ইজরায়েল-প্যালেস্তাইনের সংঘর্ষ ধীরে ধীরে পুরোদস্তুর যুদ্ধের দিকে এগোচ্ছে। দুই পক্ষই একে অপরের দিকে রকেট হামলা করছে। তবে উল্লেখযোগ্য বিষয়, গত মঙ্গলবার সন্ধেয় সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, গাজা থেকে ইজরায়েলের দিকে উড়ে আসা একের পর এক রকেট আকাশেই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
ইজরায়েলের মাটি ছোঁয়া তো দূর, আকাশে এক অদৃশ্য বলয়ে ধাক্কা খেয়ে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে রকেটগুলি। এর কারণ নিয়ে অনেকেই ধন্দে। এই অদৃশ্য বলয় হল একটি Iron Dome।
কী এই Iron Dome?
এটি একটি বিশেষ প্রযুক্তিতে তৈরি স্বল্প দূরত্বের পাল্লার, মাটি থেকে আকাশ পর্যন্ত এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। এতে একটি রাডারও রয়েছে। এর পাশাপাশি তামির ক্ষেপণাস্ত্র সিস্টেম যা যে কোনও রকেটকে ট্র্যাক করে সঙ্গে সঙ্গে ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে। ইজরায়েলের দিকে ধেয়ে আসা ক্ষেপণাস্ত্র, বোমা-মর্টার এমনকী বিমান-হেলিকপ্টার এবং যে কোনও ধরনের ড্রোন জাতীয় জিনিসকে প্রতিহত করতে পারে এই আযরন ডোম।
২০০৬ সালে ইজরায়েল-লেবানন যুদ্ধের সময় যখন লেবানিজ জঙ্গিগোষ্ঠী হিজবুল্লাহ হাজার হাজার রকেট ইজরায়েল লক্ষ্য করে চালায় তারপরই এই আয়রন ডোমের নির্মাণ হয়। পরের বছর ইজরায়েল ঘোষণা করে, সরকারি মদতপুষ্ট রাফায়েল অ্যাডভান্স সিস্টেম একটা নতুন এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম তৈরি করবে দেশবাসীকে রক্ষা করার জন্য। ইজরায়েলের এরোস্পেস ইন্ডাস্ট্রি এটি নির্মাণে সহযোগিতা করে। ২০১১ সালে আয়রন ডোমের পত্তন হয়। রাফায়েলের দাবি, এই ডোম ৯০ শতাংশ কার্যকরী। ২ হাজারেরও বেশি হামলা প্রতিহত করেছে।
কীভাবে এটি শত্রুর হামলা প্রতিহত করে?
এই আয়রন ডোমের তিনটি প্রধান সিস্টেম রয়েছে। একত্রিত হয়ে এটি একটি রক্ষাকবচে তৈরি করে গোটা এলাকায়। রাডারের মাধ্যমে ধেয়ে আসা যে কোনও হামলাকে চিহ্নিত করে। এরপর উইপন কন্ট্রোল সিস্টেম এবং মিসাইল ফায়ারিং ইউনিট হামলা প্রতিহত করে। যে কোনও আবহাওয়ায়, দিন হোক রাত, এই আয়রন ডোম সম্পূর্ণ কার্যকর।
এই Iron Dome-এর খরচ কত?
গোটা ইউনিটের খরচ পড়তে পারে ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৩৬৬ কোটি টাকা। একটি তামির ইন্টারসেপ্টর মিসাইলের খরচ অন্তত ৫৯ লক্ষ টাকা। যেখানে একটি সাধারণ রকেটের দাম মাত্র ১ হাজার মার্কিন ডলারের কাছাকাছি। এই সিস্টেমে দুটি তামির মিসাইল এক একটি রকেটকে প্রতিহত করে।