মার্চের অতিরিক্ত বৃষ্টি ভারতে গম উৎপাদনের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। ২০২১-২২ এবং ২০২২-২৩, দুই মরশুমেই অস্বাভাবিক রবি ফসলের ঋতু (শীত-বসন্ত) দেখেছে ভারত। বৃষ্টিপাত আর তাপমাত্রার তারতম্যের ফলে দুটি ঋতুতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে ২০২১-২২ মরশুমে খুব বেশি বৃষ্টি হয়েছে। সেপ্টেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতিমাসে বৃষ্টির যে স্বাভাবিক গড় থাকে, তার থেকে বৃষ্টি হয়েছে অনেক বেশি। পরিসংখ্যান বলছে, গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রার প্রেক্ষিতে মার্চ দেখেছে সবচেয়ে উষ্ণতম দিন।
আর, ২০২২ সালের মার্চে অস্বাভাবিক তাপ গমের উৎপাদনকে কমিয়ে দিয়েছে। কারণ শস্য গঠন এবং পূর্ণতা লাভের পর্যায়ে যখন গমগাছে খাদ্য এবং প্রোটিন জমা হচ্ছিল, তখনই তাপমাত্রার অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটেছে। ফসলের এই পর্যায়েই মোটামুটি ঠিক হয়ে যায়, শস্যের আকার কেমন হবে, ওজন কেমন হবে। সেই হিসেবে, মার্চের মাঝামাঝি সময়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যখন ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করে, তখন গমের দানা স্বভাবতই ছোট হয়ে গিয়েছে। যা থেকে বেশি গম মেলেনি।
কৃষি মন্ত্রক দাবি করেছে, গত বছর গম উৎপাদন হয়েছে ১০৭.৭৪ মিলিয়ন টন। ২০২০-২১ সালে এই উৎপাদন ছিল সর্বোচ্চ ১০৯.৫৯ মিলিয়ন টন। তার থেকে সামান্যই কম (১.৭%) উৎপাদন হয়েছে। কিন্তু বেসরকারি হিসেব বলছে, গত বছর ১০৭.৭৪ মিলিয়ন টন নয়। গম উৎপাদন হয়েছে সর্বোচ্চ ৯৮ মিলিয়ন টন। অর্থাৎ, ১০% থেকে ১৫% কম।
আরও পড়ুন- বারবার ভারতীয় ভূখণ্ডকে নিজেদের বলে দাবি করছে, এতে চিনের লাভটা কী হয়?
শুধু তাই নয়, বেসরকারি পরিসংখ্যান বলছে কৃষকদের থেকে সরকারের ফসল কেনার পরিমাণও গতবার কমে গিয়েছিল। নেমে এসেছিল ১৮.৭৯ মিলিয়ন টনে। যা তার আগের মরশুমে ছিল ৪৩.৩৪ মিলিয়ন টন। পরিস্থিতি সামাল দিয়ে গম রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল সরকার। তারপরও ডিসেম্বরের মধ্যে পাইকারি বাজারেই গমের দাম ব্যাপক বেড়ে গিয়েছিল। গমের বার্ষিক দাম ২০% বেড়ে গিয়েছিল। আবহাওয়া আবার প্রতিবছর একরকম থাকছে না। কোনওবছর বৃষ্টি বেশি হচ্ছে। কোনওবছর কম। উপরি হিসেবে জুটেছে অসময়ে বৃষ্টি। আর, এই অসময়ে বৃষ্টির ফলেও ব্যাপকহারে গমের উৎপাদনে ক্ষতি হচ্ছে।