বিশ্ববাজারে চালের দাম বাড়ছে। গমের দাম কমছে। শিকাগো বোর্ড অফ ট্রেড ফিউচার এক্সচেঞ্জে গমের দাম গত ৮ মার্চ, ২০২২-এ ছিল টনপ্রতি ৫০১ ডলার, যা সর্বোচ্চ। ইউক্রেনের ওপর রাশিয়া হামলা চালানোর পর গমের দাম ভীষণ বেড়ে গিয়েছিল। রাষ্ট্রসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার খাদ্য মূল্যসূচক অনুযায়ীও ২০২২ সালের মার্চে গমের দাম রেকর্ড বেড়েছিল।
বেড়েছে গমের জোগান
রাশিয়া থেকে বর্তমানে গম রফতানি হচ্ছে। যার ফলে, আন্তর্জাতিক বাজারে গমের প্রয়োজনীয়তা কিছুটা হলেও মিটেছে। এই ব্যাপারে রোলার ফ্লাওয়ার মিলার্স ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ার সভাপতি এস প্রমোদ কুমার বলেছেন, 'বাজারে গমের ঘাটতি মিটেছে। তার ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দাম কমেছে। সরকারও মজুত গমকে খুব ভালোভাবে ব্যবহার করছে।' গণবণ্টন ব্যবস্থায় বাজারে বিনামূল্যে অথবা প্রায় বিনামূল্যে চাল এবং গম দেওয়া হচ্ছে। বাজারে গমের দাম কমাতে ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার গুদাম থেকে গম বণ্টন করা হচ্ছে। প্রমোদ কুমার এই প্রসঙ্গে বলেন, 'সরকার যদি ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে সাপ্তাহিক খোলা বিক্রয় ০.৫ মিলিয়ন টন বাড়ায়, পাশাপাশি প্রতিমাসে গণবণ্টন ১.২-১.৩ মিলিয়ন টন বজায় রাখে, তারপরও ১ এপ্রিল এফসিআইয়ের গুদামগুলিতে ৭.০-৭.৫ মিলিয়ন টন গম মজুত থাকবে। তার মধ্যেই নতুন ফসল বাজারে চলে আসবে।'
সাবধানী কেন্দ্র
তার মধ্যেই সাবধানী কেন্দ্রীয় সরকার গমের আমদানি সহজ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। বিশেষ করে ৪০% আমদানি শুল্ক কমানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে, কৃষকদের বাধায় সেটা সম্ভব না-ও হতে পারে। বিশেষ করে বাধা আসতে পারে উত্তর এবং মধ্য ভারতের কৃষকদের থেকে। আগামী বছর লোকসভা নির্বাচন। তার আগে অবশ্য কেন্দ্রীয় সরকার কৃষকদের মোটেও ক্ষুব্ধ করতে চাইবে না।
চাল আমদানিতে ছাড়
চালের ক্ষেত্রে আমদানিতে নমনীয়তা আনা বা ছাড় দেওয়ার কোনও চেষ্টাই অবশ্য চালাচ্ছে না সরকার। কারণ, ভারত বিশ্ব একনম্বর চাল রফতানিকারক দেশ। বর্তমানে বিশ্বে চালের দাম একবছর আগের চেয়ে বেশি। তার মধ্যেই মোদী সরকার ২০২৩ সালের জুলাই থেকে সমস্ত নন-বাসমতি সাদা চালের রফতানি নিষিদ্ধ করেছে। শুধুমাত্র বাসমতি এবং পার্বোল্ড নন-বাসমতি চালের চালানের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন- ভারতীয় বংশোদ্ভূত মন্ত্রীর চাকরি খেলেন ঋষি সুনাক, কিন্তু কেন?
উপকৃত করেছে পাকিস্তানকে
আন্তর্জাতিক চালের বাজারে ভারতের অবস্থান ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়ার পাম অয়েল বা ইউক্রেন এবং রাশিয়ার সূর্যমুখী তেল রফতানির মতো। এই বৃহৎ রফতানিকারকদের সরবরাহের ব্যাঘাত শুধুমাত্র বিশ্ববাজারে দ্রব্যের দামই বাড়ায় না। রীতিমতো প্রভাবও ফেলে। তার মধ্যেই ভারতের চাল রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা পাকিস্তানকে উপকৃত করেছে। তাদের চাল রফতানি বাড়তে চলেছে। ২০২২-২৩ সালে পাকিস্তানের চাল রফতানির পরিমাণ ছিল ৩.৬ মিলিয়ন টন। সেটাই বেড়ে হতে চলেছে ৫ মিলিয়ন টন।