চরকের সঙ্গে হিপোক্রেটসের লড়াই চলছে। 'ভগবান'-রা শপথ হিসেবে কারটা পড়বেন, এটাই লড়াইয়ের কারণ। ভগবান বলছি ডাক্তারদের, নিশ্চয়ই বুঝেছেন! মাদুরাই মেডিকাল কলেজে চরক শপথ নয়া পড়ুয়াদের পড়ানোর জেরেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে সেই কলেজের ডিনকে।
গ্রিক চিকিৎসক হিপোক্রেটস, যাঁর জন্ম হয়েছিল ৪৬০ খ্রিস্টপূর্বে, মৃত্যু ৩৭০ খ্রিস্টপূর্বে। তাঁর নামে শপথকেই হিপোক্রেটিক ওথ বা হিপোক্রেট শপথ বলা হয়। যে শপথ বহু কাল ধরে চালু রয়েছে। এটা হল ওথ অফ এথিক্স বা নীতির শপথ। আর চরককে ভারতীয় চিকিৎসা শাস্ত্রের জনক হিসেবে মনে করা হয়। বলা হয়ে থেকে, চরকের জীবনকাল ১৫০ থেকে ২০০ খ্রিস্টাব্দের পরে নয় এবং ১০০ খ্রিস্টপূর্বের আগে নয়, মানে এর মধ্যবর্তী কোনও সময়ে। সেই হিসেবে চরক হিপোক্রেটসের থেকে বয়সে ছোট।
জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন চরকের নামে শপথ নিতে বলেছে। যদিও হিপোক্রেটিক শপথ বাদ দেওয়া হয়নি। মহর্ষি চরক শপথ, যা চরক সংহিতার একটি অংশ, সংস্কৃতে লেখা, পাঠ করার কথা বলা হয়েছে ডাক্তারিপাঠের শুরুতেই। যদিও হিপোক্রেটিক শপথ পাঠ করানো হয় ইন্টার্নশিপের শুরুতে, অর্থাৎ কিনা ডাক্তারিপড়ার শেষে।
আরও পড়ুন Explained: স্পাইসজেটের মুম্বই-দুর্গাপুর বিমান গোলযোগের মুখোমুখি: কী ঘটেছিল এবং কখন?
মাদুরাই বিতর্কের বিস্তারিত
মাদুরাই মেডিকাল কলেজে ডাক্তারির নতুন ছাত্রদের মহর্ষি চরক শপথ পড়ানোয় বিতর্ক দানা বেঁধেছে। তাতেই এই মেডিকাল কলেজের ডিনকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁর পদ থেকে। এই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন তামিলনাড়ুর অর্থমন্ত্রী পালানিভেল থিয়াগা রাজন এবং ব্যবসায়িক শুল্ক বিভাগের মন্ত্রী পি মূর্তি। ডিনের পদ থেকে সরানোর পর ডা. এ রথিনাভেলকে ওয়েটিংয়ে পাঠানো হয়েছে, তাঁর কোথায় পোস্টিং হবে, সে ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি।
৭ ফেব্রুয়ারি এনএমসি বা ন্যাশনাল মেডিকাল কমিশন হিপোক্রেটিক ওথের বদলে মহর্ষি চরক শপথ নেওয়ার কথা বলে। এটিকে বাধ্যতামূলক করা না হলেও বিতর্ক আটকায়নি। অনেকেই বলতে শুরু করেন এবার চিকিৎসায় গেরুয়াকরণের পর্ব শুরু হল। ইন্ডিয়ান মেডিকাল অ্যাসোসিয়েশনের আইএমএ নিউজ-এ ২১ ফেব্রুয়ারি সংগঠনের সভাপতি ডা. সহজানন্দ প্রসাদ সিং বলেন, কেন্দ্রীয় মনসুখ মাণ্ডব্য আশ্বস্ত করেছেন যে, চরক শপথ অপশানাল বা ঐচ্ছিক, হিপোক্রেটিক শপথে বদলে এটি পাঠে বাধ্য করা হবে না।