লকডাউন আছে তবে আনলকের প্রাধান্য বেশি। দেশের অর্থনীতি ফেরাতে কর্মক্ষেত্র খুলে দিতে বাধ্য হয়েছে দেশ। আর এর ফলেই জুলাই মাসে অবিশ্বাস্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে করোনার প্রকোপ। ১১ লক্ষ ছুঁয়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। এক মাসেই দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা।
পরিসংখ্যান বলছে জুলাই মাসে গড়ে প্রতিদিন দেশে করোনা থাবায় পড়েছেন ৩৫ হাজার জন। গত তিন দিনে সেই সংখ্যা ছুঁয়েছে ৫০ হাজার। প্রতিদিনই আগের দিনের চেয়ে রেকর্ড তৈরি হয়েছে। এই কারণ যে লকডাউন তুলে নেওয়া তা বলাই বাহুল্য। পাশাপাশি এটাও ঠিক ভারতে আগের থেকে করোনা পরীক্ষা হচ্ছে অনেক বেশি। জুনে যেখানে পরীক্ষা হয়েছে ৮৮ লক্ষ, জুলাই মাসে কোভিড পরীক্ষা হয়েছে ১কোটিরও বেশি। বৃহস্পতিবার করোনা টেস্টে রেকর্ড তৈরি হয়েছিল। একদিনে পরীক্ষা হয়েছিল সাড়ে ছ'লক্ষ। তবে করোনার যেরকম বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে সেখানে একদিনে ১০ লক্ষ করোনা পরীক্ষার দিকে জোর দিচ্ছে সরকার।
দেশের করোনা পরিসংখ্যান
হঠাৎ এমন বাড়বাড়ন্তের কারণ কী?
করোনার প্রাদুর্ভাব প্রথম থেকেই ছিল। প্রাথমিকভাবে পরীক্ষার সংখ্যা কম হওয়ায় সেই সংখ্যা কম ছিল। কিন্তু এখন পরীক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় করোনা আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যাও বাড়ছে। যা স্বাভাবিক। সংক্রামিত বেশিরভাগের মধ্যেই এই রোগের কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছিল না। তাই সনাক্ত করা অসম্ভব ছিল। তবে যদি পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানোয় এর মধ্যে অনেকগুলি অ্যাসিম্পটোমেটিক কেসও এখন সনাক্ত করা যাচ্ছে। এর ফলে রোগের বিস্তারকে নির্ণয় করে তা রুখতে পারা সম্ভব হবে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।
আরও পড়ুন, করোনা টেস্টের ভুল রিপোর্টে বিপদ বাড়ছে! সত্যিই কি আপনি ‘সুস্থ’?
যে হারে মৃত্যু বাড়ছে দেশের প্রতিটি রাজ্যে, সেই প্রেক্ষাপটে করোনার গোষ্ঠী সংক্রমণ নিয়েই এখন সকলে চিন্তিত। র হবে নাই বা কেন? যে কোনও অতিমারীর ক্ষেত্রে ভয়ের জায়গাটাই এই গোষ্ঠী সংক্রমণ। আর আশঙ্কাকে সত্যি করে করোনা থাবা থেকে নিস্তার পাচ্ছে না কোনও রাজ্যেই। একদিনে করোনায় আক্রান্ত সংখ্যা এবং মৃত্যু দেখিয়ে দিচ্ছে ‘কমিউনিটি ট্রান্সমিশন’কে অস্বীকার করার উপায় নেই কোনও রাজ্যের।
যদিও বিজ্ঞানী-গবেষক মহলের মত দেশে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়েছে অনেক আগে থেকেই। তাঁদের মত মানুষের কাছ থেকে বিষয়ে লুকিয়ে আদপে ক্ষতিই ডেকে আনছে দেশের সরকার। ওয়াকিবহাল মহলের মতে মানুষের মনে স্বচ্ছতা তৈরি না হওয়ার কারণে বিষয়টি নিয়েও কেউ ভাবছে না, সুরক্ষাও নিচ্ছে না। তাই অনায়াসেই গোষ্ঠীতে নিজের দাপট কায়েম করতে পারছে করোনা।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন