Advertisment

ইডেনে দিনরাতের টেস্ট: সন্ধের মুখে বেশি সুইং করবে গোলাপি বল

ইডেন গার্ডেন্সে জাতীয় ইতিহাস তৈরি হতে চলেছে ২২ নভেম্বর। সেদিন ভারতের প্রথম দিন রাতের টেস্ট ম্যাচ শুরু হবে। গোলাপি বল কী ফ্যাক্টর হবে, তা উঠে এল ইডেনের পিচ কিউরেটর সুজন মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথোপকথনে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

২০১৬ সালে সিএবি সুপার লিগের ফাইনালে মোহনবাগান বনাম ভবানীপুরের খেলা হয়েছিল দিন রাতের, গোলাপি বলে, একাধিক দিন ধরে। সে অভিজ্ঞতাই কাজে লাগাতে চলেছেন ইডেন গার্ডেন্সের পিচ কিউরেটর সুজন মুখোপাধ্যায়। ভারতের প্রথম দিন-রাতের টেস্ট ২২ নভেম্বর শুরু হতে চলেছে ক্রিকেটের নন্দন কাননে।

Advertisment

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে আলাপচারিতায় সুজন মুখোপাধ্যায় বললেন প্রয়োজনীয়তার কথা, বললেন কন্ডিশনের কথাও।

গোলাপি বলের টেস্টের জন্য পিচে কি ভাল পরিমাণ ঘাস রাখা প্রয়োজন?

তেমনটা আবশ্যক নয়। দেশের অন্যতম জীবন্ত পিচ ইডেন গার্ডেন্সে রয়েছে, আমরা এখানে প্রতিটি টেস্টের জন্যই একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ ঘাস রাখি। সেটুকু রাখা হবে। অতিরিক্ত কিছুর প্রয়োজন নেই।

ব্যাখ্যা: গোলাপি বলের রঙ ধরে রাখার জন্য কিছুটা ঘাস প্রয়োজন হয়। ইডেনের সবুজ আউটফিল্ড সে ব্যাপারে সাহায্য করবে।

সুপার লিগের ফাইনালে গোলাপি কোকাবুরা বলে খেলা হয়েছিল। লাল বলের থেকে সেটা একটু বেশি সুইং করেছিল, তাই না?

হ্যাঁ, গোলাপি বল প্রকৃতিগত ভাবেই বেশি সুইং করে।

ব্যাখ্যা: গোলাপি বলের সঙ্গে লাল বলের তফাৎ হল, গোলাপি বলে অতিরিক্ত পালিশ থাকে যা রং ধরে রাখতে সাহায্য করে, যাতে ফ্লাডলাইটের আলোর নিচে বল দেখতে প্লেয়ারদের বেশি সুবিধা হয়। অতিরিক্ত পালিশের জন্য বল একটু বেশি সুইং করে। এবং অবশ্যই গোলাপি বল, মেঘলা পরিবেশে লাল বলের চেয়ে বেশি সুইং করে।

বলা হয়, গোলাপি বল তাড়াতাড়ি নরম হয়ে যায়। তাহলে সন্ধের দিকে বোলারদের একটু বেশি সমস্যা হবে, বিশেষ করে কলকাতায় নভেম্বরের শিশিরের জন্য।

আমার তেমনটা মনে হয় না। টেস্ট ম্যাচ বেলা ১টায় শুরু হবে, সন্ধের পর খেলা হবে মাত্র দুই বা আড়াই ঘণ্টা। হ্যাঁ নভেম্বর মাসে সূর্যাস্ত তাড়াতাড়ি হয়, কিন্তু আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি শিশির সন্ধে সাড়ে সাতটার আগে খুব একটা ফ্যাক্টর হবে না। বিরতির সময়ে দড়ি টেনে শিশির সরানোর মত যথেষ্ট লোকবল আমাদের রয়েছে, শিশির কমানোর জন্য আমরা স্প্রে-ও ব্যবহার করে থাকি।

ব্যাখ্যা: শিশির একটা ফ্যাক্টর। এবং সে কারণেই ব্যাটিং টিমেগুলো শেষ সেশনে ডিক্লেয়ার করে না, কারণ বল প্রায় সাবানে পরিণত হয়, বোলারদের জীবন অসহনীয় হয়ে ওঠে।

দিন-রাতের টেস্টে গোধূলির সময়টায় ব্যাট করা শক্ত হয়ে ওঠে।

ওই সময়টায় বল একটু বশে নড়াচড়া করে, যে কারণে ব্যাটসম্যানরা সামান্য হলেও সমস্যার মুখে পড়ে। তার পরেও একজন টেস্ট ব্যাটসম্যানের কাছে এই সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠবে এমনটাই প্রত্যাশিত।

ব্যাখ্যা: গোধূলির সময়ে সন্ধে নামে, ফ্লাডলাইট জ্বলতে শুরু করে, এবং পিচের ঠিক ওপরের বাতাস  স্থির হয়ে য়ায়, যার ফলে অতিরিক্ত সুইং হয়। পরিসংখ্যান বলছে, দিন-রাতের ম্যাচে প্রতি সেশনে গড়ে তিনটি উইকেট পড়ে।

দিন রাতের ম্যাচে স্পিনাররা কি কার্যকর?

কেন নয়? সুপার লিগের ম্যাচ থেকে আমি যে টুকু দেখেছি, বেশ কিছু স্পিনার খেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ভালই উইকেটে পেয়েছেন।

ব্যাখ্যা: ভারত যেহেতু ট্র্যাডিশনালি স্পিন নির্ভর দল, দিন-রাতের টেস্টে হোম অ্যাডভান্টেজ তারা ততটা না-ও পেতে পারে। কিন্তু ভারতের হাতে আবার তাদের অন্যতম এক্স ফ্যাক্টর জসপ্রীত বুমরা ছাড়াই শ্রেষ্ঠ পেস আক্রমণও রয়েছে। মহম্মদ শামি, উমেশ যাদব এবং ইশান্ত শর্মা সম্প্রতি শেষ হওয়া দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে সফল হয়েছেন। মনে রাখতে হবে, যে সব জায়গায় খেলা হয়েছে, সেসব ভেনুতে কিছুটা হলেও পিচ ছিল ব্যাটিং সহযোগী।

২০১৭ সালে অ্যাডিলেডে প্রথম দিনরাতের অ্যাশেজ টেস্টে অফ স্পিনার নাথান হল ৬ উইকেট পেয়েছিলেন।

এসব সত্ত্বেও দিন-রাতের টেস্টে দুজন স্পিনার খেলানো বিলাসিতা হয়ে যাবে এবং কন্ডিশনের কারণেই ভারতের টিম ম্যানেজমেন্ট প্রথম একাদশে তিনজন পেসার ও একজন স্পিনার রাখতে চাইতে পারেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে পাঁচজন স্পেশালিস্ট বোলার খেলিয়েছিল। ইডেনে একজন বোলারের বিনিময়ে একজন অতিরিক্ ব্যাটসম্যান সুযোগ পেতে পারেন।

ক্রিকেটের মহান অনিশ্চয়তার কথা মাথায় রাখলেও ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ক্লাসের পার্থক্য বিশাল। গত তিন বছর ধরে ভারতে এক নম্বর টেস্ট দল। সেখানে বাংলাদেশের স্থান ৯ নম্বরে। তার ওপর আবার তাদের হয়ে খেলতে পারবেন না তামিম ইকবাল এবং শাকিব আল হাসান। বাংলাদেশের তেমন কোন দ্রুতগতির বোলার নেই। তাদের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে লড়াইয়ে থাকা।

Test cricket
Advertisment