ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন সম্প্রতি পেশাদার আচরণের ওপর নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে। তার পরেই ডাক্তাররা ওই নির্দেশিকার একটি নিয়মের প্রতিবাদ করছেন। তা হল, একটি নির্দিষ্ট ব্র্যান্ড নামের পরিবর্তে প্রেসক্রিপশনে ওষুধের জেনেরিক নাম ব্যবহার। ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন, দেশের ডাক্তারদের বৃহত্তম সংগঠন। তারা একটি বিবৃতিতে বলেছে যে এই নতুন নির্দেশিকা মানা হলে তা হবে, 'রেলপথ ছাড়া ট্রেন চালানোর' মত ব্যাপার। এই ব্যাপারে চিকিৎসকদের বক্তব্য, জেনেরিক ওষুধের প্রচারের জন্য কোনও নীতি বাস্তবায়নের আগে প্রস্তুতকারকদের ওষুধের গুণগত মান নিশ্চিত করতে হবে।
নির্দেশিকা কী বলছে?
নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, চিকিৎসকরা প্রেসক্রিপশনে ওষুধের জেনেরিক নাম লিখতে পারবেন। উদাহরণ স্বরূপ, ডোলো বা ক্যালপোলের পরিবর্তে একজন ডাক্তারকে জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল লিখতে হবে। নির্দেশিকা বলছে, এভাবেই 'প্রত্যেক ডাক্তারকে সুস্পষ্টভাবে লেখা জেনেরিক নাম ব্যবহার করে ওষুধ লিখতে হবে।' এই অভ্যাসটি শুধুমাত্র থেরাপিউটিক ওষুধের জন্য শিথিল করা যেতে পারে (যে ওষুধের মাত্রার সামান্য পার্থক্য প্রতিকূল ফলাফলের দিকে নিয়ে যেতে পারে)। নির্দেশিকা বলছে যে জেনেরিক ওষুধগুলো ব্র্যান্ডেড ওষুধের চেয়ে গড়ে ৩০% থেকে ৮০% সস্তা। এভাবে জেনেরিক ওষুধের নাম প্রেসক্রিপশনে লিখলে স্বাস্থ্যসেবা খরচ কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন- প্রধানমন্ত্রীর স্বাধীনতা দিবসের ভাষণ, কেন লালকেল্লা থেকেই দেওয়া হয়?
এর অর্থ কী?
নতুন নির্দেশিকা ডাক্তারদের একটি ওষুধের নির্দিষ্ট ব্র্যান্ড লেখার অনুমতি দেয়নি। যার মানে ক্রেতা ফার্মাসিস্টের স্টকে থাকা একইজাতীয় অন্য যে কোনও ওষুধ কিনতে পারবেন। যদি একটি ফার্মেসিতে ওষুধের জেনেরিক সংস্করণ না-থাকে, সেখানে ব্র্যান্ডেড ওষুধ কিনতে ক্রেতাকে বাধ্য করানোর দায়িত্ব ফার্মাসিস্টের ঘাড়ে চলে যাবে। জেনেরিক ওষুধ বিক্রিতে তেমন লাভ থাকে না। তাই বহু ফার্মাসিস্টই জেনেরিক ওষুধ স্টক করেন না। এই ব্যাপারে দিল্লি মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতি ডা. অরুণ গুপ্তা বলেছেন, ওষুধ যতই ভালো হোক না-কেন, ভাল লাভের মার্জিন আছে, দোকানগুলো এমন ওষুধের প্রচারই বেশি করে। উপরন্তু, ডাক্তাররা বলছেন যে রোগীর কোন ওষুধ খাওয়া উচিত, এই ব্যাপারে সরকারি নির্দেশিকার জেরে তাঁদের মতামত ধাক্কা খাবে। ফলে, চিকিৎসার গুণমান তলানিতে ঠেকবে।