Advertisment

Explained: শেয়ার সূচক-জিডিপির বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক লাভ কি শাসক দলের নির্বাচনী জয়ের ইঙ্গিত?

অনেকেই মনে করেন, দ্রুত জিডিপি বৃদ্ধি, স্টক মার্কেটে উচ্চতর রিটার্ন- শাসক দলের নির্বাচনী জয়েরই ইঙ্গিত।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Sensex

তিন রাজ্যে বিজেপির জয়ের পর শেয়ার সূচকের উত্থান ঘটেছে। (এক্সপ্রেস ছবি গণেশ শিরসেকার)

গত সপ্তাহে তিনটি বড় উন্নয়নের সাক্ষী হয়েছে দেশ। ৩০ নভেম্বর, সরকারি নথি দেখিয়েছে যে ভারতের জিডিপি বর্তমান আর্থিক বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে ৭.৬% বৃদ্ধি পেয়েছে। যা বাজারের প্রত্যাশাকে উল্লেখযোগ্যভাবে ছাপিয়ে গিয়েছে। ৩ ডিসেম্বরে, বিজেপি জাতীয় স্তরে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তিনটি বড় রাজ্যে সরাসরি লড়াই করে দুর্দান্ত জয় পেয়েছে। পরের দিন, স্টক মার্কেট সর্বকালের উচ্চতায় পৌঁছেছিল এবং মঙ্গলবার আরও বেড়েছে। বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের শেয়ার সূচক সেনসেক্স দুই দিনে প্রায় ২০০০ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়ে ৬৯,২৯৬ পয়েন্টে পৌঁছেছে।

Advertisment

বিনিয়োগকারীদের আশ্বাস

এই তিনটি ঘটনাকে যুক্ত করার কারণ হল, জিডিপি সংখ্যার বৃদ্ধিকে হাতিয়ার করে বিজেপি বাজারের দেশি ও বিদেশি, উভয় শেয়ার বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করেছে যে ভারতে রাজনৈতিক আর নীতিগত স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে। বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের মেয়াদ প্রায় শেষের পথে। এই পরিস্থিতিতে আর্থিক এবং জনসংখ্যা-সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকার দুঃসাহসিক সিদ্ধান্ত নেবে না-বললেই চলে। এমন অবস্থায় নানা ক্ষেত্রে উন্নয়ন বা অগ্রগতি লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির জয়ের ইঙ্গিত বলেই সংঘ এবং বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের মত। আর, এতেই প্রশ্ন উঠছে যে দ্রুত জিডিপি বৃদ্ধি কি কোনও সরকারকে পুনঃনির্বাচনে জিততে সাহায্য করতে পারে? অর্থাৎ প্রশ্ন হল, স্টক মার্কেটে উচ্চতর রিটার্ন কি ক্ষমতাসীনদের নির্বাচনী জয়ের ইঙ্গিত দেয়?

আর্থিক বৃদ্ধি এবং লোকসভা নির্বাচন

১৯৯১-১৯৯৯ সাল পর্যন্ত:-


১৯৯১ সাল থেকে ভারত জিডিপি বৃদ্ধির হারকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। কারণ, ওই সময় ভারতীয় অর্থনীতি এবং নীতি কাঠামো কেন্দ্রীয়ভাবে পরিকল্পিত অর্থনীতি থেকে উদারীকৃত অর্থনৈতিক কাঠামোয় প্রবেশ করেছিল। অর্থনৈতিক সংস্কারের পর ১৯৯৬ সালের মে মাসে নির্বাচন হয়েছিল। জিডিপি বাড়লেও কংগ্রেস ক্ষমতায় ফিরতে ব্যর্থ হয়। সেই সময় নতুন লোকসভা দুই বছর চলেছিল। তিন জন প্রধানমন্ত্রীকে দেখেছিল। তাঁরা হলেন অটলবিহারী বাজপেয়ী, এইচডি দেবগৌড়া, আইকে গুজরাল। এই সময়ও জিডিপি বেড়েছিল। কিন্তু, গুজরালের জোট ১৯৯৮ সালে ক্ষমতায় ফিরতে ব্যর্থ হয়। ১৯৯৮ সালের মার্চ থেকে ১৯৯৯ সালের অক্টোবরের মধ্যে ভারত আরও দুটি লোকসভা এবং বিজেপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোটের জয় দেখেছিল। এই সময়ও ভারতের জিডিপি বাড়ে।

আরও পড়ুন- মাত্র চার বছরের দল, সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে মিজোরামে ক্ষমতায়, কীভাবে ঘটল পালাবদল?

১৯৯৯-২০১৯ সাল পর্যন্ত:-

৯৯ সালের নির্বাচনের পর জিডিপি বৃদ্ধি কমে গিয়েছিল। কিন্তু, ২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় তা ফের বাড়তে শুরু করে। এনডিএ যাকে নির্বাচনে, 'ইন্ডিয়া শাইনিং' প্রচারে কাজে লাগিয়েছিল। কিন্তু, এনডিএ হেরে যায়। আবার, ২০০৯ সালে বিশ্বজোড়া আর্থিক মন্দার জেরে জিডিপি বৃদ্ধির হারে তীব্রভাবে কমে। তারপরও মনমোহন সিংয়ের সরকার ক্ষমতায় ফিরেছিল। আর, ২০১৪ সালে জিডিপি বাড়লেও দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের পতন ঘটে। ইউপিএ কার্যত ধ্বংস হয়ে যায়। আবার ২০০৯ সালের পুনরাবৃত্তি দেখেছিল ২০১৯। সেবার, অর্থাৎ গত লোকসভা নির্বাচনে জিডিপি কমলেও এনডিএ ফের ক্ষমতায় ফেরে। ২০১৪ সালের চেয়েও বেশি আসন নিয়ে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় ফেরেন। যার অর্থ, শক্তিশালী জিডিপি মানেই ভারতে পুনঃনির্বাচনের গ্যারান্টি নয়। গত তিন দশকে, জিডিপি বৃদ্ধির হার বাড়লেও ক্ষমতাসীনরা দায়িত্ব থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছে।

Share Market GDP BSE Modi Government
Advertisment