Durga Pujo 2024 Tarikh Tithi in Bangla: বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। তার মধ্যে সেরা পার্বণ হল দুর্গাপুজো। হিন্দু পঞ্চাঙ্গের সপ্তম মাসে এই উৎসব হয়। বাঙালির কাছে চার দিনের উৎসব হলেও, হিন্দুমতে এই উৎসবের মেয়াদ ১০ দিন। তার মধ্যে নয় দিন ধরে পালিত হয় নবরাত্রি। গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, এই উত্সবটি হয় সেপ্টেম্বর বা অক্টোবর মাসে।
জ্যোতিষশাস্ত্রে দুর্গাপূজার তাৎপর্য
দেবী দুর্গার উত্সব আসলে, মহিষাসুরের সঙ্গে দেবী দুর্গার যুদ্ধের ঘটনার স্মরণ। যাকে অশুভের বিরুদ্ধে শুভ শক্তির লড়াই বলেই মনে করা হয়। দেবী দুর্গার অপর নাম শক্তি। যার অর্থ দেবী হলেন শক্তি। তিনি এই দশ দিনে তাঁর ভক্তদের উৎসাহ প্রদান করেন। সৌভাগ্য উপহার দেন, সমৃদ্ধি দেন। জ্যোতিষশাস্ত্রে বলা হয়, দেবী দুর্গার পূজা করলে শুক্র শক্তি বৃদ্ধি পায়। শুক্র শক্তিশালী হওয়ায়, ব্যক্তি বৈবাহিক সুখ পান। শুধু তাই নয়, দেবী সাফল্যও দেন। ফলে, এই সময়ে গৃহীত যে কোনও প্রকল্প সাফল্যের শিখরে পৌঁছয়।
দুর্গাপূজা ২০২৪-এর তারিখ এবং মুহুর্ত
এই বছর, ৯ অক্টোবর, বুধবার পুজো শুরু হবে। ওই দিন মহাষষ্ঠী। ১৩ অক্টোবর, রবিবার, দশমী পর্যন্ত চলবে পুজো।
একনজরে দেখে নেওয়া যাক এবারের দুর্গাপুজোর সূচি:-
মহাষষ্ঠী- ২০২৪ সালের ৯ অক্টোবর, বুধবার, দুর্গাষষ্ঠী। ওই দিন হয় বিল্ব নিমন্ত্রণ, কল্পারম্ভ, অকাল বোধন, আমন্ত্রণ এবং আধিবাস।
মহাসপ্তমী- ২০২৪ সালের ১০ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার, দুর্গা সপ্তমীর পুজো, কলাবউ পূজা।
মহাষ্টমী- ২০২৪ সালের ১১ অক্টোবর, শুক্রবার, দুর্গাষ্টমীর পুজো, কুমারী পূজা, সন্ধি পূজা।
মহানবমী- ২০২৪ সালের ১২ অক্টোবর, শনিবার, মহানবমীর পুজো, দুর্গার কাছে বলিদান, নবমীর হোম।
বিজয়া দশমী- ২০২৪ সালের ১৩ অক্টোবর, রবিবার, বিজয়াদশমী, সিঁদুর উৎসব, বিসর্জন।
দুর্গাপূজার বিশেষ তিথি, কী দিয়ে হয় পুজো
প্রতিপদ তিথি- উৎসবের প্রথম দিনে দেবী শৈলপুত্রীর পূজা হয়। ওই দিন ঘটস্থাপনা করা হয়। ওই দিনে দেবীকে দেশি ঘিয়ের লাড্ডু নিবেদন করা হয়। দেবী শৈলপুত্রী দেবী পার্বতীর অবতার এবং তাঁর হাতে থাকে ত্রিশূল।
দ্বিতীয়া তিথি- দেবী পার্বতী ভগবান শিবকে স্বামীরূপে পাওয়ার জন্য তপস্যা করেছিলেন। দেবীর এই রূপ ব্রহ্মচারিণী নামে পরিচিত। ভক্তরা এই দিনে দেবীকে ফল এবং চিনি দিয়ে পূজা দেন।
তৃতীয়া তিথি- দেবীর তৃতীয় অবতার হলেন চন্দ্রঘণ্টা। তিনি দেবীর উগ্রতম অবতার। তাঁর রাগের জন্য দেবীর এই রূপ বিশেষ পরিচিত। ভক্তরা এই দিনে দেবীকে ক্ষীর পরিবেশন করেন।
চতুর্থ তিথি- দেবী এই রূপে কুষ্মাণ্ডা নামে পরিচিত। এই রূপে দেবী সব গ্রহের ধারক এবং বাহক। দেবীর এই রূপকে নৈবেদ্য হিসেবে মালপোয়া দেওয়া হয়।
পঞ্চমী তিথি- পঞ্চমী তিথিতে দেবীকে স্কন্দমাতা রূপে পূজা করা হয়। স্কন্দমাতা, দেবী দুর্গার পঞ্চম অবতার। এই দিনে, দেবীর কাছে ভক্তরা সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রার্থনা করেন। দেবীর কাছে ভোগ হিসেবে কলা নিবেদন করা হয়।
ষষ্ঠী তিথি- এই তিথিতে দেবী কাত্যায়নীকে মধু নিবেদন করা হয়। দেবী এই রূপে তাঁর ভক্তদের মধুর মতো মিষ্টি জীবন উপহার দিয়ে আশীর্বাদ করেন।
সপ্তমী তিথি- সপ্তমী তিথিতে দেবীকে কালরাত্রি রূপে পূজা করা হয়। এই রূপে দেবী সকলকে খারাপ হওয়া থেকে রক্ষা করেন। ভক্তরা দেবীকে এই রূপে গুড় নিবেদন করেন।
অষ্টমী তিথি- এই তিথিতে দেবী মহাগৌরীর পূজা করা হয়। দেবীর এই রূপ হিন্দু পুরাণ অনুসারে তপস্যা এবং অধ্যবসায়ের প্রতীক। এই রূপে দেবীকে নারকেল এবং বিশেষ ভোগ দেওয়া হয়।
নবমী তিথি- নবমী তিথিতে দেবীকে সিদ্ধিদাত্রী রূপে পূজা করা হয়। তিনি দেবী দুর্গার নবম রূপ এবং জ্ঞানের প্রতীক। দেবীকে ভোগ হিসেবে তিল নিবেদন করা হয়।
দশমী তিথি- এই তিথিতে দেবী দুর্গার বিসর্জন হয়। দেবীর ঘট এবং প্রতিমা বিসর্জন হয়। এই তিথির পর দুর্গাপূজা উৎসবের সমাপ্তিও ঘোষিত হয়।
আরও পড়ুন- চাঁদে মিলল অন্য মানুষের সন্ধান! তোলপাড় করা বিরাট সাফল্যের দাবি এবার জ্যোতির্বিজ্ঞানের
কোথায় হয় দুর্গাপুজো?
দুর্গাপূজা পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও অসম, ওড়িশা, বিহার, ত্রিপুরা এবং ঝাড়খণ্ডে জাঁকজমকের সঙ্গে পালিত হয়। এখন ভারতের অন্যান্য রাজ্যের পাশাপাশি বিদেশেও সাড়ম্বরে পালিত হচ্ছে দুর্গাপুজো।