কেন্দ্রীয় সরকার গ্রিন হাইড্রোজেন এবং গ্রিন অ্যামোনিয়া উৎপাদনে নয়া নীতি নিয়েছে। তাদের লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে ৫ মিলিয়ন টন গ্রিন হাইড্রোজেন উৎপাদন করা। কেন্দ্র চাইছে পরিশুদ্ধ জ্বালানি বা ক্লিন ফুয়েল রফতানিতে ভারত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠুক।
গ্রিন হাইড্রোজেন কী ?
জলের তড়িৎ বিশ্লেষণ করে যে হাইড্রোজেন গ্যাস তৈরি করা হয়, সেইটিই হল গ্রিন হাইড্রোজেন। তড়িৎ বিশ্লেষণ হল, জলকে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনে ভেঙে দেওয়া।
নয়া নীতি এ দেশে গ্রিন হাইড্রোজেন উৎপাদনকে কতটা অক্সিজেন দেবে?
এই নীতির মাধ্যমে যে সব গ্রিন হাইড্রোজেন ও অ্যামোনিয়া প্রকল্প ২০২৫ সালের ৩০ জুনের আগে গড়ে উঠবে, তাদের আন্তঃরাজ্য ট্রান্সমিশন বাবদ কোনও খরচা দিতে হবে না। এবং নিখরচায় এই কাজটি তারা করতে পারবে ২৫ বছর। এর ফলে যারা এই শক্তি ব্যবহার করবে, তাদের এর জন্য কম ব্যয় করতে হবে, কারণ উৎপাদন খরচ কমে যাচ্ছে। শুধু এই ক্ষেত্রটিই নয়, অন্য নানা ক্ষেত্রই এই ছাড়ে উপকৃত হবে। খনিজ তেল শোধনাগার, সার, ইস্পাত উৎপাদন সংস্থাগুলি নিজেদের জন্য প্রয়োজনীয় গ্রিন হাইড্রোজেন ও অ্যামোনিয়া নিজেরাই তৈরি করে নিতে পারবে। মানে, এক রাজ্যে তারা এইটি তৈরি করে অন্য রাজ্যে তাদের মূল প্রকল্পে (তেল, সার যা-ই হোক) ট্রান্সমিশনে বাড়তি খরচ না করে ব্যবহার করতে পারবে। এখনও পর্যন্ত মূলত গ্রে হাইড্রোজেন ও অ্যামোনিয়া ব্যবহার করা হয় এ সব ক্ষেত্রে। যা তৈরি হয় প্রাকৃতিক গ্যাস অথবা ন্যাপথা থেকে।
আরও পড়ুন Explained: দেশের বৃহত্তম আর্থিক প্রতারণায় অভিযুক্ত, গুজরাটের জাহাজ কোম্পানির উত্থান ও পতন
বিনিয়োগের পথটা কেমন?
সরকার একটি পোর্টালের মাধ্যমে গোটা কাজটা করতে চাইছে। যে সব ছাড়পত্র দরকার হবে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির, সবই ওই পোর্টাল থেকে হবে। এ ক্ষেত্রে উৎপাদক সংস্থাকে অবশ্যই ৩০ দিনের মতো বাড়তি পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তি মজুত করার জন্য ব্যবস্থা রাখতে হবে। গ্রিন হাইড্রোজেন নিয়ে গঠিত সিআইআই-এর টাস্কফোর্সের সদস্য এবং টয়োটা কির্লোসারের ভাইস চেয়ারম্যান বিক্রম কির্লোসার বলেছেন, 'নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ছাড়পত্র পাওয়া এবং গ্রিডসংযোগের সুবিধা এই ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বাড়াবে।' এ ছাড়া বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থাগুলি যাতে পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তি গ্রিন হাইড্রোজেন নির্মাণকারীদের সরবরাহ করতে পারে, সেই জন্য কিছু সুবিধা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে নীতিতে। পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তি কেনার জন্য ওই সব বন্টন সংস্থাগুলিকে যে খরচ করতে হবে, তাতে থাকছে বড় অঙ্কের ছাড়।
আরও পড়ুন সবুজের হিসেবে কেন্দ্রীয় সরকার কোথায় দাঁড়িয়ে, কথার সঙ্গে কাজ মিলছে কি?
আরও কী সুযোগ-সুবিধা গ্রিন হাইড্রোজেন ও অ্যামোনিয়া উৎপাদনে?
নীতি অনুযায়ী, বন্দর কর্তৃপক্ষ কম দামে জমি দেবে উৎপাদক সংস্থাগুলিকে, যাতে বন্দর সংলগ্ন এলাকায় গ্রিন হাইড্রোজেন ও অ্যামোনিয়ার জন্য বাঙ্কার রাখা যায়। রফতানির আগে সেইখানেই এই শক্তির সাময়িক সঞ্চয় করা সম্ভব হবে। বিদ্যুৎমন্ত্রী আর কে সিং আগেই বলেছেন, জার্মানি এবং জাপান এই শক্তির বড় বাজার হয়ে উঠতে পারে।
ফলে, ঢাকে কাঠি পড়ে গিয়েছে সবুজ হাইড্রোজেনের। মাভৈ বলে শুরু করে দিলেই হল।