Debate over Covid death: সায়েন্স অ্যাডভান্সেস জার্নালে প্রকাশিত এক নতুন গবেষণাপত্র এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে কোভিড-১৯ মহামারির প্রথম বছর, ২০২০ সালে ভারতে আনুমানিক ১১.৯ লক্ষ অতিরিক্ত মৃত্যু ঘটেছিল। সরকার অবশ্য তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এই দাবিকে 'বিভ্রান্তিকর মূল্যায়ন' বলে দাবি করেছে। একইসঙ্গে সরকার বলেছে যে, গবেষণাপত্রের দাবিটি 'পদ্ধতিগতভাবে ত্রুটিযুক্ত' এবং এর দাবি 'গ্রহণযোগ্য নয়।'
কেন কোভিড মৃত্যু নিয়ে বিতর্ক চলছে?
কোভিড-১৯ এ মৃত্যুর পরিসংখ্যান নিয়ে বিতর্ক বেশ কিছুদিন ধরেই চলছে। সাম্প্রতিক বিতর্কটি তার নবতম অধ্যায়। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, ২০২০ সালে কোভিড-১৯ এ মারা গিয়েছেন ১.৪৯ লক্ষ জন। আর, সামগ্রিকভাবে মারা গিয়েছেন প্রায় ৫.৩৩ লক্ষ জন। তবে মহামারি চলাকালীন এবং পরে প্রকাশিত প্রতিটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে যে, মৃতের প্রকৃত সংখ্যা সরকারি পরিসংখ্যানের অন্তত পাঁচ থেকে দশ গুণ বেশি। ২০২২ সালের এক বিশ্বব্যাপী গবেষণায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) অতিরিক্ত মৃত্যুর পরিসংখ্যান সম্পর্কে বলেছে, অতিমারির বছরগুলোতে (২০২০ এবং ২০২১), ভারতে প্রায় ৪৭ লক্ষ অতিরিক্ত মৃত্যু ঘটেছিল। সরকার অবশ্য তখনও এই পরিসংখ্যানের তীব্র বিরোধিতা করেছিল।
কেন অতিরিক্ত মৃত্যুর দাবি করা হচ্ছে?
কোভিড-১৯ এর সময়ে বিশ্বের সর্বত্র অতিরিক্ত মৃত্যু ঘটেছিল। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতে প্রতিবছর ৮২ লক্ষ থেকে ৮৬ লক্ষ লোক মারা যান। এর বেশি মৃত্যু হলে, সেটা কোভিড-১৯ এর কারণে হয়েছে বলেই ধরে নেওয়া যেতে পারে। ভারতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা স্যাম্পল রেজিস্ট্রেশন সার্ভে (এসআরএস) থেকে জানা যায়। এই সার্ভে ভারতের রেজিস্ট্রার জেনারেল অফিস প্রকাশ করে। এছাড়াও আইন দ্বারা বাধ্যতামূলক জন্ম ও মৃত্যুর নথিভুক্তিকরণ অর্থাৎ সরকারি রেজিস্ট্রারের কাছে জন্ম ও মৃত্যুর সংখ্যা নথিভুক্ত করা বা সিভিল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেমও (CRS) ভারতে জন্ম ও মৃত্যুর পরিসংখ্যান প্রকাশ করে। মহামারির আগের বছর, ২০১৯ সালে এই মৃত্যুহার ব্যাপক বেড়েছিল। তা-ও ভারতের রেজিস্ট্রার জেনারেল অফিসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সেটা ৯২% মৃত্যু নথিবদ্ধ হয়েছে। কিন্তু, ২০২০ সালে সরকার জানিয়েছে, এই মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে। মোট ৮১.১৫ লক্ষ লোক মারা গিয়েছেন। আর, কত শতাংশ মৃত্যু এক্ষেত্রে নথিবদ্ধ হয়েছে, সেই সংখ্যাটাও ২০২০ সালে সরকার জানায়নি। ফলে, সরকারের দাবি নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।