বর্ষার পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে এর মধ্যেই। কেরলে বর্ষা ঢুকছে এ মাসের ২৭ তারিখ। স্বাভাবিক নিয়মে বর্ষা আসার চার দিন আগে যে এন্ট্রি হতে চলেছে। ১৩ মে এমনই জানিয়েছে মৌসম ভবন । যদি পূর্বাভাস মিলে যায়, তা হলে ২০০৯-এর পর এত আগে এমনটা ঘটেনি বলা যায়।
জুন থেকে সেপ্টেম্বর, এই চার মাস বর্ষাকাল। কেরল দিয়ে যার প্রবেশ ঘটে। এবং তার পর সারা দেশে বছর জোড়া বৃষ্টিপাতের ৭০ শতাংশ বৃষ্টির কারণ হয়ে ওঠে। বর্ষা শুরুর দিনটা, এবার যা ২৭ মে, যদিও মৌসম ভবন বলছে ভুলও হতে পারে পূর্বাভাসে, তবে এই দিনটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভারতের অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে। অনেক সময় আমরা এর জন্য চাতকের মতো অপেক্ষা করি। এবার তাড়াতাড়ি সে আসায় এক দিক থেকে স্বস্তি। যদিও ঠিক সময় সব কিছু হলেই তো ভাল। আগুপিছু ভাল নয়।
বর্ষা শুরু বলতে কী বোঝায় ?
মৌসম ভবন বলছে, কেরল ও লক্ষদ্বীপের ১৪টি নির্দিষ্ট করে দেওয়া হাওয়া অফিসের ৬০ শতাংশ যদি পর পর দু'দিন অন্তত ২.৫ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করে তা হলেই বর্ষার শুরু বলা হয়। তবে এটা মে মাসের ১০ তারিখের পর যে কোনও সময় ঘটলে তবে। দ্বিতীয় দিনে ওই বৃষ্টির রেকর্ডের পর বর্ষার ঘোষণা করে মৌসম ভবন। বায়ু এবং তাপমাত্রা সংক্রান্ত মাপকাঠিও এ ক্ষেত্রে বিচার করা হয়।
সাধারণ ভাবে, আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে বৃষ্টি শুরু হয়ে যায় ১৫ থেকে ২০ মে-র মধ্যে। কেরলের উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে মে-র শেষ সপ্তাহ থেকেই শুরু হয় বৃষ্টিপাত। যদিও বর্ষা শুরু তাকে বলা হয় না, কারণ উপরে ব্যাখ্যা করা মাপকাঠি যতক্ষণ না মানছে প্রকৃতি, ততক্ষণ পর্যন্ত বর্ষার ঘোষণা করা যায় না।
আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশে নতুন করে মন্দির-মসজিদ বিতর্ক, কী সেই বিতর্ক, তার ইতিহাসই বা কী?
আগে বর্ষার কাটাছেঁড়া
২০১৮ এবং ২০১৭ সালে কেরলে বর্ষা ঢুকেছিল ২৯ এবং ৩০ মে। ২০২০ এবং ২০১৩ সালে বর্ষার পা দিয়েছিল এই দক্ষিণী রাজ্যে একেবারে ঠিক সময়ে। মানে ১ জুন।এ ছাড়া ২০১০ সালের পর থেকে অন্যান্য বছরগুলির বর্ষা ঢুকতে দেরি করেছিল। ২০১৯ সালে আইএমডি জানিয়ে দিয়েছিল যে, বর্ষা ঢুকতে দেরি করবে ছ'দিন। অর্থাৎ কিনা ঢুকবে সে জুনের ৬ তারিখ। যদিও সেই পূর্বাভাসও খেয়ালি বর্ষা মানেনি, কেরলে ঢুকেছিল সে বছর জুনের ৮ তারিখ।
আবহবিদরা বলছেন, বর্ষার আগে আসা যেমন ঠিক নয়, তেমনই দেরিটাও বেঠিক। তবে আগে আসুক আর দেরিতে, এর সঙ্গে চার মাস ধরে দেশের নানা এলাকায় বর্ষা-বণ্টনের কোনও সম্পর্ক নেই সে ভাবে। এমনও হয়েছে যে, নির্দিষ্ট সময়ের দু'দিন আগে বর্ষা এসেছে, এবং তারপর প্রবল বৃষ্টি হয়েছে ১০ দিন কিন্তু বর্ষা শেষ হয়েছে স্বাভাবিকের চেয়ে ১৪ শতাংশ কম বৃষ্টি বর্ষিয়ে। এখানে একটা কথা বলে নিতে হবে যে, কেরলে যদি বর্ষা আসতে দেরি করে, তার মানে এই নয় সারা দেশেই তার পদসঞ্চারে দেরি হবে। বা উল্টোটাও সত্যি। নানা অঞ্চলে বর্ষাপ্রবেশ নির্ভর করে সেখানকার কিছু প্রাকৃতিক পরিস্থিতির উপর। তবে কেরলে বর্ষা ঢোকার পর তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে জুলাই মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে।
Read story in English