয়েছিল শীর্ষ আদালত, দেওয়ালিতে রাত ৮টা থেকে ১০টা এবং ক্রিসমাস ইভে ও নিউ ইয়ারে রাত পৌনে বারোটা থেকে সাড়ে বারোটা।
২০১৬ সালে দেশের রাজধানীতে ব্যাপক ধোঁয়াশা দেখা দেয়। সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়র্নমেন্ট জানিয়েছিল, ১৭ বছরের মধ্যে এমন খারাপ অবস্থা আর হয়নি। তার পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট দিল্লিতে সমস্ত রকম বাজি বিক্রি নিষেধ করে দেয়।
এ বছরের ৫ অক্টোবর বায়ু দূষণ কমাতে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রক পরিবেশ বান্ধব আতসবাজি চালু করে। কাউন্সিল অফ সায়েন্টেফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (সিএসআইআর)-এর গবেষণাগারে এগুলি তৈরি করা হয়।
সিএসআইআর- নিরি (সিএসআইআর- ন্যাশনাল এনভায়র্নমেন্টাল এঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিট্যুট) জানায় আতসবাজি থেকে দূষণের পরিমাণ কমানোর ডন্য তারা ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাস থেকে চেষ্টা করে চলেছে।
আরও পড়ুন, ক্রাইম ব্যুরোর রেকর্ডে প্রকাশ করা হল না গণপিটুনি বা ধর্মীয় হত্যার পরিসংখ্যান
পরিবেশবান্ধব আতসবাজিতে রাসায়নিকের কম্পোজিশন বদলে দেওয়া হয়েছে, যার ফলে চালু বাজির তুলনায় তা থেকে দূষণের পরিমাণ ৩০ শতাংশ কম হবে।
চালু বাজিগুলিও পরিবেশবান্ধব করে ফেলা যেতে পারে কি?
তেমনটা সম্ভব এবং সেরকম চেষ্টা চলছে। পরিবেশবান্ধব বাজি ছাড়াও এমন বাজি তৈরির চেষ্টা চলছে যাতে পিএম ১০ এবং পিএম ২.৫ নির্গমনের পরিমাণ ৫০ শতাংশের বেশি কমানো যেতে পারে। সেগুলি নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চলে এবং তাতে যথেষ্ট উৎসাহব্যঞ্জক ফল পাওয়া যাচ্ছে।
নতুন ধরনের বাজি তৈরির চেষ্টার সঙ্গে সঙ্গে সিএসআইআর-নিরি বাজি প্রস্তুতকারকদের সঙ্গে একযোগে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাচ্ছে। এর কিছু ফলাফলও মিলছে। যেমন এক ধরনের আলোর বাজিতে ব্যবহৃত নাইট্রেটের ধরন বদলে দেওয়া হয়েছে।
পরিবেশবান্ধব বাজি চিনবেন কীভাবে?
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হর্ষ বর্ধন জানিয়েছেন, এ ধরনের বাজিতে একটি কিউআর কোড বসানো হবে, যাতে এগুলিকে অন্য বাজি থেকে আলাদা করা যায়। তিনি জানিয়েছেন, এ বাজির দাম সাধারণ বাজির মতই হবে, এবং ইতিমধ্যেই বাজারে এ বাজি বিক্রি শুরু হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন, বিশ্লেষণ: আয়করে ছাড় দিলে কী হতে পারে?
পরিবেশবান্ধব বাজি প্রস্তুত হচ্ছে কীভাবে?
বর্তমান পরিকাঠামোয়, একটি চুক্তি স্বাক্ষর করার পর বাজির নতুন কম্পোজিশন জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে প্রস্তুতকারীদের। এর পর প্রস্তুতকারীদের পেট্রোলিয়ম অ্যান্ড এক্সপ্লোসিভস সেফটি অর্গানাইজেশন (পেসো)-র কাছে আবেদন জানাতে হবে।
প্রস্তুত হওয়া বাজির নমুনা সিএসআইআরকে পরীক্ষার জন্য জমা দিতে হবে। ১৫০র বেশি বাজি প্রস্তুতকারী এ ধরনের বাজি প্রস্তুতি প্রক্রিয়ায় ইতিমধ্যেই যোগ দিয়েছেন।
Read the Full Story in English