মঙ্গলবার রাত থেকে শুরু হওয়া সারা দেশ ব্যাপী লক ডাউনের ফলে ভারতের সবচেয়ে প্রান্তিক মানুষরা মহা সংকটের মুখে পড়েছেন। তবে নতুন এক গবেষণায় দেখা যাচ্ছে সরকারের আগ্রাসী পদক্ষেপ ছাড়া এই সংক্রমণের সংখ্যা ১৫ এপ্রিলে ৪৮০০ হতে পারে, এবং তার এক মাস পরে সংখ্যাটা পৌঁছতে পারে ৫৮,৬০০-য়।
জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়, মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় ও আরও কয়েকটি মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় এই গবেষণা হয়েছে। তবে এখানে যে পরিসংখ্যান ব্যবহার করা হয়েছে তা ১৬ মার্চ পর্যন্ত- অর্থাৎ এখানে এয়ারপোর্ট স্ক্রিনিং এবং কোয়ারান্টিন পদ্ধতি বা জনতা কার্ফিউ ও সারা দেশে লকডাউন চালু হবার পরের পরিসংখ্যান ধরা হয়নি।
সামাজিক দূরত্ব, ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা, ট্রেন ও বিমান বন্ধের ফলে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া আটকাবে।
গবেষণা বলছে এই কঠোর পদক্ষেপের ফলে সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা ব্যাপক কম আসবে এবং ১৫ মে-তে ৫৮,৬০০-র বদলে মাত্র ১৩৮০০ মানুষ সংক্রমিত হতে পারেন।
আরও পড়ুন, “ঐক্যবদ্ধ অনুশাসনের মাধ্যমেই করোনাপ্রতিরোধী লড়াই চালাতে হবে”
ওই গবেষণায় অবশ্য কী ধরনের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত সে সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। কিন্তু তাতে সামাজিক দূরত্ব, ট্রেন ও বিমান বন্ধের মত পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, যা না হলে ১৫ জুনে আক্রান্তর সংখ্যা ১.৩১ লক্ষে পৌছতে পারত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রাথমিক প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে কম করেই ধরা হয়েছে এই সংখ্যা। ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগান স্কুল অফ পাবলিক হেলথের এপিডেমিওলজির অধ্যাপক ভ্রমর মুখার্জি এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এক ইমেলে তিনি জানিয়েছেন এই গবেষণায় ২১ মার্চ পর্যন্ত প্রাপ্ত পরিসংখ্যান ব্যবহার করা হয়েছে এবং এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
তিনি জানিয়েছেন, এই গবেষণায় দেখা গিয়েছে ভারতে সংক্রমিত একজন ব্যক্তি গড়ে আরও দুজনের মধ্যে সংক্রমণ ঘটাতে পারেন।
চেন্নাইয়ের ইনস্টিট্যুট অফ ম্যাথমেটিকাল সায়েন্সের দুজন বিজ্ঞানীর এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে ভারতে একজন সংক্রমিত মানুষ গড়ে আরও ১.৭ জনকে সংক্রমিত করতে পারেন। সৌম্যা ঈশ্বরণ ও সীতাভ্র সিনহার ওই গবেষণায় অবশ্য সংক্রমণ ছড়ানোর দূরবর্তী কোনও সংখ্যা দেখানো হয়নি।
আরও পড়ুন, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখুন, মানসিক বিচ্ছিন্নতা নয়- বলছেন বিশেষজ্ঞ
অধ্যাপিকা ভ্রমর মুখার্জির কথায়, বহু জায়গায় কোভিড ১৯ তেমন কিছু নয় থেকে সম্পূর্ণ লকডাউন পরিস্থিতিতে যেতে মাত্র কয়েকদিন সময় লেগেছে। আমার মনে হয়, নজরদারির সঙ্গে অপেক্ষা করা, এবং বুদ্ধিমানের মত বিভিন্ন কার্যকরী কৌশল নেওয়াই আমাদের প্রয়োজন।
ওই গবেষণায় স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে এই হিসেবের বেশ কিছু অনিশ্চয়তার দিকও রয়েছে।