Advertisment

বিশ্লেষণ: নির্বাচনী ইস্তাহারের প্রতিশ্রুতি ও আইনি বিধি

নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণের ধার প্রায় কোনও রাজনৈতিক দলই ধারে না, এবং ক্ষমতায় আসার পর ইস্তেহার থেকে সরে যাবার জন্য প্রায়শই তারা সমালোচিত হয়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Election Manifesto, BJP, Congress

২১ অক্টোবর হরিয়ানা ও মধ্যপ্রদেশে বিধানসভা ভোট

হরিয়ানা এবং মহারাষ্ট্রে ২১ অক্টোবর বিধানসভা ভোট। এ দুই রাজ্যে এখন রাজনৈতিক দলগুলির নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশের মরশুম।

Advertisment

কংগ্রেস-এনসিপি জোট মহারাষ্ট্রে তাদের ইস্তাহার প্রকাশ করেছে এ সপ্তাহের গোড়ায় এবং শুক্রবার হরিয়ানা প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি তাদের সংকল্প পত্র প্রকাশ করেছে। ইস্তেহার কতটা জরুরি? এগুলোকে কতটা সিরিয়াসলি নেওয়া উচিত?

মোটর উপর এ শুধু কথার কথা

অনেক দিক থেকেই ইস্তাহার এক আনুষ্ঠানিকতামাত্র এবং তার প্রকাশ হল রাজনৈতিক দলগুলির প্রচারের এক ফোটো সেশন। প্রায়ই সেসব প্রকাশ করতে দেরি হয়ে যায়, সেগুলি পড়ে নিয়ে তার ভিত্তিতে ভোটারদের পছন্দ করার সুযোগ বা সময় কোনওটাই থাকে না।

আরও পড়ুন, বিশ্লেষণ: মোদী-জিনপিং বৈঠক – কাকে বলে ঘরোয়া সম্মেলন?

তবে ভারতের ভোটার চরিত্র অনেকটাই সহজাত, সম্প্রদায়, জাত বা ব্যক্তির প্রতি আনুগত্য নির্ভর। আবেগহীন কাটাছেঁড়ার মাধ্যমে পছন্দ নির্মাণ করার ব্যাপার এখানে খুবই সীমিতা।

নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণের  ধার প্রায় কোনও রাজনৈতিক দলই ধারে না, এবং ক্ষমতায় আসার পর ইস্তেহার থেকে সরে যাবার জন্য প্রায়শই তারা সমালোচিত হয়।

এর কারণ হল ইস্তেহার এমন কোনও নথি নয় যা আইনগতভাবে বলবৎ করতে হবে। ২০১৫ সালে ভারতের প্রধান বিচারপতি এইচ এল দাত্তু এবং বিচারপতি অমিতাভ রায় এ ব্যাপারে আইনজীবী মিথিলেশ কুমার পাণ্ডের আনা আবেদন গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন, এবং বলেন, নির্বাচনী ইস্তাহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালন না করার জন্য রাজনৈতিক দলকে দায়ী করার কোনও সংস্থান আইনে নেই।

কিন্তু গাইডলাইন রয়েছে

২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নির্বাচন কমিশন আদর্শ আচরণবিধিতে নির্বাচনী ইস্তাহার নিয়ে গাইডলাইন যোগ করে।

এস সুব্রমণিয়াম বালাজি বনাম তামিলনাড়ু সরকার এবং অন্যান্য (২০১৩ জুলাই) মামলায় পি শতশিবম এবং রঞ্জন গগৈয়ের বেঞ্চ বলে যে বিনামূল্যে কোনও কিছু দেওয়া নিঃসন্দেহে সমস্ত মানুষকে প্রভাবিত করা এবং তার ফলে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোটের মূল বহুলাংশে নাড়িয়ে দেওয়ার শামিল।

আরও পড়ুন, বিশ্লেষণ: সরকারি কর্মীদের অতিরিক্ত মহার্ঘভাতা কি অর্থনীতিকে সাহায্য করবে?

নির্বাচনী ইস্তাহারের বিষয়বস্তুতে সরাসরি চালনা করার কোনও আইন না থাকলেও আদালত নির্বাচন কমিশনকে রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে আলোচনাসাপেক্ষে গাইডলাইন তৈরির নির্দেশ দেয়।

আদর্শ আচরণবিধিতে সংযুক্তি

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর নির্বাচন কমিশন জাতীয় ও রাজ্যভিত্তিক দলগুলির সঙ্গে মিলিত হয়। এরপর আদর্শ আচরণবিধির অষ্টম অংশে কিছু গাইডলাইন দেয় কমিশন।

১) নির্বাচনী ইস্তাহারে সংবিধানের আদর্শ এবং নীতির বিরোধী কিছু থাকতে পারবে না এবং আদর্শ আচরণবিধির স্পিরিটের সঙ্গে তাকে সঙ্গতিপূর্ণ থাকতে হবে।

২) নীতি অনুসারে সংবিধানে যেহেতু নাগরিকদের জন্য বিভিন্ন কল্যাণমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি স্বীকৃত ফলে নির্বাচনী ইস্তাহারের এ ধরনের কল্যাণমূলক ব্যবস্থাগ্রহণের প্রতিশ্রুতি নিয়ে কোনও আপত্তি নেই। তবে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার শুদ্ধতা খর্ব করতে পারে বা ভোটারদের অন্যায্যভাবে প্রভাবিত করতে পারে এমন কোনও প্রতিশ্রুতিদান রাজনৈতিক দলগুলির এড়িয়ে চলতে হবে।

৩) স্বচ্ছতার স্বার্থে এবং প্রতিশ্রুতির বিশ্বাসযোগ্যতার প্রয়োজনে ইস্তাহারে বর্ণিত প্রতিশ্রুতির যৌক্তিকতার প্রতিফলন থাকা প্রয়োজন এবং সে জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ কোথা থেকে আসবে তারও ইঙ্গিত থাকা দরকার। যে ধরনের প্রতিশ্রুতি পূরণ করা সম্ভব তার ভিত্তিতেই ভোটারদের আস্থা অর্জন করা উচিত।

আরও পড়ুন, বিশ্লেষণ: নাগপুরে ঠিক কী কী বলেছেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত?

ইস্তেহারের নিষেধাজ্ঞা কাল

নির্বাচনী ইস্তাহার নির্বাচন চলাকালীন কখন প্রকাশ করা যাবে না, তারও গাইডলাইন রয়েছে-

১) এক দফা নির্বাচনের সময়ে, ১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ১২৬ নং ধারানুযায়ী বর্ণিত নিষেধাজ্ঞা পর্বে ইস্তাহার প্রকাশ করা যাবে না।

২) একাধিক দফার নির্বাচনে ওই একই আইনের একই ধারার সমস্ত দফার ভোটপর্বের নিষেধাজ্ঞা পর্বে নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশ করা যাবে না।

জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ১২৬ ধারায় নিষেধাজ্ঞা পর্বের অর্থ, নির্বাচন শেষ হবার সময়ের ৪৮ ঘণ্টা আগে থেকে শুরু হওয়া সময়, অর্থাথ প্রচারপর্ব শেষ হবার সময়।

Read the Full Story in English

bjp CONGRESS
Advertisment