ভার্চুয়াল ডিজিটাল অ্যাসেট। জানেন বিষয়টা কী? অনেকেই হয়তো হাঁ করে থাকবেন এই শুনে। সাধারণ লোকজনের কথা তো ছেড়েই দিলাম, সম্পত্তি-কাজে যাঁরা দড়, তাঁরাও খাবি খেতে পারেন। যে যাই খান না কেন, ডিজিটাল অ্যাসেটের কিন্তু বাড়বাড়ন্ত। সৌজন্যে ক্রিপ্টো কারেন্সি। যে কারেন্সি বা মুদ্রা রয়েছে ডিজিটাল ভার্সনে, মানে আপনি তাকে ছুঁয়ে দেখতে পারবেন না। টাকাপয়সার যে স্পর্শসুখ তা হবে না। তার বদলে অবশ্য চাহিদা মতো জিনিস পেতে পারেন। যার আবার কোনও সীমা নেই। মানে দেশের সীমা নেই। অবাধ গতিতে ক্রিপ্টো কারেন্সি এই লেনদেনের দুনিয়ায় দারুণ গতিতে বাড়ছে।
ফলে ভার্চুয়াল সম্পত্তি নিয়ে ইদানিং রীতিমতো আলোচনা হচ্ছে। কারও কারও এই সম্পত্তি গগনচুম্বীও হচ্ছে। এখন, সেই গগনে একটা বাঁধন দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেছে আমাদের কেন্দ্রীয় সরকার। বাজেটে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ ঘোষণা করেছেন-- এই ভার্চুয়াল সম্পত্তিতে কর দিতে হবে ৩০ শতাংশ।
পাশাপাশি, তিনি ভার্চুয়াল ডিজিটাল অ্যাসেট সম্পর্কিত লেনদেনে নির্দিষ্ট সীমার উপরে টিডিএসের কথা বলেছেন। সেই টিডিএস হবে এক শতাংশ। তবে, মূল কথাটা হল, যে সম্পত্তি আপনি ভার্চুয়ালে অর্জন করবেন, তার উপর আপনাকে ৩০ শতাংশ সরাসরি কর দিতে হবে। মানে বুলেট গতিতে আয়ের বাজারে আপনি বড় হতেই পারেন, এ স্বাদের ভাগ হবে না বললে চলবে না, সরকারকে তার ভাগ দিতে হবে গুনে গুনে। যদি ভার্চুয়াল বিনিয়োগ থেকে বিনিয়োগকারী ক্ষতির সম্মুখীন হন, তা হলে তা অন্য কোনও আয়ের থেকে বাদ দেওয়া যাবে না। এবং যদি উপহার হিসেবে দেওয়া হয় কোনও ভার্চুয়াল সম্পত্তি, তা হলেও তা করের আওতার বাইরে যাবে না।
ভার্চুয়াল অ্যাসেটের কী সংজ্ঞা স্থির করেছে সরকার?
অর্থ বিলেই ভার্চুয়াল অ্যাসেটের সংজ্ঞা স্থির করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই অ্যাসেটকে আয়কর আইনে ঢোকানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এর জন্য নতুন একটি ধারা যোগ করা হয়েছে (47A)। সেই ধারা অনুযায়ী, ভার্চুয়াল অ্যাসেট হচ্ছে, কোনও কোড বা নম্বর বা টোকেন (ভারতীয় মুদ্রা কিংবা কোনও বিদেশি মুদ্রা নয়), যা কোনও ক্রিপ্টোগ্রাফিক পদ্ধতির মাধ্যমে তৈরি অথবা অন্য কোনও ভাবে তৈরি। তার নাম যা-ই হোক না কেন, সেইটির অস্তিত্ব ডিজিটালে, যার মূল্য রয়েছে, স্বাভাবিক ভাবে বিনিময় মূল্যও রয়েছে। অর্থনৈতিক লেনদেন করা হয়ে থাকে। সঞ্চয় করে রাখা যায়। সবটাই হয়ে থাকে ইলেট্রিনিক ভাবে।…
ডিজিটাল কারেন্সির সঙ্গে এর ফারাক কী?
বাজেট পেশের পর অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথোপকথনে এই বিষয়ে আলো ফেলেছেন। তিনি বলেন, কারেন্সি হল যা কোনও দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক ইস্যু করে। মানে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের মাধ্য়মে বাজারে সেইটি পৌঁছয় লেনদেনের উদ্দেশ্যে। সে ডিজিটাল হতে পারে, আবার চালু মুদ্রা যেমন টাকা-পয়সা-ডলার-পাউন্ট ইত্যাদি তো রয়েইছে। কিন্তু এর বাইরে যে সব রয়েছে, চলতি কথায় ক্রিপ্টো কারেন্সি বলা হচ্ছে যেগুলিকে, মনে রাখতে হবে ক্রিপ্টো কারেন্সি কখনওই কিন্তু কারেন্সি নয়। তাতে সরকারি কোনও ছাপ নেই।
আরও পড়ুন Explained: কেন্দ্রীয় বাজেটে ডিজিটাল মুদ্রার ঘোষণা, CBDC আসলে কী?
আরবিআই আগামী অর্থবর্ষ থেকে ডিজিটাল কারেন্সি চালু করছে। সরকারি ছাড়া অন্য কোনও ডিজিটাল মুদ্রার মাধ্যমে যদি কোনও ব্যক্তি সম্পত্তি তৈরি করেন, সরকার তা থেকে করের সুবিধা নেবে। সেই করই হবে ৩০ শতাংশ। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ভার্চুয়াল অ্যাসেট সাম্প্রতিক কালে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এর উপর নির্ভর করে একটি বাজার তৈরি হচ্ছে। ডিজিটাল অ্যাসেটের লেনদেন হচ্ছে। ফলে নতুন এই করের কথা বলা হয়েছে বিলে।