আগামী বছরের শুরুর দিনটি থেকে দিল্লির জাতীয় রাজধানী অঞ্চলে জ্বালানি হিসেবে কয়লার ব্যবহার নিষিদ্ধ হচ্ছে। বুধবার এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট কমিশন জানিয়েছে এমনটা। এর ফলে কয়লা শিল্পক্ষেত্রে এবং বাড়িতে কোথাওই পুড়িয়ে কিছু করা যাবে না। যদিও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লা-দহনে ছাড় দেওয়া হয়েছে। যেখানে পিএনজি পরিষেবা পাওয়া যায়, সেই অঞ্চলে কয়লা ব্যবহার নিষিদ্ধ এবছরের পয়লা অক্টোবর থেকেই ।
কয়লার ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা কেন?
এয়ার কোয়ালিটি কমিশন জানিয়েছে, প্রতি বছর মোটামুটি ১.৭ মিলিয়ন টন কয়লা নানা শিল্পে কয়লা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয় রাজধানী অঞ্চলে। এনসিআর-এর ছ'টি প্রধান জেলা এর মধ্যে ১.৪ মিলিয়ন টন কয়লা ব্যবহার করে। এই নিষেধাজ্ঞার অর্থ হল, এনসিআর-এ কয়লার ব্যবহার থেকে সরে যাওয়া।
আরও পড়ুন Explained: ওষুধেই ভ্যানিশ ক্যানসার, নেপথ্যে জানুন আরও রহস্য!
এনসিআর-এর জ্বালানি নিয়ে ২০১৮ সালে একটি গবেষণা চালিয়েছিল এনার্জি অ্যান্ড রিসোর্সেস ইনস্টিটিউট। যা থেকে জানা যায়, দিল্লিতে পিএম ২.৫-এর (বায়ুতে মিশে থাকা সূক্ষ্ম কণা, যা শরীরে পৌঁছে যায়, তার পর রক্তে, তিলে তিলে শেষ করে দেয়) যে মাত্রা, শীতকালে যার মোটামুটি ৩০ শতাংশের জন্য দায়ী শিল্পক্ষেত্র। এই ৩০ শতাংশ দূষণের ১৪ শতাংশের কারণ হল কয়লা, বায়োমাস, পেট-কোক এবং ফার্নেস অয়েল। আট শতাংশের জন্য দায়ী ইটনির্মাণ। ৬ শতাংশের জন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ২ শতাংশের দূষণ দেখা গিয়েছে স্টোন ক্রাশার থেকে হচ্ছে। দিল্লি সরকার বলছে, ১, ৬০৭টি শিল্প ইউনিটকে পিএনজি-তে যেতে হবে এখন। অনেকের কাছেই যা চ্যালেঞ্জ।
দিল্লির বায়ু সূচকে এই নিষেধাজ্ঞার কি প্রভাব পড়বে?
এর ফলে দিল্লির হাওয়া-বাতাস একটু ভাল হতে পারে, অন্তত সেই আশাই করছেন অনেকে। 'আমারা স্থানীয় স্তরে এমন সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে আশা করছি। সমস্ত ধরনের ডার্টি জ্বালানি (তেল, কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাস ইত্যাদি) থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার একটা প্রচেষ্টা চলছে।' বলছিলেন সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর (রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি) অনুমিতা রায়চৌধুরী। ' কয়লা এখন প্রাথমিক জ্বালানি এনসিআর-এ। বায়ু দূষণ কমানোর লক্ষ্যে আমাদের কয়লা ব্যবহার অনেকটা কমাতে হবে। আমরা সেই পথেই এগিয়ে যেতে চাইছি।'
আমাদের দেশে অনেক সিদ্ধান্তই তো নেওয়া হয়। কিন্তু কার্যকর হতে দেখাটা তো ভাগ্যের ব্যাপার। আশা করি এবার ভাগ্য আমাদের সঙ্গে থাকবে।