Emergency imposition, first non-Congress Govt: ১৯৭৭ সালের লোকসভা নির্বাচন দেশের প্রথম অ-কংগ্রেসি সরকারকে ক্ষমতায় এনেছিল। ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পরে ইন্দিরা গান্ধীর জনপ্রিয়তা গুজরাটে ছাত্রদের আন্দোলন এবং জয়প্রকাশ নারায়ণের 'সম্পূর্ণ বিপ্লব'-এর আহ্বানে বড় ধাক্কা খেয়েছিল। ১৯৭৫ সালে, এলাহাবাদ হাইকোর্ট ১৯৭১ সালে নির্বাচনী অনিয়মের কারণে ইন্দিরা গান্ধীর নির্বাচিত হওয়াকে বাতিল করে। জবাবে ইন্দিরা গান্ধী জরুরি অবস্থা জারি করেন। জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়ার পর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জনগণ ইন্দিরা গান্ধীকে শোচনীয়ভাবে পরাজিত করে। এই সময় মোরারজি দেশাই প্রধানমন্ত্রী হন।
ক্যাম্পাসে অস্থিরতা
১৯৭৩ সালের ডিসেম্বরে, আহমেদাবাদের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্ররা হস্টেল মেসের চার্জ বৃদ্ধির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করেন। এই প্রতিবাদ, দ্রুত গুজরাটের বাকি অংশ এবং অন্যান্য ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়ে। এই প্রতিবাদ শ্রমিক, শিক্ষক ও সমাজের অন্যান্য শ্রেণির মানুষজনের সমর্থন পায়। যা, অর্থনৈতিক দুর্দশা এবং দুর্নীতি-বিরোধী আন্দোলনের রূপ নেয়।
নির্বাসন ভেঙে রাজনীতিতে জয়প্রকাশ
১৯৭৪ সালের মার্চ মাসে, বিহারের ছাত্র বিক্ষোভকারীরা তাঁদের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য সমাজতান্ত্রিক নেতা জয়প্রকাশ নারায়ণের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেই সময় জয়প্রকাশ নারায়ণের বয়স ছিল ৭২ বছর। জয়প্রকাশ নারায়ণ প্রথম লোকসভা নির্বাচনের পরে নিজেই রাজনৈতিক নির্বাসন বেছে নিয়েছিলেন। ১৯৭৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী চিমনভাই প্যাটেল, ছাত্র-যুবদের আন্দোলনের জেরে পদত্যাগ করেছিলেন। এই নতুন ধারার রাজনীতিই নতুন করে রাজনীতিতে জয়প্রকাশ নারায়ণকে উদ্বুদ্ধ করেছিল। ১৯৭৪ সালের ৫ জুন, পাটনায় একটি সমাবেশে জয়প্রকাশ নারায়ণ 'পূর্ণাঙ্গ বিপ্লব'-এর আহ্বান জানিয়েছিলেন। যা সর্বব্যাপী রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, বৌদ্ধিক, শিক্ষাগত এবং আধ্যাত্মিক পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিল।
ইন্দিরা গান্ধীর নির্বাচন যেভাবে বাতিল হয়েছিল
১৯৭১ সালের নির্বাচনে, ইন্দিরা গান্ধী রায়বরেলি আসনে তাঁর সমাজতান্ত্রিক দলের প্রতিদ্বন্দ্বী রাজ নারাইনকে ১ লক্ষ ১১ হাজারেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছিলেন। রাজ নারাইন এলাহাবাদ হাইকোর্টে নির্বাচনী পিটিশন দাখিল করেন। ওই ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করেন। ১২ জুন, ১৯৭৫-এ, এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি জগমোহনলাল সিনহা ওই নির্বাচনী ফলাফল বাতিল করেন। তিনি রাজ নারাইনকে বিজয়ী ঘোষণা করেন। হাইকোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে ইন্দিরা গান্ধী সুপ্রিম কোর্টে যান। ১৯৭৫ সালের ২৪ জুন, বিচারপতি ভিআর কৃষ্ণ আইয়ার হাইকোর্টের নির্দেশই বহাল রাখেন। কিন্তু, তাঁর আপিলের সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ইন্দিরা গান্ধীকে প্রধানমন্ত্রী পদে থাকার অনুমতি দেন।
আরও পড়ুন- প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর নাতিকে ধরতে ফাঁদ সিবিআইয়ের, বিদেশ থেকে টেনে আনার চেষ্টা শুরু
জরুরি অবস্থা জারি
প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে ১৯৭৫ সালের ২৫ জুন সন্ধ্যায়, রাষ্ট্রপতি ফখরুদ্দিন আলি আহমেদ সংবিধানের ৩৫২ (১) অনুচ্ছেদের আওতায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন। 'যুদ্ধ বা বহিরাগত আগ্রাসন' অথবা 'অভ্যন্তরীণ গোলযোগ' জাতির নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠলে, জরুরি অবস্থা জারি করার আইন সেই সময় ছিল। জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের পর ১৯৭৮ সালে ৪০তম সংবিধান সংশোধনীতে 'অভ্যন্তরীণ গোলযোগ' শব্দটিকে বাতিল করে 'সশস্ত্র বিদ্রোহ' শব্দটি যুক্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ, 'যুদ্ধ বা বহিরাগত আগ্রাসন' এবং 'সশস্ত্র বিদ্রোহ' না হলে জরুরি অবস্থা জারি করা যাবে না।